ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হালদায় ডিম ছাড়তে শুরু করেছে মা মাছ ॥ সংগ্রহে ব্যস্ত জেলেরা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

হালদায় ডিম ছাড়তে শুরু করেছে মা মাছ ॥ সংগ্রহে ব্যস্ত জেলেরা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস/নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি ॥ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে শুক্রবার রাত ১২টার পর ‘মা মাছ’ ডিম ছাড়তে শুরু করেছে। হালদা নদী বিশেষজ্ঞ ও চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, গেল বছরের মোট পরিমাণের চেয়ে চলতি মৌসুমের প্রথম পর্যায়ে ডিম ছাড়ার পরিমাণ আশাব্যঞ্জক। মৎস্য অধিদফতরও মা মাছের ডিম ছাড়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক বলে মনে করছে। মধ্য রাতের পর থেকে শত শত জেলে মিহি সূতার জাল নিয়ে নৌকা ও সাম্পানযোগে ডিম সংগ্রহ করছে। এ সময় রুই, কাতল, মৃগেল, কালবাউশ মাছের ডিম সংগ্রহের উৎসবে মেতে ওঠে তারা। হাটহাজারীর মদুনা ঘাটের উত্তর দিকে আজিমের ঘাট ও নয়াহাটসহ কয়েকটি স্পটে প্রথম পর্যায়ে মা মাছ ডিম ছাড়ে। জেলা মৎস্য দফতরের এক কর্মকর্তা জানান, গেল কয়েক দিন প্রচুর বৃষ্টিপাতে পাহাড়ী ঢল নেমে আসায় মা মাছ উপযুক্ত পরিবেশ পেয়েছে। তিনি আরও জানান সাধারণত চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসে অমাবস্যা, পূর্ণিমা ও অষ্টমী তিথিতে পাহাড়ী ঢল ও শীতল আবহাওয়ায় কার্প জাতীয় মা মাছ হালদায় ডিম ছাড়ে। জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, সংগৃহীত ডিম প্রক্রিয়াজাতকরণে হাটহাজারী এবং রাউজানে অনেক হ্যাচারি আছে। ডিম সংগ্রহকারীরা শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সংগৃহীত ডিম প্রক্রিয়াজাতকরণে উল্লিখিত হ্যাচারিগুলোতে আনেন। এদিকে দুর্বল হয়ে পড়া মা মাছগুলো যাতে কেউ শিকার করতে না পারে সে জন্য জেলা মৎস্য বিভাগ, হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা প্রশাসন থেকে হালদার ২০ কি.মি. এলাকায় নিরাপত্তামূলক সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, এশিয়ার একটি মাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে দীর্ঘ সময় ধরে পানি দূষণ ও নদীর বাঁক পরিবর্তন হওয়ায় ২০১৬ সালে মা মাছ পর্যাপ্ত ডিম ছাড়েনি। ফলে, সরকারী বিভিন্ন দফতর ও মৎস্য অধিদফতরে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এনিয়ে গেল এক বছর ধরে পরিবেশ দূষণরোধে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। চলতি মৌসুমের শুরুতেই জাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়ায় শঙ্কা অনেকটা কেটে গেছে।
×