ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষা সফরে শেকৃবির শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

শিক্ষা সফরে শেকৃবির শিক্ষার্থীরা

পাহাড় আর নীল আকাশের বন্ধুত্বের গল্প কতই না শুনেছি। কিন্তু নিজে যখন গল্পকার হিসেবে হাজির, তখন সেটা যে কতটা বর্ণময় ওঠে, তা কি বান্দরবান পৌঁছার আগে জানতাম! তবে সে বর্ণিল গল্পের শুরু আরও আগে। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ ব্যাচের ১৪০ বন্ধুর দলটি ঢাকা থেকে বান্দরবানের বাসে চেপে বসেছিলাম ৬ এপ্রিল রাতে। আমাদের সঙ্গে ছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আরিফ হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ ও ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিমুল চন্দ্র সরকার, ও সহকারী অধ্যাপক মহব্বত আলী। সকালে দু’চোখ মেলে দেখি দুই পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে চলছে বাস। পাহাড়ের মাথায় উঁকি দিচ্ছে সকালের সূর্য। বান্দরবান পৌঁছে হোটেলে ফ্রেশ হতে হতে বাজল বেলা ১টা। খাওয়া দাওয়া শেষ করে স্বর্ণমন্দিরের উদ্দেশে ভাড়া করলাম চাঁদের গাড়ি। আঁকাবাঁকা রাস্তা। ছুটে চলছে গাড়ি। সঙ্গে উচ্ছ্বাসিত তরুণ-তরুণী। না জানি কখন গাড়ি তার গন্তব্য থেকে খাদে পড়ে জায়। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে রাস্তাগুলো বিপদসঙ্কুল মনে হলেও চালক অভয় দিয়েই বলেন প্রথমে একটু ভয় লাগে একটু পর ঠিক হয়ে যাবে। পাহাড়ী রাস্তায় চান্দের গাড়িতে আসল মজা। স্বর্ণমন্দির দেখে সেই মুগ্ধতা নিয়ে বিকেলে চলে আসি মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সে। চোখ জুড়িয়ে যায় প্রকৃতির অপরূপ নিসর্গে। ঘুরতে ঘুরতে পহাড়ের চূড়ায় উঠে দেখা মিলল রকমারি রসাল ফল আর খাবারের দোকান। পাহাড়ী কলা খেতেও দারুণ মজা। একটু পরই সূর্যীমামা পাহাড়ে লুকাবে। পাহাড়ের বুকে সূর্যাস্ত দেখতে আমরাও পথ ধরি নীলাচলের দিকে। চান্দের গাড়ি উঠতে শুরু করে নীলাচলে। উঠতে উঠতে আমরা উঠে যাই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দুই হাজার ফুট উঁচুতে। সেখানে পাহাড় মিশে গেছে নীল আকাশের সঙ্গে। আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে মনে হচ্ছে অন্য রকম অনুভূতি। আর সে সবুজ আর নীলের অনন্য এই অনুভূতিকে মনের মধ্যে নিতেই হাজির হয় শত শত প্রকৃতিপ্রেমী। পরের দিন সাতসকালেই নাশতা করে চাঁদের গাড়িতে চেপে বসলাম সবাই। ১৪০ জনের দল। মনে হচ্ছিল কোন মিশনে আছি আমরা সবাই। এবার গন্তব্য নীলগিরি, চিম্বুক পাহাড় আর শৈল প্রপাত। গতদিন চঁঁদের গাড়ির পাহাড়ী এ রকম রাস্তায় চলাচলে কয়েকজন আজ অনেক সাহসী। মনে হয় হেঁটেই যেতে পারবে পাহাড়ের কোলঘেঁষে। কেউ আর গাড়ির সিটে বসল না দাঁড়িয়ে থাকবে সবাই। শুভ্র মেঘের চাঁদর ভেদ করে আঁকাবাঁকা রাস্তায় চলছে গাড়ি। এই শুভ্রতার মাঝে গান না ধরলে কেমন হয় বলে উঠল সবাই। এই কথা শেষ না হতেই ভাঙ্গা গলায় শুরু হলো গান। গান চলতে চলতে পৌঁছলাম নীলগিরিতে। পৌঁছা মাত্রই কে শোনে কার কথা। সবাই আকাশ পানে লাফিয়ে লাফিয়ে ছবি তোলা শুরু করল। কিছুক্ষণ সেখানে থেকে আসলাম শৈলপ্রপাতে। যদিও শৈলপ্রপাতে পর্যাপ্ত পানি ছিল না। এবার সবাইকে ফিরতে হবে। হোটেলে ফিরে দুপুরে খাওয়া শেষে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে কেনাকাটায় বের হলো সবাই। কেনাকাটা শেষ হলো। এবার সবাইকে ফিরতে হবে ঢাকায়। আমাদের বাস যখন ঢাকার দিকে ছুটছে কিন্তু মন পড়ে আছে সবার বিশাল পাহাড়ের মাঝে। মন চ্্্্্্্্্্্্্্্ইাছে বার বার ফিরে আসি এই পাহাড়ের দেশে। দানিস মাহমুদ
×