ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতে যারা ইন্ধন যোগাচ্ছেন তাদের শক্তির উৎস কোথায়?

কতিপয় ব্যক্তির কারণে সরকারের সাফল্য ম্লান হতে যাচ্ছে!

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২১ এপ্রিল ২০১৭

কতিপয় ব্যক্তির কারণে সরকারের সাফল্য ম্লান হতে যাচ্ছে!

তপন বিশ্বাস ॥ গুটিকয়েক ব্যক্তির কারণে সরকারের অসংখ্য ভাল কাজ ম্লান হতে চলেছে। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় তলিয়ে যাচ্ছে সরকারের জনবান্ধব অনেক কার্যক্রম। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে এটি সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাসে নতুন পদক্ষেপ কি না? দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে সরকার ইতোমধ্যে তিন বছর পার করে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সরকার অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। অতীতের তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে খ্যাত এই বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা বদলে দিতে বসেছে সরকারের ভাবমূর্তি। এ সকল ঘটনায় দুই মন্ত্রীর নাম বার বার উঠে আসছে। রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস বাস বন্ধ করা সরকারের একটি গণমুখী পদক্ষেপ ছিল। সেটি বাস্তবায়ন করতে সরকার কঠোরভাবে মাঠেও নেমেছিল। শাসক দলের খোদ সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই উদ্যোগটি নেন। কঠোরভাবে উদ্যোগ নেয়ার পর প্রথম দিকে পিছু হটেছিল বাস মালিকরা। কিন্তু দুই মন্ত্রীর ছত্রছায়ায় উজ্জীবিত হয়ে ওঠে বাস মালিকরা। শেষ পর্যন্ত সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়। আপাতত সির্টিং সার্ভিস চালানো হবে বলে পুনরায় সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। বেপরোয়া বাস চালানোর দায়ে রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যাপক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রতিবছর কয়েক হাজার লোক মারা যায়। এই দুর্ঘটনার জন্য বাস চালকরাই দায়ী। জনগণের এই অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার জন্য সরকার সড়ক পরিবহন আইন করার উদ্যোগ নেয় সরকার। শুরুতে আইনটির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এটি মন্ত্রিসভায়ও নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারকে সেখান থেকেও পিছু হটতে হয়েছে। তাদের দাবি, মানুষ মারার অধিকার দিতে হবে! শেষ পর্যন্ত তিন বছর কারাদ-ের বিধান রেখে আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। সে ক্ষেত্রেও সরকারের ওই দুই মন্ত্রীর নাম উঠে আসে। তাদের কারণে মূলত সরকারকে পিছু হটতে হয়। জনমনে প্রশ্ন সরকারের ওই দুই মন্ত্রীর জন্য কী সরকার গণমুখী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। আর ওই দুই মন্ত্রীরও সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে সংগঠন চালানো উচিত। সরকারের সাফল্য তো তাদেরও সাফল্য। সরকারের ব্যর্থতা তাদেরও ব্যর্থতা। তারা যদি মনে করেন সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা সব প্রধানমন্ত্রীর। আর তারা যদি জনবিরোধী কার্যক্রম চালানোর জন্য সরকারের ওপর চাপ দিতে থাকে তা হলে তাদের মতো মন্ত্রীর দরকার কী? থাক না তারা তাদের ব্যবসা নিয়ে। মন্ত্রী হবেন আর জনবিরোধী কার্যক্রম চালাবেন তা তো হতে পারে না। চিন্তাবিদরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে সরকার যদি পিছু হটে, তা হলে তা দেশের জন্য মঙ্গলকর হবে না। দেশের সাধারণ মানুষের কথা সরকার তথা সকলকে ভাবতে হবে। সব ক্ষেত্রে ব্যবসাবান্ধব হলে চলবে না। জনগণই সকল ক্ষমতার মূল। বাস মালিক বা নেতা হোন, আর ডাক্তার হোন, জনগণ বাঁচলে আপনারাও বাঁচবেন। টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ইতোমধ্যে তিন বছর পার করেছে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপি-জামায়াতের সহিংস আন্দোলন ও নাশকতামূলক কর্মকা- এবং বিভিন্ন সময় জঙ্গী সংগঠনগুলোর নাশকতামূলক কর্মকা- দমন করে এখন অনেক আওয়ামী লীগ সরকার রয়েছে অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে। বর্তমান সরকারের সময়েই সমুদ্র সীমানা সংক্রান্ত মামলা জয়, বিশাল সমুদ্র অঞ্চল এ দেশ প্রাপ্তি, অতিরিক্ত বিদ্যুত উৎপাদন, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ফ্লাইওভার নির্মাণ, রেমিটেন্স বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, ছিটমহল সমস্যার