ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁও গণহত্যা দিবস আজ

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

ঠাকুরগাঁও গণহত্যা দিবস আজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২২ এপ্রিল ॥ রবিবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জাঠিভাঙ্গা গণহত্যা দিবস। এদিনে আশপাশের ৫০০ স্বাধীনতাকামী মানুষকে ধরে লাইনে দাঁড় করিয়ে পাথরাজ নদীর পাড়ে রাজাকারদের সহায়তায় হত্যা করা হয়। সেই গণহত্যায় আত্মদানকারীদের স্ত্রীরা আজও বেঁচে আছেন অর্ধাহারে-অনাহারে। তাদের খোঁজ নেয়নি কেউ। ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল। এদিনে জাঠিভাঙ্গায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তার এদেশীয় দোসররা এখানে একই সঙ্গে তিন হাজারেরও বেশি নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। চকহলদি, জগন্নাথপুর, সিঙ্গিয়া ও বাসুদেবপুরসহ ১২ গ্রামের শত শত মানুষকে পাকিস্তানীরা লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে মেশিনগানের গুলিতে হত্যা করে। পাকিস্তানী বাহিনী চারদিকে মানুষ হত্যা করেছে শুনতে পেয়ে জগন্নাথপুর, চকহলদি, সিঙ্গিয়া, চ-ীপুর, আলমপুর, বাসুদেবপুর, গৌরিপুর, মিলনপুর, খামারভোপলা, শুকানপুকুরীসহ বহু গ্রামের কয়েক হাজার বাঙালী নর-নারী ও শিশু ২৩ এপ্রিল ভোরে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে তারা ওঠেন জাঠিভাঙ্গা এলাকায়। পাকিস্তানীরা সেই দলের সব পুরুষকে মিছিল করার কথা বলে নিয়ে যায় জাঠিভাঙ্গা মাঠে। পাকবাহিনী সেখানে মেশিনগানের গুলিতে হত্যা করে সব পুরুষকে। হত্যাযজ্ঞ চলে বিকেল পর্যন্ত। বিকেলে তারা চলে গেলে এদেশীয় দোসররা পাশের নদীর পাড়ে লাশ ফেলে সামান্য মাটি চাপা দেয়। গণহত্যায় আত্মদানকারীদের ৩ শতাধিক বিধবা আজও বেঁচে আছে খেয়ে না খেয়ে। বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়লেও আজও অনেকেই বয়স্ক বা বিধবা ভাতার বাইরেই রয়ে গেছেন। তারা আজও ভোলেননি সেই নারকীয় গণহত্যার কথা। জীবনের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে আজও তারা বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। খোঁজখবর নেয়নি তাদের কেউ। আর আজও পাননি স্বজন হারানোর বিচার। দীর্ঘদিনের জমানো কষ্টের কথা তারা জানালেন এভাবেই।
×