ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বেড়ায় কর্মসৃজন প্রকল্পের সিংহভাগ টাকা পকেটে

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

বেড়ায় কর্মসৃজন প্রকল্পের সিংহভাগ টাকা পকেটে

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ২২ এপ্রিল ॥ বেড়া উপজেলার ঢালারচর ইউনিয়নের পাঁচটি কর্মসৃজন প্রকল্পে বরাদ্দ ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকার বেশিরভাগই আত্মসাত হয়েছে। স্বল্পসংখ্যক শ্রমিক দিয়ে প্রকল্পগুলোতে নামমাত্র কাজ করানো হয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা শ্রমিক তালিকায় ভুয়া নাম অন্তর্ভুক্তসহ কাজে ফাঁকি দিয়ে এ টাকা আত্মসাত করে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ট্যাগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চরঢালা গ্রামের আফাজ উদ্দিন দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে জানা যায়, অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচীর আওতায় বেড়া উপজেলার ঢালারচর ইউনিয়নে পাঁচটি প্রকল্পে ২১৯ শ্রমিকের বিপরীতে ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দের টাকা রামনারায়ণপুর বালাজ মেম্বারের বাড়ির সামনের রাস্তা, মীরপুর জামালের বাড়ি হতে রামকেষ্টপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় রাস্তা, মালদা দিদারের বাড়ি হতে দুর্গাপুর নিলু সরদারের বাড়ি পর্যন্ত, গোয়ালনগর রওশন মোল্লার বাড়ি হতে সিএ্যান্ডবি পাকা রাস্তা পর্যন্ত এবং সিএ্যান্ডবি রাস্তা হতে ককিলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের কাজ হাতে নেয়া হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিলেনÑ ঢালারচর ইউপির বালাজ, রফিক, লুৎফর, রাজ্জাক ও আজিজ মেম্বার। তারা প্রকল্পগুলোতে স্বল্পসংখ্যক শ্রমিক দিয়ে লোক দেখানো কাজ করিয়েছেন। রাস্তার পাশে গর্ত সৃষ্টি করে মাটি কাটা হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি ধুয়ে আবার গর্তে চলে যাচ্ছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়ম মেনে প্রত্যেক শ্রমিকের ব্যাংক হিসাবে টাকা পোস্টিং করে দিয়েছিলেন। শ্রমিকরা চেকের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করবেন এটাই নিয়ম। এক্ষেত্রে সে নিয়মের ব্যতিক্রম হয়েছে, মেম্বাররা নিজেরাই শ্রমিকদের চেকে ডান-বাম হাতের টিপস্বাক্ষর দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বেশিরভাগই আত্মসাত করেছেন। প্রতিটি প্রকল্প তদারকির জন্য একজন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছিল। ট্যাগ অফিসার প্রকল্পের কাজ তদারকি না করেই উৎকোচের বিনিময়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের তৈরি ভুয়া মাস্টার রোলে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক শ্রমিক জানান, কর্মসৃজন প্রকল্প তালিকায় তাদের নাম আছে কিন্তু ব্যাংকের পাসবই তাদের কাছে ছিল না, মেম্বাররা রেখে দিয়েছিল। সেজন্য তারা নিজেরা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। মেম্বাররা ব্যাংক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ডান-বাম হতের টিপস্বাক্ষর দিয়ে তাদের বিলের টাকা উত্তোলন করেছে। তাদের মাত্র ৩৫ দিনের কাজের টাকা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ঢালারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কোরবান আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা প্রকল্পগুলো সরেজমিন তদন্ত এবং ব্যাংক চেকের টিপস্বাক্ষর পরীক্ষা করলেই দুর্নীতির চিত্র বেরিয়ে আসবে বলে তারা জানিয়েছেন।
×