ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইস্টার সানডে ॥ আশ্চর্য সত্য ঘটনা

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ২২ এপ্রিল ২০১৭

ইস্টার সানডে ॥ আশ্চর্য সত্য ঘটনা

ইস্টার সানডের অর্থ হলো পাস্কা রবিবার বা পুনরুত্থান রবিবার। আর গোটা খ্রিস্টম-লীতে দিনটি যিশুর পুনরুত্থান দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। এ পুনরুত্থান বা ইস্টার সানডে একেক বছর একেক সময়ে উদযাপিত হয়ে থাকে। ইস্টার সানডে উদযাপন করা হয় বসন্তকালের যে সময়ে দিন ও রাত সমান (২০ মার্চ বা তার কাছাকাছি) হয় তার পরের ১ম পূর্ণ চাঁদের পরের রবিবার। ৩২৫ খ্রিস্টাব্দে নিসিয়া মহাসভায় ইস্টার সানডে উদযাপনের দিন ঠিক করা হয়। আর এ কারণেই চাঁদের নিয়মের হিসেবে ইস্টার সানডের তারিখ ভিন্ন ভিন্ন হয়। এদিনের মূল তাৎপর্য হলো প্রভু যিশুখ্রিস্ট তার মৃত্যুর তৃতীয় দিনে জেগে উঠেছেন। আর যিশুর এ মৃত্যু থেকে জেগে ওঠাকে বলা হয় যিশুর পুনরুত্থান। দিনটি ছিল রবিবার। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় আশ্চর্য ও নিগূঢ় সত্য ঘটনা হলো যিশুখ্রিস্টের পুনরুত্থান। আর যিশুখ্রিস্টের পুনরুত্থান হলো একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। যিশুখ্রিস্টের পুনরুত্থান গোটা খ্রিস্টম-লীর বিশ্বাসের প্রাণকেন্দ্র। যিশু যদি পুনরুত্থান না করতেন, তাহলে বৃথাই আমাদের বিশ্বাস ও ধর্মক্রিয়া। কেননা তার পুনরুত্থানের শক্তি ও গৌরবের ফলে ম-লী পেয়েছে নতুন জীবন, স্থিতি এবং বিস্তৃতি। যিশুখ্রিস্ট তার পুনরুত্থান দ্বারা আমাদের পিতা ঈশ্বরের নিকট যাওয়ার পথ খুলে দিয়েছেন। যিশুর পুনরুত্থান কেবলমাত্র আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তিই নয়, বরং তা হলো পরজীবনে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে চিরসুখী হওয়ার দৃঢ় ভিত্তিস্বরূপ। যিশুর পুনরুত্থানের আহ্বান হলো আধ্যাত্মিকতায় নতুনভাবে জেগে ওঠা। বিশ্বাস, আশা, ভালবাসায় ও নতুন চেতনায় পুনরুত্থিত যিশুর সঙ্গে পথ চলা। যিশু নিজেই বহু মানুষের মুক্তিপণ হিসেবে ক্রুশের ওপর জীবন উৎসর্গ করেছেন। ত্যাগের এই দৃষ্টান্ত একক ও বিরল। আর আমাদের মুক্তির পথ রচনা করার জন্য যিশুর জীবন উৎসর্গ হলো। সবচেয়ে বড় আত্মত্যাগ এবং ঈশ্বরের প্রতি বাধ্যতার প্রকাশ। যিশুখ্রিস্টের পুনরুত্থানের আলোতে আমাদের জীবনে নেমে আসে নতুনের চেতনা ও নবায়নের অনুপ্রেরণা। তিনি কবর থেকে উত্থিত হওয়ার মধ্য দিয়ে আমাদেরও আহ্বান করছেন আমরাও যেন কবর থেকে উত্থিত হই। আর এই কবর থেকে উত্থিত হওয়ার অর্থ হলো অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফিরে আসা, নীতি-নৈতিকতা যেন নড়বড়ে হয়ে না পড়ে। আমাদের যাত্রা যেন সদা সত্যের অভিমুখে হয়। এটি তো অসত্যের বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করার এক অকৃত্রিম আহ্বান। হৃদয়-মন থেকে ক্ষয়িষ্ণু চিন্তা-চেতনার অবসান ঘটানোর আহ্বান। পুনরুত্থানের মূল শিক্ষা হলো নতুন জীবন ধারণ করা। যে জীবনাদর্শ খ্রিস্ট নিজেই দৃষ্টান্ত হিসেবে রেখে গিয়েছেন। যে জীবন-ধারণে নেই কোন অন্যায়, অবিচার, অশুভ চিন্তা, খারাপ কাজ ইত্যাদি। ইস্টার সানডে হলো একটি সার্বজনীন আনন্দোৎসব। অর্থাৎ কোন নির্দিষ্ট জাতি বা গোষ্ঠীর জন্য যিশু পুনরুত্থান করেননি। তার মানবতার বাণী- সে তো সবার জন্য। তিনি কাউকে জোর খাটিয়েও বলেননি যে তার বাণী মানতে হবে। বরং তার বাণীর ফলে যার মনের দাগ মুছেছে সেই খ্রিস্টকে গ্রহণ করেছে। তাই ইস্টার সানডের আনন্দ আমরা একে অন্যের সঙ্গে সহভাগিতা করি, সবার মাঝে শুভবার্তা ছড়িয়ে দেই। এবারের পুনরুত্থানের আনন্দ ও শান্তি সবার জীবনে বয়ে আনুক আশার আলো। জাস্টিন গোমেজ নটর ডেম কলেজ, ঢাকা
×