ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সাংবাদিকদের সঙ্গে ফখরুল

বিএনপিকে বাদ দিয়ে এবার নির্বাচন করা সহজ হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

বিএনপিকে বাদ দিয়ে এবার নির্বাচন করা সহজ হবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি তার পুরানো ঐতিহ্য ফেরাতে কাজ করছে বলে জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি তখনই নির্বাচনে যাবে যখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হবে। গতবার একতরফা নির্বাচন করতে পারলেও এবার বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা এত সহজ হবে না। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে দলে নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পারবে। তিনি বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আর গ্রেফতারকৃত সব নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার প্রয়োজন হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শীঘ্রই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে। সংবিধানে মোতাবেক বিএনপিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে যেতে হবে বলে সরকারী দলের পক্ষ থেকে যে কথা বলা হচ্ছে তার প্রতিবাদ করে কিভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে এ দায়িত্বটা বর্তমান সরকারের। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে সেই সুযোগ তারা নষ্ট করে দিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বদলে দলীয় সরকার নিয়ে এসে সরকার আমাদের নির্বাচনে যাওয়ার জন্য বাধা সৃষ্টি করেছে। তাই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা থেকে সরে আসতে হবে। আগামী নির্বাচনে না গেলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা যে বক্তব্য দিচ্ছেন সে প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি নিবন্ধন রক্ষার জন্য নির্বাচনে যাবে না। বিএনপি দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এর আগে একটা নির্বাচন করে দেশের জনগণ থেকে দূরে সরে গেছেন। বিএনপিকে বাদ দিয়ে আরেকটা নির্বাচন করুন না দেখি। ৫ ফেব্রুয়ারির মতো আবার একটি নির্বাচন হলে কেবল দেশের মানুষই নয়, বিশ্বের কেউ মেনে নেবে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের জন্য আমরা ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি। এবার আমরা নির্বাচকালীন সরকারের রূপরেখা দেব। এ বিষয়ে আমরা জনগণের মতামত নিচ্ছি। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তা জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। নির্বাচন যেন দল নিরপেক্ষ হয়, জনগণ যাতে অধিকার রক্ষায় ভোট দিতে পারে এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই সময় মতো আমরা নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা দেব। ঢাকা মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি প্রসঙ্গে তিনি মির্জা ফখরুল বলেন, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আংশিক কমিটি দিয়েছেন। এই প্রথম ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী তরুণ ও প্রবীণের সমন্বয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে এ কমিটির নেতারা জনগণের মাঝে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পারবে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করতে পারবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্নীতিকে এখন জাতীয়করণ করা হয়েছে। সরকার শুধু উন্নয়নের মডেল করছে কিন্তু কোন মাস্টার প্ল্যান করে কাজ করছে না। ফলে জনদুর্ভোগ দেখা দিচ্ছে। হাওড় অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমান শাসক দল জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না তাই তারা হাওড় অঞ্চলের জনগণের কথা চিন্তা করছে না। কিন্তু সরকারের উচিত হবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এ হাওড় অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে অতিদ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। তিনি বলেন, বিএনপি রামপালে কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র না হওয়ার পক্ষে। কিন্তু সরকার রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র করবে কারণ, যে কোম্পানি এ কাজ করবে সেটি এবং ভারতের কাছে তারা এ ব্যাপারে দায়বদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ভারতে গিয়ে এ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শুধু দিয়ে এসেছে, কিছু আনতে পারেনি। আমাদের ন্যায্য অধিকার তিস্তার পানিসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির চুক্তি ভারতের সঙ্গে করতে পারেননি। কারণ, এ সরকারের জন ভিত্তি নেই।
×