সমাধান, স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণ কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম, মেট্রোরেলের কার্যক্রম শুরু, আলোচিত জঙ্গীবাদ দমন ইত্যাদি বহুবিধ প্রাপ্তি রয়েছে এ সরকারের আমলে। এক কথায় উন্নয়নের রোল মডেল। এক সময়ের তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দেশ-বিদেশের কারও কারও জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা দিচ্ছে। দ্বিতীয় মেয়াদে দলীয় সরকারের অধীনে সুস্ঠু নির্বাচনের ‘বিতর্ক’ নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম শুরু হলেও নাসিক ও কুসিক নির্বাচনে ‘শান্তিপূর্ণ’ ভোট উপহার দেয়া ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে বছরের শেষ চমক। দ্বিতীয় মেয়াদে বর্তমান সরকারের প্রথম বছরটি ছিল মোটামুটি শান্তিপূর্ণ। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধের বিচারের গতি অব্যাহত রাখায় নতুন সরকার গঠনের প্রথম বছরেই প্রশংসিত হন শেখ হাসিনা। নির্বাচন প্রশ্নে শুরুতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে সরকারকে কিছুটা বেগ পেতে হলেও প্রথম বছরেই সরকার তা কাটিয়ে ওঠে। বিশেষ করে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) চেয়ারপার্সন পদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) নির্বাচনে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতি হওয়ার বিষয়টি সরকারের জন্য ইতিবাচক ছিল। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত মামলার রায়কে সরকারের প্রথম বছরের অন্যতম সাফল্য হিসেবে ধরা হয়। প্রথম বছরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের মধ্যে ছিল সাফল্যের মধ্যে ছিল প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের ঘরে ধরে রাখা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান স্থির রাখা সম্ভব হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে শুরু করলেও সার্বিকভাবে দ্বিতীয় বছরটি ছিল সরকারের সাফল্য ও অর্জনের। বছর শুরুর রাজনৈতিক উত্তেজনা, সরকারকে অস্থিতিশীল করতে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র কোন কিছুই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলার পথে বাধা হতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় ভূমিকায় নানা বাধা উপেক্ষা করে সরকার বেশকিছু লক্ষ্য অর্জনে সাফল্য পায়। সরকারের একবছর পূর্ণ হওয়াকে কেন্দ্র করে টানা ৯২ দিন হরতাল-অবরোধ চালায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট। ২০-দলীয় জোটের এ কর্মসূচী নাশকতা ও সহিংসতায় রূপ নেয়। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট নাশকতা নিয়ে সরকার কঠিন চাপের মধ্যে পড়ে। নতুন নির্বাচনের দাবিতে বিরোধী দলের এ আন্দোলন কঠোরভাবেই দমন করে সরকার। সকল বাধা-বিপত্তি হটিয়ে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় বছরের অন্যতম সাফল্য হল দেশী-বিদেশী চাপ উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধের বিচার অব্যাহত রাখা। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা দৃঢ়তার ফলে নানা চড়াই-উতরাই পার করে তিন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, জামায়াত নেতা আলী আহসান মুজাহিদ ও কামারুজ্জামানের মতো যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করে সরকার। দ্বিতীয় বছরে বর্তমান সরকারের বড় সাফল্য হলো ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত চুক্তি। ৬৮ বছরের বঞ্চনা আর ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার স্থলসীমান্তু চুক্তি বাস্তবে রূপ পায় ৭ মে ভারতের পার্লামেন্টে বিল পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে। সীমান্ত চুক্তির রূপরেখা অনুযায়ী ৩১ জুলাই মধ্য রাতে ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১ এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১ ছিটমহল বিনিময় করা হয়। