ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘সারাদিন খেললেও গোল পেত না বার্সিলোনা’

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২১ এপ্রিল ২০১৭

‘সারাদিন খেললেও গোল পেত না বার্সিলোনা’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জুভেন্টাসের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শেষ আট থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে বার্সিলোনাকে। বুধবার রাতে ফিরতি লেগে ঘরের মাঠেও গোল পাননি কাতালানদের বিশ্বখ্যাত তারকারা। এ নিয়ে চলছে সমালোনার ঢেউ। এমন সময়ে জুভ কোচ ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রি বলেছেন, সারাদিন খেললেও গোল খেত না জুভেন্টাস। জিওর্জিও চিয়েল্লিনি, দানি আলভেজ, লিওনার্ডো বনুচ্চিদের নিয়ে গড়া জুভেন্টাসের রক্ষণকে দেয়ালের সঙ্গেই তুলনা করা হচ্ছে। মেসি-নেইমার ও সুয়ারেজের মতো স্ট্রাইকারদের দুই ম্যাচ মিলিয়ে ১৮০ মিনিট আটকে রেখে তার ঈ্রমাণও দিয়েছে তারা। বার্সার মাঠে দ্বিতীয় লেগে গোলশূন্য ড্রয়ের পর দলের রক্ষণভাগের প্রশংসা করে জুভেন্টাস কোচ এ্যালেগ্রি বলেছেন, সারাদিন খেললেও হয়তো বার্সার কাছে হারতাম না। এই ম্যাচের আগে গত ৫০টি ম্যাচে বার্সিলোনার গোলশূন্য ড্র ছিল না। তাই মেসি-নেইমাররা গোল না পাওয়ায় বিস্মিত জুভেন্টাস কোচও। এ্যালেগ্রি বলেন, দুই লেগে বার্সার গোল করতে না পারাটা অভূতপূর্ব ও নজিরবিহীন। নিজের দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে জুভ কোচ বলেন, তারা এটা বুঝতে পেরেছিল যে, তারা আগের চেয়েও ভাল করতে পারে। খেলোয়াড়রা যা করেছেন তাতে আমি খুবই খুশি। কিন্তু এটা বুঝেছি, সারাদিন খেললেও গোল পেত না বার্সা। অন্যদিকে বার্সিলোনা কোচ লুইস এনরিকে বলেছেন, তুরিনের ফলই তাদের বিদায় নিশ্চিত করেছে। ম্যাচ শেষে বার্সা বস বলেন, আমি একটি শব্দে আমাদের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ অভিযান বর্ণনা করতে পারব না। তবে তুরিনের ত্রুটিপূর্ণ প্রথম লেগই আমাদের বিদায় নিশ্চিত করেছে। আমি তুরিনের ম্যাচের অনেক কিছুর কথা বহুদিন মনে রাখব। তুরিনের ওল্ড লেডিখ্যাত দলটির বিরুদ্ধে কোনমতেই পেরে ওঠেনি বার্সিলোনা। এরপরই আলোচনা উঠে গেছে, সত্যিই কি শেষ হতে চলছে বার্সিলোনাযুগ? মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের আক্রমণভাগ কি শেষ পর্যন্ত ফ্লপ হতে বসল? জুভেন্টাসের কাছে হারের পর বার্সাযুগের সমাপ্তি প্রসঙ্গে ফুটবলবিশ্বে এখন বেশ সরব। ঘরের মাঠে ২০১৩ সালের পর চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ম্যাচে আর হারেনি বার্সিলোনা। বেয়ার্নের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচের পর ন্যুক্যাম্পে আর কোন ম্যাচেই গোলশূন্য থাকেননি মেসি-নেইমাররা। এই প্রথম ঘরের মাঠে কোন দলের বিরুদ্ধে গোল করতে ব্যর্থ হলেন তাঁরা। ২০১৫ সালে ট্রেবল জয়ের পর আর তেমন বড় কোন সাফল্য নেই দলটির। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তো হাতছাড়া হলোই, বড় কোন অঘটন না ঘটলে লা লিগার শিরোপাও এবার ধরে রাখতে পারবে না দলটি। এ কারণেই সমালোচকরা মনে করছেন, বার্সায় মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের সময় শেষ হয়ে এসেছে। এমএসএন জুটি এখন ধারাবাহিকভাবে চমক দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে। পিএসজির বিপক্ষে ‘মিরাকল’ ম্যাচের পর এই তিন তারকার সমন্বয়েও অভাব দেখা গেছে। আর দলের প্রাণভোমরা মেসিও নেই আগের মতো। নিজ দেশ আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ধুঁকছে। চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন মেসি। খারাপ সময়ের ছাপটা ক্লাব ফুটবলেও পড়ছে। পরশু রাতে জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে ৬০ শতাংশের বেশি বল দখলে রাখলেও গোল পায়নি বার্সা। সে দলটি প্রতিযোগিতায় প্রতি ৩২ মিনিটে একটি করে গোল করেছে, সেই দলটিই কিনা জুভদের বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে পুরো ১৮০ মিনিটে একটাও গোল পেল না। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে প্রতিপক্ষের জালে ২৬ বার বল জড়িয়েছে বার্সিলোনা। প্যারিস সেন্ট জার্মেইনকে ১০, সেল্টিককে ৯, ম্যানচেস্টার সিটির মতো বড় দলের জালে ৭ গোল দেয়া দলটিই কি না গোল করতে ভুলে গেল। যে যা-ই বলুক না কেন, বার্সা ফুরিয়ে গেছে এমন কথা মানতে নারাজ কোচ জেরোর্ডো মার্টিনো। চ্যাম্পিয়ন্স লীগ থেকে বিদায়ের জন্য প্রথম লেগের ম্যাচটাতে বড় ব্যবধানটাকে দায়ী করছেন তিনি। সাবেক বার্সা ও আর্জেন্টিনা কোচ বলেন, এ মুহূর্তে ভাল ছন্দে নেই আমরা।
×