ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে জাতীয় কমিটির ২৫ দফা সুপারিশ

প্রকাশিত: ২২:০২, ২২ এপ্রিল ২০১৭

সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে  জাতীয় কমিটির ২৫ দফা সুপারিশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকাসহ সারা দেশে সড়ক পরিবহন খাতে বিরাজমান বিশৃঙ্খলা বন্ধে রাজধানীতে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বেসরকারি সংগঠনের নেতৃত্বে না থাকার পক্ষে মতামত তুলে ধরেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে আয়োজিত এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে এই মতামতসহ ২৫টি সুপারিশ উত্থাপন করে সংগঠনটি। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও নাগরিক সংগঠনের নেতারা জাতীয় কমিটির সুপারিশমালার সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। ২৫ দফা সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- রাজধানীর যানজট হ্রাস ও ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধে সেনবাহিনীকে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রদান, চাঁদাবাজির হাত থেকে পরিবহন মালিকদের রক্ষায় রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে সেনাসদস্য মোতায়েন, সাংবিধানিক অথবা রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অধিষ্ঠিতদের মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে না থাকার আইন প্রণয়ন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের বাস বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা প্রদানের প্রথা বাতিল, বিআরটিসির বহরে পর্যাপ্তসংখ্যক বাস যুক্ত করে সংস্থাকে শক্তিশালী ও গতিশীলকরণ এবং রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ রুটসহ দেশের সকল আন্ত:জেলা রুটে বিআরটিসির বাস চালু, বিআরটিসির বাস চলাচলে বাধা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হস্তে দমন এবং বেসরকারি উদ্যোগে গণপরিবহন আমদানি উৎসাহীত করতে রুট পারমিট প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধ। সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুর রহমান সেলিম, নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির উপদেষ্টাম-লীর সদস্য হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও বাংলাদেশ যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি তুসার রেহমান বক্তব্য রাখেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নিখিল ভদ্র, জাতীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জিব বিশ্বাস, সেকেন্দার হায়াৎ, পুষ্পেন রায়, জসি সিকদার প্রমুখ। সুপারিশমালার মধ্যে আরো রয়েছে- সড়কের ওপর চাপ কমাতে ঢাকার চারদিকের নদীগুলোকে দূষণ ও দখলমুক্ত ও বৃত্তাকার নৌপথ সচল করা, যানবাহনের চালক, কন্ডাক্টর ও হেলপারসহ সকল পর্যায়ের পরিবহনকর্মীদের লাইসেন্স, নিয়োগপত্র, কর্মঘন্টা নির্ধারণ, উৎসব বোনাস ও ওভারটাইম ভাতা বাধ্যতামূলক করা, বেসরকারি উদ্যোগে গণপরিবহন আমদানি উৎসাহীত করতে রুট পারমিট প্রাপ্তিসহ বিভিন্ন পর্যায়ে হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধ, রাজধানীতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক নতুন ট্যাক্সিক্যাব আমদানি, ঢাকাসহ সকল মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অভিভাবকসহ স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য বিআরটিসির বাসের ‘শিক্ষাসার্ভিস’ চালু, সারা বছর দেশজুড়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) অভিযান ও ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে চালকসহ পরিবহন শ্রমিকদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চালানোর দায়ে চালকের সঙ্গে মালিককেও আইনের আওতায় আনা, ট্রাফিক আইন অমান্যকারী গাড়িচালক ও হেল্পারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য দায়ীদের মৃত্যুদ- ও আহতের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও মালিকপক্ষের কাছ থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়ের আইন প্রণয়ন, দুর্ঘটনা রোধে সড়ক-মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলো নিয়মিত সংস্কার, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো চিহ্নিতকরণ ও সতর্কীকরণ নোটিশ জারি এবং সব ধরনের যাত্রীবাহী গাড়িতে ‘যাত্রীবিমা’ এবং যাত্রী ও পণ্যবাহী সব গাড়ির চালক, কন্ডাক্টর ও হেল্পারের বাধ্যতামূলকক জীবনবিমা চালু।
×