ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গী সন্দেহে রাবির তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২১ এপ্রিল ২০১৭

জঙ্গী সন্দেহে রাবির তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

রাবি সংবাদদাতা ॥ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) জঙ্গী সন্দেহে তিন শিক্ষার্থীকে পুলিশে সোপর্দ করেছে ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় টুকিটাকি চত্বর থেকে তাদের পুলিশে দেয়া হয়। আটকরা হলেন মার্কেটিং বিভাগের জুবায়ের হোসেন, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের আল তৌফিক সানি, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের মাকসুদুল হক। তারা সবাই প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে জুবায়ের হোসেনের বাড়ি নরসিংদীতে। তার বাবার নাম আকবর আলী। সাংবাদিকদের কাছে জিহাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ফেসবুকে কিছুদিন ধরে কয়েকজনের জিহাদী পোস্ট পড়ে আন্তরিকভাবে ‘মহব্বত’ চলে আসে। চার-পাঁচদিন আগে তারা আমার বন্ধু হয়েছে। তাদের মাধ্যমেই জিহাদে উদ্বুদ্ধ হচ্ছি। জিহাদ ও জঙ্গীবাদ সম্পর্কে জানতে পারছি। তাদের আমি চিনি না বা কখনও দেখাও হয়নি। তারা আফগানিস্তান, সিরিয়া ও ইরাক যুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট দিত। জানা যায়, জুবায়ের হোসেন তার ফেসবুক এ্যাকাউন্ট (মধ্যরাতের অশ্বারোহী) থেকে দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গীবাদ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন লেখা পোস্ট এবং শেয়ার করে আসছিল। বিষয়টি জানতে পেরে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় তাকে টুকিটাকি চত্বরে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় তার স্মার্টফোনে আইএস জঙ্গীদের যুদ্ধের একাধিক ভিডিও এবং প্রধানমন্ত্রীকে ব্যঙ্গ করা গানের ভিডিও পাওয়া যায়। এছাড়া তার ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ছদ্মনামে থাকা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে মেসেজ চালাচালির প্রমাণ পায় ছাত্রলীগ। দেড় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জুবায়ের জিহাদে সমর্থন থাকার কথা স্বীকার করেন। রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, জুবায়েরের ফেসবুক আইডি থেকে মেসেজ বিনিময়ের সূত্র ধরে তার সহযোগী মাকসুদুল হককে শনাক্ত করা হয়। তার ফেসবুক নাম ‘পরবর্তী স্টেশন কবর’। পরে তাকেও টুকিটাকি চত্বরে ডেকে নেন ছাত্রলীগ নেতারা। একই সময়ে টুকিটাকি চত্বরে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করায় আল তৌফিক সানি নামের আরেক শিক্ষার্থীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার ব্যাগে ১৬টি সিম পাওয়া যায়। ছাত্রলীগের ধারণা, এই দুই শিক্ষার্থী জুবায়েরের সহযোগী। পরে বিষয়টি মতিহার থানায় জানানো হলে পুলিশ ওই তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মুঠোফোনের জিহাদী ভিডিও এবং প্রধানমন্ত্রীকে ব্যঙ্গ করা ভিডিও সম্পর্কে আটক জুবায়ের বলেন, দুই বছর আগে হুসাইন নামে নরসিংদীর এক আলেমের কাছ থেকে ভিডিওগুলো পেয়েছি। ভাল লাগায় সেগুলো রেখে দিয়েছি। হুসাইন এখন রাজধানীর এক মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছেন বলে দাবি করেন তিনি। রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, জুবায়েরের সঙ্গে জঙ্গীদের বড় কোন নেটওয়ার্কের সম্পর্ক থাকতে পারে। অন্য দুজনের আচরণও সন্দেহজনক মনে হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে বলে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির বলেন, জঙ্গী সন্দেহে তিন শিক্ষার্থীকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আটক করা হয়েছে। তারা ফেসবুকে জঙ্গীবাদ সম্পর্কিত প্রচার চালাচ্ছিল বলে ছাত্রলীগ অভিযোগ করেছে। আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
×