ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

র‌্যাব পরিচয়ে ক্লাবে অভিযান ॥ মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

এসিসহ ডিবির আট জন সাসপেন্ড, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২১ এপ্রিল ২০১৭

এসিসহ ডিবির আট জন সাসপেন্ড, তদন্ত কমিটি গঠন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ র‌্যাব পরিচয়ে রাজধানীর কাফরুল এলাকার একটি ক্লাবে অভিযানকালে মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেয়ার অভিযোগে এক কর্মকর্তাসহ ৮ জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া। মঙ্গলবার রাতে সাদা পোশাকে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন ‘নিউ ওয়েভ’ ক্লাবে অভিযান চালায় ১১ সদস্যের একটি দল। ওই দলের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার দলের সহকারী কমিশনার রুহুল আমিন। অভিযানকালে ক্লাবে জুয়া খেলা হচ্ছে অভিযোগ তুলে অভিযানকারীরা ক্লাবে থাকা লোকজনের মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা নিয়ে নেয়। এ সময় ক্লাবের লোকজন অভিযানকারীদের পরিচয় জানতে চান। অভিযানকারীদের কেউ কেউ নিজেকে র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দেন বলে একটি পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে। ক্লাব থেকে এক সেনা কর্মকর্তার স্বামীসহ চারজনকে আটক করে নিয়ে যান অভিযান পরিচালনাকারীরা। কাফরুল এলাকায় সেনানিবাসের ফটকের চেকপোস্টে মিলিটারি পুলিশ গাড়ি থামায়। এ সময় আটককৃতরা মারধর করে তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয় বলে মিলিটারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে সেখানে কাফরুল থানা পুলিশ হাজির হয়। থানা পুলিশ অভিযানে অংশ নেয়া ডিবি পুলিশের ১১ সদস্যকে থানায় নিয়ে যায়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন জানান, ডিবির একটি টিম কাফরুলের একটি ক্লাবে অভিযান চালায়। ক্লাব থেকে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। যাদের আটক করা হয়েছিল তাদের মধ্যে একজন মেজরের স্বামী ছিলেন। ফেরার পথে মিলিটারি পুলিশ তাদের আটকায়। পরে কাফরুল থানা পুলিশ অভিযানকারীদের থানায় নিয়ে যায়। ক্লাব থেকে আটককৃতদের জোর করে ধরে আনা হয়েছিল। আটককৃতরা কোন অপরাধে জড়িত ছিলেন না। মূলত একটা ভ্রান্ত ধারণার জন্ম হয়। ক্লাব থেকেই বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে জানানো হয়। পুলিশ কমিশনার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। এদিকে যাদের ধরা হয়েছিল তাদেরও ছেড়ে দেয়া হয়। র‌্যাব পরিচয়ে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ডিবি পুলিশের সদস্যদের অন্য বাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচয় দেয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। কারণ ডিবির নিজস্ব পরিচয় আছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দায়িত্বে থাকা ওই দলটির মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর ক্ষমতা ছিল না। ক্ষমতার বাইরে অভিযান চালানোর দায়ে কয়েকজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ডিবির পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার মোঃ নুরুন্নবী জানান, ওই অভিযানে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের আট সদস্যকে ইতোমধ্যে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী তাদের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটির সদস্য ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আহমেদ জানান, কমিটির অপর দুই সদস্য হচ্ছেন গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জামিল আহমেদ ও পুলিশ সদর দফতরের যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। তাদের তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে ক্লাবে অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সহকারী কমিশনার রুহুল আমিন জানান, ঘটনাটি উর্ধতন কর্মকর্তারা তদন্ত করে দেখছেন। ঘটনাটি কাফরুল থানাধীন হওয়ায় এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) কোন মন্তব্য করেনি। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি বলে পুলিশ জানায়।
×