ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বৈশাখী সন্ধ্যায় নৃত্যালোকের মহুয়া নৃত্যনাট্যের পরিবেশনা

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২২ এপ্রিল ২০১৭

বৈশাখী সন্ধ্যায় নৃত্যালোকের মহুয়া নৃত্যনাট্যের পরিবেশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লোকগাথা ময়মনসিংহ গীতিকার অনবদ্য এক আখ্যান মহুয়া। সেই পালার চরিত্রগুলো ঘুরে বেড়ালো শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে। নাচের আশ্রয়ে বেদের মেয়ে মহুয়া সুন্দরীর সঙ্গে আবির্ভূত হয় জমিদার নদের চাঁদ। জাগ্রত হয় তাদের প্রণয়। ভালবাসার পথে নেমে আসে সমাজ আরোপিত প্রতিবন্ধকতা ও নিষ্ঠুরতা। শেষ পর্যন্ত উভয়ের মৃত্যুর মাধ্যমে বিয়োগান্তক পরিণতিতে শেষ হয় মহুয়া পালা। শুক্রবার সন্ধ্যায় মিলনায়তন পরিপূর্ণ নৃত্যানুরাগীদের মুগ্ধ করে নৃত্যনাট্যটি পরিবেশন করে নৃত্যালোক। নৃত্যনাট্যটির ভাবনা ও পরিচালনায় ছিলেন কবিরুল ইসলাম রতন। নৃত্যালোকের রজতজয়ন্তী উদ্্যাপন উপলক্ষে দুদিনের এই নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পের নানা ভুবনের ১৫ জন গুণী ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। চলচ্চিত্র শাখায় সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন নায়করাজ রাজ্জাক, সারা বেগম কবরী ও সুজাতা আজিম। নৃত্যকলায় সম্মাননা পেয়েছেন রাহিজা খানম ঝুনু, গোলাম মোস্তফা খান ও দীপা খন্দকার। নাট্যকলায় সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন ফেরদৌসী মজুমদার, শিমূল ইউসুফ ও রাইসুফ ইসলাম আসাদ। সঙ্গীতে সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন ফেরদৌসী রহমান, সৈয়দ আব্দুল হাদী, সাবিনা ইয়াসমিন ও কিরণ চন্দ্র রায়। জাদুশিল্পে ও যন্ত্রসঙ্গীতে যথাক্রমে সম্মাননা পেয়েছেন আশুতোষ শীল ও জুয়েল আইচ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সংসদ সদস্য নিলুফার জাফরউল্লাহ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ, আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রসাদ দেবনাথ, নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মীনু হক, গবেষক ও নৃত্যব্যক্তিত্ব ড. সোমা মমতাজ। নৃত্যনাট্যের কাহিনীতে জমিদার নদের চাঁদের এলাকায় আসে বেদে দল। এই দলকে চাঁদের বাডিতে খেলা দেখানোর জন্য ডাকা হয়। বেদে সর্দার হোমরা বাইদ্যার মেয়ে মহুয়াকে দেখে মুগ্ধ হয় নদের চাঁদ। মহুয়ারও ভালো লাগে চাঁদকে। বেদে দল নদের চাঁদের জমিতে বসবাসের অনুমতি লাভ করে। এদিকে নদের চাঁদ ও মহুয়ার মধ্যে গড়ে ওঠে ভালবাসার সম্পর্ক। সেই ভালবাসার কথা জানতে ক্ষিপ্ত হয় বেদেসর্দার। হোমরা বাইদ্যা মহুয়াকে নির্দেশ দেয় নদের চাঁদকে হত্যা করতে, কিন্তু তা করতে পারে না মহুয়া। ঘটনাক্রমে মহুয়া আত্মহত্যা করে। মহুয়ার আত্মহত্যার পরপরই বেদে সর্দারের নির্দেশে নদের চাঁদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সুজন। মহুয়ার পাশে লুটিয়ে পড়ে নদের চাঁদ। মৃত্যুই হয় মহুয়া ও নদের চাঁদের ভালবাসার শেষ পরিণতি। মহুয়া চরিত্রে রূপ দিয়েছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ ও নদের চাঁদের চরিত্রে রূপ দিয়েছেন কবিরুল ইসলাম রতন। এছাড়া হোমরা বেদেসহ বিভিন্ন চরিত্রে রূপ দিয়েছেন রহমত আলী, দীপা খন্দকার, গোলাম মোস্তফা খান, শামীম ফরহাদ, আজিজ রেজা, লিখন রায় প্রমুখ। ‘জন্ম ঝড়ের বাংলাদেশ’ গ্রন্থের প্রকাশনা মহান মুক্তিযুদ্ধ ও প্রাসঙ্গিক নানা অনুষঙ্গ নিয়ে ড. নূরুন নবী রচিত ‘জন্ম ঝড়ের বাংলাদেশ’ রচিত ‘জন্ম ঝড়ের বাংলাদেশ’ নামের গ্রন্থ প্রকাশিত হলো শুক্রবার। বিকেলে বাংলা একাডেমিতে গ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসব অনুিষ্ঠত হয়। বইটি প্রকাশ করেছে সময় প্রকাশন। বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভাষা সৈনিক কবি আহমদ রফিক। বইটি নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরী, হায়াৎ মামুদ প্রমুখ। নিজের বই সম্পর্কে বলেন লেখক। বক্তারা আলোচনায় বইটির বিশদ আলোচনা তুলে ধরার পাশাপাশি লেখকের সংগ্রামী জীবনের নানা দিক নিয়েও আলোকপাত করেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসগ্রন্থের মধ্যে এই বইটিও একটি অনন্য সংযোজন বলে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন। ড. নূরুন নবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন বিভাগের শিক্ষক। ইতোপূর্বেও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে এই লেখকের একাধিক রচনা প্রকাশিত হয়েছে। ‘জন্ম ঝড়ের বাংলাদেশ’ বইয়েও তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের উত্থানকেই উপজীব্য করেছেন। সময় প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইটির মূল্য ৩৫০ টাকা। প্রচ্ছদ করেছেন শিবু কুমার শীল। কিশোরগঞ্জে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’ স্লোগানে আমাদের কিশোরগঞ্জ সংগঠনের আয়োজনে পুরাতন স্টেডিয়ামে নববর্ষ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া জমজমাট গ্রামীণ মেলায় খাবারের দোকান থেকে শুরু করে পোশাক, প্রসাদনী, মহিলাদের ব্যবহার্য সামগ্রী আর খেলনার দোকানের পাশাপাশি বসানো হয়েছিল নানা রকম রাইড। আর উপস্থিত দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য প্রতিদিন নাটক, কনসার্ট ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন ছিল। বিকেল থেকে গভীর রাত অবধি সব বয়সের বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। পহেলা বৈশাখের সকালে শহরে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হয়। প্রথমদিন থেকে বৃহস্পতিবার শেষদিন পর্যন্ত যেসব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ছিল সেগুলো হলো-আমাদের কিশোরগঞ্জের পরিবেশনায় গীতিনাট্য ‘ইছামতির বাঁকে’ মঞ্চস্থ, মুক্তধারা, ঈশাখাঁ সাংস্কৃতিক পরিবার ও নৃত্যাঙ্গন একাডেমির বিশেষ নৃত্যানুষ্ঠান, বাউলশিল্পী গিয়াস উদ্দিন ও তার দলের পরিবেশনায় বাউলসন্ধ্যা, আনন্দধারা সঙ্গীত নিকেতনের বিশেষ সাংস্কৃতিকনুষ্ঠান ও ইথার ব্যান্ডের কনসার্ট, ঈশাখাঁ সাংস্কৃতিক পরিবারের গীতি নৃত্যনাট্য ‘কাজল রেখা’ মঞ্চস্থ, এপার ওপার নাট্যগোষ্ঠীর নাটক ‘নাচ মহল’ এবং প্রতিধ্বনি থিয়েটারের গীতি নৃত্যনাট্য ‘রূপবান’ পরিবেশিত হয়। মুন্সীগঞ্জে মাসব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, মুন্সীগঞ্জে পুলিশ লাইন সংলগ্ন ধলেশ্বরী তীরে মাসব্যাপী বৈশাখী মেলা শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হয়েছে। পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) উদ্যোগে এই মেলার আয়োজন করা হয়। উদ্বেধনী দিনেই মেলায় জনতার ঢল নামে। জাকজমকপূর্ণ নদী তীরের মনোরম পরিবেশের এই মেলা কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিনই বসবে গানের আসর। এতে ৩০টি স্টল স্থান পেয়েছে। বই, শিশুদের খেলনা, চাকমাদের কাপড়, নকশীকাথা, কসমেটিক, ভেনিটিব্যাগসহ মিষ্টির দোকানের পসরায় বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও কেনা বেচার ধুম। মেলায় শিশুদের স্পিড বোটে ১শ’ টাকায় ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে।
×