ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতীয় সেনাপ্রধানের ফের ঢাকায় আসার খবর ভিত্তিহীন

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২২ এপ্রিল ২০১৭

ভারতীয় সেনাপ্রধানের ফের ঢাকায় আসার খবর ভিত্তিহীন

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ এক মাসের ব্যবধানে আবারও ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের ঢাকায় আসার খবরের কোন সত্যতা মেলেনি। বৃহস্পতিবার ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাদ দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হলেও পত্রিকাটি পরে এ খবর প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে ভিত্তিহীন এ খবর প্রকাশের পরে এ নিয়ে অপরাজনীতি শুরু করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক মাসের ব্যবধানে আবারও ঢাকায় আসছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা বিষয়ক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতেই তার এ সফর বলে জানায় টাইমস অব ইন্ডিয়া। ভারতের এ সংবাদমাধ্যমটি জানায়, চারদিনের সরকারী সফরে চলতি মাসের ২৭ তারিখ ঢাকায় আসবেন বিপিন রাওয়াত। এ সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা বিষয়ে সমঝোতা নিয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত উচ্চপদস্থদের সঙ্গে কথা বলবেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাদ দিয়ে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ঢাকার বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করে। ঢাকা ও দিল্লীর একাধিক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, এক মাসের ব্যবধানে আবারও ভারতীয় সেনা প্রধানের ঢাকা আসার খবরটি সত্য নয়। টাইমস অব ইন্ডিয়ার ওই খবরেরও কোন সত্যতা নেই। এছাড়া ওই খবর পরিবেশনের পর টাইমস অব ইন্ডিয়া ভারতের সেনা বাহিনীর আবারও ঢাকা আসার খবরটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আবার ঢাকা আসার অসত্য খবরকে কেন্দ্র করে বিএনপি ইতোমধ্যেই অপরাজনীতি শুরু করে দিয়েছে। ভারতের সেনা প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের এক মাসে দুই দফা ঢাকা সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দলটি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু শুক্রবার ঢাকায় এক মানববন্ধন কর্মসূচীতে বলেন, ভারতের সেনা প্রধান মি. রাওয়াত আগামী ২৭ এপ্রিল আবারও আসছেন। গতমাসেই তিনি ঘুরে গেছেন। এত ঘন ঘন ভারতের সেনাপ্রধানের কেন আসা লাগছে? ভারতীয় সেনা প্রধানকে উদ্দেশ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, তিনি পুরাতন অস্ত্র আমাদের কাছে চাপিয়ে দেয়ার জন্য আসবেন? নাকি অন্য কোন শলা-পরামর্শ করার জন্য আসবেন? এই যাওয়া-আসা, এই প্রতিরক্ষা সমঝোতা আমাদের শঙ্কিত করছে। তিনি বলেন, এই শঙ্কা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র’ নিয়ে। ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সমঝোতাসহ যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলো আগামী সংসদ অধিবেশনে উপস্থাপনের দাবি জানান সংসদের বাইরে থাকা বিএনপির এ নেতা। তিনি বলেন, এসব সমঝোতা বা চুক্তি প্রকাশ না করলে মানুষ যে এসবকে গোলামীর চুক্তি মনে করছে, সেই ধারণা আরও দৃঢ় হবে। ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক সাক্ষরের প্রতিবাদে এবং তিস্তাসহ ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন’ এক মানববন্ধনে শামসুজ্জামান দুদু এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর এবারের ভারত সফরে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। বাংলাদেশকে সামরিক সরঞ্জাম কিনতে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার প্রস্তাব করেছে ভারত। শুরু থেকেই ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারকের বিরোধিতা করে আসছে বিএনপি। যদিও বিএনপি সরকারের আমলেই চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছিল। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের এক সপ্তাহ আগে ভারতের সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াত গত ৩১ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন। ওইটিই ছিলো তার প্রথম বাংলাদেশ সফর।
×