ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

নাচ গান কবিতা পাঠ- চয়ন সাহিত্য ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২১ এপ্রিল ২০১৭

নাচ গান কবিতা পাঠ- চয়ন সাহিত্য ক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নাচ, গান, কবিতা পাঠ আর পদক প্রদানের মধ্য দিয়ে চয়ন সাহিত্য ক্লাবের পঞ্চদশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয় বৃহস্পতিবার। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিকেলে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অধ্যাপক পান্না কায়সার। অনুষ্ঠানে ‘চয়ন’ ও ‘দশদিগন্ত’ সাহিত্য ম্যাগাজিনের ২৬ বছর পূর্তীতেও করা হয় বর্ণিল আয়োজন। ভাষাসৈনিক কবি ড. এনামুল হক, চিত্রশিল্পী লেখক সৈয়দ লুৎফুল হক ও কবি মাহমুদ কামালকে ‘চয়ন সাহিত্য ক্লাব স্বর্ণপদক ২০১৬’ প্রদান করা হয়। চয়ন প্রকাশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। প্রধান আলোচক ছিলেন সাহিত্যিক আলী ইমাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কর্ণধার কবি লিলি হক। অনুষ্ঠান উদ্বোধনের সময় পান্না কায়সার বলেন, আমরা বর্তমানে দেখছি সমাজে মন্দ মানুষের আবির্ভাব হচ্ছে। এই মন্দ মানুষকে উৎখাত করার অস্ত্র খুঁজে পাই আমাদের সাহিত্যের মধ্যে, গানের মধ্যে সর্বোপরি আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে। গান, কবিতা, সাহিত্য দিয়ে জঙ্গীবাদসহ সকল মৌলবাদকে উৎখাত করতে হবে। এর আগে অসীম হকের কণ্ঠে ‘চোখ ভরা স্বপ্ন সেই তো চয়ন’ গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আলোচনা পর্ব। অনুষ্ঠানে চয়ন প্রকাশন হতে প্রকাশিত কথাশিল্পী ওয়াসীম হকের কিশোর উপন্যাস ‘সুমন নামের সাহসী ছেলেটি’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। বক্তারা বলেন, আজ যারা সম্মানিত হলেন তারা স্ব স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছেন, তাদের অভিনন্দন জানাই। আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন এই গুণী ব্যক্তিত্বদের লেখনীতে আরও উদ্বুদ্ধ হয়। আলোচনা পর্বের পর শিল্পী নাশিদ কামাল তার সুললিত কণ্ঠে মনোমুগ্ধকর গান পরিবেশন করে সকলকে মুগ্ধ করেন। আলোচনানুষ্ঠানের আগে একক আবৃত্তি পরিবেশন করে ক্লাবের সদস্যবৃন্দ। পরে দলীয় নাচ ও গান পরিবেশন করে ঐতিহ্য শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রথম নারী শিল্পী নমিতা ঘোষের কণ্ঠে ‘বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রীস্টান, বাংলার মুসলমান’ ও ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ গানের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের সমাপ্তি হয়। শিল্পকলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই নাটক মঞ্চস্থ শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চস্থ হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই নাটক। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই হলে দুটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে স্বরবীথি থিয়েটার মঞ্চায়ন করে রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প অবলম্বনে ‘শাস্তি’। অন্যদিকে স্টুডিও থিয়েটার হলে বঙ্গলোকের প্রযোজনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অরসিকের স্বর্ণপ্রাপ্তি অবলম্বনে ‘মর্তের অরসিক’। শাস্তি নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন শওকত হাসান। ‘শাস্তি’ নাটকে শাস্তির এক কঠিন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। অভিশপ্ত দারিদ্র্য কুড়িদের যেমন শাস্তি দিচ্ছে তেমনি শাস্তিকে কঠিন করে তুলেছে ভালবাসা স্নেহ-মমতায় ফাঁসির দড়ি গলায় পরে কোমল ও চঞ্চলমতি চন্দরা। এখানেই শেষ নয়। শাস্তি থেকে রেহাই পায়নি ছোট ভাই ছিদেম ও দুঃখীরাম রুই। দরিদ্র যৌথ পরিবারে জমিদারের নিপীড়ন, অর্ধাহারে-অনাহারে জীবন কাটলেও সুখ উঁকি মেরে আসতে চেয়েছিল, কিন্তু আসেনি। বড় ভাই খুন করে বড় বউকে, ফাঁসির দড়ি ছোট ভাইয়ের বউ চন্দরা গলে পরলেও শাস্তিকে ঠেকাতে পারেনি। ওয়ার্ডেন কর্তব্যপরায়ণ হলেও চোখের পানি আগলে রাখতে পারেনি চন্দনার মুখ পানে দৃষ্টি রেখে। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিজানুর রহমান, শওকত হাসান, পূর্ণিমা সরকার, পাপিয়া সুলতানা, আরিফ আল মামুন ও সালমান হায়দার। এদিকে স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় বঙ্গলোকের দ্বিতীয় প্রযোজনা ‘মর্তের অরসিক’। নাট্যভাবনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন শামীমা শওকত লাভলী। ২০১২ সালে আরণ্যকের ৮ম ব্যাচের কর্মশালা প্রযোজনা হিসেবে প্রথম মঞ্চায়িত হলেও এখন বঙ্গলোকের নিয়মিত নাট্যপ্রযোজনা হিসেবে নাটকটি মঞ্চায়িত হচ্ছে। সমসাময়িকতাই এই নাটকের মূল উপজীব্য। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শামীমা শওকত লাভলী, রবিন বসাক, তানভীর হোসেন সামদানী, রাজীব রাজ, সিনথিয়া রহমান ও শীষ। ‘তুমি আমার অহংকার’ শীর্ষক সঙ্গীতানুষ্ঠান আজ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় পরিবেশিত হবে ‘তুমি আমার অহংকার’ শীর্ষক সঙ্গীতানুষ্ঠান। অভ্যুদয় সঙ্গীত অঙ্গনের চট্টগ্রাম শাখার পরিবেশনায় বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে এ সঙ্গীতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার অজিত রায়ের সুযোগ্য কন্যা শিল্পী শ্রেয়সী রায়। সঙ্গীত পরিবেশনায় অভ্যুদয় চট্টগ্রাম শাখার শিক্ষার্থী কামনাশীষ সেনগুপ্ত, রীপা পালিত, সেজুুঁতি দে, শৈবাল আদিত্য, চন্দ্রিমা ভৌমিক রাত্রি, শ্রীয়া চেীধুরী, ঝুলন কুমার, প্রিয়ম বিশ্বাস এবং এলড্রিন ডি ক্রাউলি। যন্ত্রানুষঙ্গে তবলায় সানি দে, বেহালায় রিকি বসাক, প্যাডে রনি এবং কি-বোর্ডে নিখিলেশ বড়ুয়া। দর্শনীর বিনিময়ে নিয়মিত এ আয়োজনে থাকবে শ্রদ্ধেয় সুরস্রষ্টা ও সঙ্গীতশিল্পী অজিত রায়ের গান।
×