ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বাধীনতা ॥ বাঙালীর শ্রেষ্ঠ অর্জন

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ২২ এপ্রিল ২০১৭

স্বাধীনতা ॥ বাঙালীর শ্রেষ্ঠ অর্জন

বাঙালী জাতির ইতিহাস অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা, শোষণ-বঞ্চনা ও চড়াই- উৎরাইয়ের ইতিহাস। দীর্ঘ দু’শ’ বছরের ব্রিটিশ শাসনের শোষণ-বঞ্চনা ঘুচিয়ে ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ শোষণ-বঞ্চনার জগদ্দল পাথর সরিয়ে বাঙালী ভেবেছিল তাদের ঘাড় থেকে বুঝি শোষণের জোয়াল খুলে পড়ল। কিন্তু না, সে আশায় গুড়েবালি। বাঙালীকে শোষণে-বঞ্চনায় কিভাবে দমিয়ে রাখা যায়- সে দিকে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার নতুন যড়যন্ত্র শুরু করল। কিভাবে একটি জাতিকে জ্ঞানগরিমায়, শৌর্যে-বীর্যে-সংস্কৃতিতে পেছনে রাখা যায় সেই মোক্ষম হাতিয়ারটিই বেছে নিল পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী। একে বারে বাঙালীর প্রাণের ভাষা বাংলার ওপর আঘাত! ১৯৪৮ সালে শুরু হলো বাংলাভাষা নয়, ‘উর্দু’ হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু না, এসব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বাঙালী ছাত্র-জনতা ফুঁসে উঠল। বাংলার দামাল ছেলেদের তাজা খুনের বিনিময়ে অর্জিত হলো বাংলা ভাষার মান। আর এখান থেকেই বাঙালী জাতি স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে অধিকারপ্রবণ হয়ে ওঠে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম যেমন ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮-এর সামরিক আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ’৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়, ১৯৭১ সালের দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান, ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালী ছিনিয়ে আনে তার শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীন বাংলাদেশ। বাঙালীর রক্তে কেনা সোনালি ফসল ও শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। বাঙালীর অহঙ্কার ও গর্বের ধন স্বাধীন বাংলাদেশ। দেখতে দেখতে আমরা পাড় করছি স্বাধীনতার ৪৬ বছর। স্বাধীনতাত্তোর পথপরিক্রমায় আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরে গিয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ প্রকৃত মুক্তির জন্য যেতে হবে আরও দূরে। সকল বাধা বিপত্তি মোকাবেলা করে সকলকে কাজ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত হয়ে রুখতে হবে সব অপশক্তি। স্বাধীন বাংলাদেশকে সুখী সমৃদ্ধ করতে চালাতে হবে সম্মিলিত প্রয়াস। শ্যামল চৌধুরী মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা
×