ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোঃ মনোয়ারুল হক

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ॥ জেএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় ॥ জেএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি

বি.এস.এস,বি-এড সিনিয়র শিক্ষক কানকিরহাট বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়, সেনবাগ, নোয়াখালী। পরীক্ষকঃ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লা। মোবাইলঃ ০১৭১৮৮৬৩০৪৫ সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। ষষ্ঠ অধ্যায়- বাংলাদেশের অর্থনীতি সৃজনশীল প্রশ্ন উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। প্রবাসী করিমের বিদেশ থেকে পাঠানো টাকায় তার পরিবার বেশ স্বচ্ছলভাবে জীবনযাপন করত। হঠাৎঅর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়ে তার চাকরি চলে যায়। তাই সে দেশে চলে আসতে বাধ্য হয়। দেশে এসে সে বসে থাকেনি। গ্রামের কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে সে একটি মৎস্য খামার গড়ে তুলেছে। পাশাপাশি পতিত জমিতে নানা রকম বনজ ও ফলজ গাছও লাগাচ্ছে। ক. এঘচ- এর পূর্ণরুপ লিখ। খ. মানব সম্পদ উন্নয়ন বলতে কী বোঝায়? গ. করিম ও তার বন্ধুদের কাজ আমাদের জাতীয় অর্থনীতির কোন খাতকে ইঙ্গিত করেছে? তার অবদান ব্যাখ্যা কর। ঘ. ‘ প্রবাসী করিমের মতো অন্যান্যদের পাঠানো অর্থের কারণেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়েনি’- উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ক. এঘচ-এর পূর্ণরুপ হলো এৎড়ংং ঘধঃরড়হধষ চৎড়ফঁপঃ. খ.যে সকল মানুষ তাদের মেধা বা শ্রম দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম, তাদেরকে মানব সম্পদ বলা হয়। মানুষ তখনি সম্পদে পরিণত হয় যখন সে সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য কোন কিছু করতে পারে। যেমন- কেউ শারিরীক শ্রম দিয়ে রাষ্ট্রের জন্য সম্পদ তৈরিতে সহায়তা করে, আবার কেউ মেধা দিয়ে নতুন কোন সম্পদ উদ্ভাবনে কাজ করে। এভাবে যারা শ্রম বা মেধা দিয়ে দেশের কৃষি, শিল্প, সেবাসহ যে কোন খাতে অবদান রাখে, তাদেরকে দেশের মানব সম্পদ বলা হয়। গ. করিম ও তার বন্ধুদের কাজ আমাদের জাতীয় অর্থনীতির মৎস্য এবং কৃষি ও বনজ খাতকে ইঙ্গিত করেছে। করিম তার গ্রামের কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে যে মৎস্য খামার গড়ে তুলেছে তা মৎস্য খাতের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া পতিত জমিতে নানা রকম বনজ ও ফলজ গাছও লাগাচ্ছে যা কৃষি ও বনজ খাতের অন্তর্ভুক্ত। আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে মৎস্য এবং কৃষি ও বনজ সম্পদ খাতের অবদান অপরিসীম। দেখা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জাতীয় আয়ে মৎস্য খাতের অবদান ৩.৬৯%। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এপ্রিল পর্যন্ত এই খাতের অবদান ছিলো ৫৩,১৪৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট জাতীয় উৎপাদনে কৃষি ও বনজ খাতের অবদান ১৪.৩০%। তবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় উৎপাদনে এই খাতের অবদান ১,৮৯,২৭২ কোটি টাকা। ঘ. প্রবাসী করিমের মতো অন্যান্যদের পাঠানো অর্থের কারণেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পরেনি। প্রবাসে কর্মরত নাগরিকদের স্বদেশে প্রেরিত অর্থকে রেমিটেন্স বলে। বিদেশে কর্মরত শ্রমিক , কর্মচারী ও পেশাজীবিরা তাদের অর্জিত অর্থের একটা বড় অংশ ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে পরিবারের কাছে পাঠায়। এই অর্থ কেবল তাদের পরিবারের প্রয়োজনেই মেটায় না, নানা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে প্রবাসে কর্মরত প্রবাসিদের কাছ থেকে আমাদের প্রাপ্ত রেমিটেন্সের পরিমান ছিল ৯৬৮৯ মিলিয়ণ মার্কিন ডলার। বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, ২০০৮ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রাপ্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২ তম। ২০০৯ সালে তা ৮ম স্থানে উন্নীত হয়। বিশ্বমন্দা পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি যে বড় ধরনের কোনো সংকটের মধ্যে পড়েনি তার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রবাসীদের পাঠানো বিপুল অংকের রেমিটেন্স।
×