রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে অভিযোগ ষড়যন্ত্রনির্ভর

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নিয়ে অভিযোগ মোটেও বিজ্ঞানসম্মত নয়, বরং অনুমাননির্ভর, আবেগ এবং জ্যোতিবিদ্যা নির্ভর বলে মন্তব্য করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির অভিযোগ, যারা অভিযোগ করছেন, তাদের শীর্ষ ব্যক্তিদের অভিযোগ ষড়যন্ত্র নির্ভর। সকল প্রকার সুরক্ষা দিয়েই এই বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ হবে, তাই এ প্রকল্প অন্যত্র সরানোর কোন সম্ভাবনাই নেই। সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের পক্ষ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, যারা আবেগের কারণে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন, তাদের আমরা সম্মান জানাই। কিন্তু যাদের অভিযোগ জ্যোতিবিজ্ঞান নির্ভর, তাদের বিজ্ঞান নির্ভর কোন যুক্ত উপস্থাপনের আহ্বান জানাই। সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামালের অভিযোগের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করছে না। সুলতানা কামালের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, তিনিসহ যারা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তারাই জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। এ´িম ব্যাংক ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে অর্থায়ন করছে। তাই এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর। তিনি বলেন, রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্রের আশপাশের এলাকার পরিবেশ রক্ষায় প্রথমে সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতি ব্যবহার করার কথা ছিল। কিন্তু সরকার অধিকতর নিরাপত্তার জন্য আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতি ব্যবহার করছে। এ জন্য যন্ত্রপাতি আমদানি করছে সরকার। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের নিঃসরিত ছাই কিনতে বাংলাদেশের বিভিন্ন সিমেন্ট কারখানা এখনই যোগাযোগ করছে বলেও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, বড় পুকুরিয়া কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্রের কারণে সেখানকার ক্ষেতখামারের উৎপাদন না কমে বরং কোন কোন জায়গায় তা বৃদ্ধি পেয়েছে। সনাতন পদ্ধতির বিদ্যুত কেন্দ্রের কারণে সেখানে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয়নি। সেখানে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতির কারণে ওইসব এলাকার কোন ক্ষতিই হবে না। সুন্দরবন রক্ষা কমিটির সংবাদ সম্মেলনে ভাড়াটে বিশেষজ্ঞ ব্যবহার করা হয়েছে দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে যেসব আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের মতামত উপস্থাপন করা হয়েছে, তাদের কয়েকজনকে আমি চিনি। পৃথিবীতে টাকা দিলে অনেক ভাড়াটে বিশেষজ্ঞ পাওয়া যায়। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র সরানোর কোন পরিকল্পনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সরকারপ্রধান বলেছেন সকল প্রকার সুরক্ষা দিয়েই আমরা বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করছি। তাই এ প্রকল্প অন্যত্র সরানোর কোন সম্ভাবনাই নেই। রামপাল ইস্যুতে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল, তখন একজন মন্ত্রীর পদত্যাগ ও সচিব গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের বক্তব্যই প্রমাণিত হয়েছে। রামপাল ইস্যুতে এখন যারা জাতিকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র করছেন, তাদের অভিযোগও মিথ্যা প্রমাণিত হবে। এবারও সরকারের বক্তব্যই সত্য বলে প্রমাণিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আবদুস সবুর, আমিনুল ইসলাম আমিন, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, গোলাম রাব্বানী চিনু, রিয়াজুল কবির কাওছার, মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।