ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে চার হাজার নতুন বাস চালাবে সাত কোম্পানি

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২১ এপ্রিল ২০১৭

রাজধানীতে চার হাজার নতুন বাস চালাবে সাত কোম্পানি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার গণপরিবহন সঙ্কট লাঘবে বিদেশ থেকে যে চার হাজার বাস আনা হবে সেগুলো পরিচালনার জন্য সাতটি আলাদা কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে রুশ ও সৌদি দূতাবাসের সামনে সড়ক ও ফুটপাথের নিরাপত্তা প্রতিবন্ধকতা সরানোর কাজ পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। বুধবারও একই কথা জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে সিল্কলাইন ট্র্যাভেলসের বাস সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, ঢাকার পরিবহন সঙ্কট লাঘবে বিদেশ থেকে চার হাজার বাস আনার বিষয়ে আগামী মে মাসে সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন, ঢাকার গণপরিবহন সঙ্কটে আরও বাস দরকার। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পরিবহন নেতাদের নিয়ে আমার সঙ্গে বসবেন। আরও চার হাজার গাড়ি বিদেশ থেকে আনার একটি চিন্তাভাবনা মেয়র আনিসুল হক সাহেব করছেন। সে লক্ষ্যেই বাস মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। বৃহস্পতিবার আনিসুল হক বলেন, আমাকে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন বাস নামানোর কাজটি করে দেয়ার জন্য। আমি সে অনুযায়ী (কাজ) করছি। কাজ শেষ হওয়ার পর এগুলো আর সিটি কর্পোরেশনের হাতে থাকবে না। সাতটি পৃথক হোল্ডিং কোম্পানি গঠন করে তাদের হাতে বাসগুলো দিয়ে দেয়া হবে। আশা করছি, এ বছরই কিছু বাস আমরা নামাতে পারব। ওই চার হাজার বাস আনার বিষয়ে পরিবহন মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এর মধ্যে ২৬টি বৈঠক হয়েছে এবং প্রক্রিয়াটি প্রায় শেষপর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে বৃহস্পতিবার আনিসুল হক বলেন, সবাইকে রাজি করানো কঠিন ছিল। কারণ এর পেছনে হাজার কোটি টাকার ব্ল্যাক মানি কাজ করছে। যারা এটা করছেন, উনারাই বলেন- ভাই, অনেক লোকের অনেক স্বার্থ আছে, যেটা বাংলাদেশে থাকে। আমরা বলেছি, তাদের স্বার্থ বেশি না দেশের স্বার্থ বেশি? মানুষ ভুগছে, আসুন আমরা সবাই মিলে কিছু একটা করি। জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরপরই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাজধানীর গণপরিবহন সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ নেয় উত্তর সিটি কর্পোরশেন। এ ব্যাপারে পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেন আনিসুল হক। ব্যবসায়ীরা জানান, নতুন বাস নামানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো উচ্চমাত্রায় ব্যাংক সুদ ও যানজট সমস্যা। মূলত এ কারণেই বিগত কয়েক বছরে বেশকিছু কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংক সুদ কম হলে মালিকরা নতুন নতুন বাস নামাতে সম্মতি দেন। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন মেয়র। শেষ পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয় ব্যাংক সুদ কমানোর সম্মতি দেয়। পাশাপাশি ১১ ভাগ সুদের মধ্যে কিছু অংশ সরকার পরিশোধ করার দায়িত্ব নেয়। বাকিটা মালিকদের। এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে কোম্পানির মাধ্যমে বাস পরিচালনার প্রস্তাব তৈরি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায় সিটি কর্পোরেশন, যা চূড়ান্তভাবে অনুমোদন হয়েছে বলেও জানা গেছে। এখন নতুন করে বাস নামানোর প্রক্রিয়া শুরুর পালা। মূলত এজন্য আগামী মাসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও মেয়র আনিসুল হকসহ পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে যৌথ বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে মালিকদের বিনিয়োগ, পরিচালনাসহ সার্বিক বিষয়ে মতামত নেয়া হবে বলে জানা গেছে। সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই পর্যায়ক্রমে বাসগুলো নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় নামানো হবে। এতে পরিবহন সঙ্কটের অনেকটাই সমাধান হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি পুরনো লক্কড়-ঝক্কড় বাস তুলে দেয়া হবে। গত প্রায় এক বছরে রাজধানীতে দেড় হাজার নতুন বাস নেমেছে বলেও মালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন।
×