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের সীমান্তে ‘ছিটমহল’ শব্দটির আনুষ্ঠানিক বিলুপ্তি ঘটে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের বড় ধরনের কূটনৈতিক সফলতাও এটি। এ সরকারের আরেকটি বড় সাফল্য হলো পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে তা দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। বর্তমানে নিজস্ব অর্থায়নে সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন আর অধরা কোন বিষয় নয়, বরং বাস্তব। এটি নিয়ে নানা মহল থেকে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক সহায়তা প্রত্যাহার করলেও দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ চালিয়ে যাওয়ার সাফল্য দেখিয়েছে সরকার। তাছাড়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রেরও যাত্রা শুরু হয় এ বছর। সরকারের দ্বিতীয় বছরেও অব্যাহতভাবে বাংলাদেশ ছয়-সাড়ে ছয় শতাংশ প্রবৃদ্ধি রেকর্ড করে। ধারাবাহিক এ প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ ২০১৫ সালে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকারের সফলতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার পান। এছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তিতে অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার (আইটিইউ) ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ পান প্রধানমন্ত্রী। এ দুটি পুরস্কারকে সরকারের সাফল্যের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ২০১৬ সালে জঙ্গীবাদ কঠোরভাবে দমন করে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে বাংলাদেশ। ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গী হামলা চালানো হয়। সেখানে দেশী-বিদেশী নাগরিকসহ অর্ধশত নারী-পুরুষকে জিম্মি করে জঙ্গীরা। এ হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও বিদেশী নাগরিকসহ ২২ ব্যক্তি নিহত হন। এ হামলায় দেশী-বিদেশী চাপ বাড়তে থাকে আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর। এছাড়া ঈদুল ফিতরের দিন (৭ জুলাই) সকালে শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠের অদূরেই জঙ্গীরা হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক জঙ্গী ও এক সাধারণ নাগরিক নিহত হন। জঙ্গীবাদবিরোধী সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন করে সোচ্চার থাকে আওয়ামী লীগ। রাজধানীর গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত মানববন্ধন গড়ে তুলে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। পরে পুলিশের নবনির্মিত কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটি) ধারাবাহিক সাফল্যে জঙ্গীবাদ এখন নিয়ন্ত্রণে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট ঘোষণা করা হয় ১৯৭২-৭৩ সালে। ওই অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে আয়কর, শুল্ক ও মূসক (ভ্যাট) খাতে ৯ হাজার ৫০৯ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৯ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। এ আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৮৮ কোটি টাকা বা প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। গত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের মূল বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় এক লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। পরে তা কমিয়ে এক লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। অর্থবছর শেষে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে রফতানি আয় ছিল মাত্র ৩৪ কোটি ৮৩ লাখ ইউএস ডলার। চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নবেম্বর) রফতানি খাতে আয় হয়েছে ১ হাজার ৩৬৯ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার ইউএস ডলার। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। আগের বছরের তুলনায় রফতানি আয় বাড়লেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে রফতানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল তা অর্জিত হয়নি। বর্তমানে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৪২৮ কোটি ৭০ লাখ ইউএস ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে প্রবাসীরা দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ৫২০ কোটি ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ১ কোটি প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রফতানি শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। সে সময় মাত্র ৬ হাজার ৮৭ শ্রমিক বিদেশে গমন করে। রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩৫ কোটি টাকা। ওই সময় মূলত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, লিবিয়ায় জনশক্তি রফতানি হয়। ১৯৭৭ সালে ১৫ হাজার ৭২৫ জন শ্রমিক প্রবাসে গমন করে এবং তাদের পাঠানো রেমিটেন্স ছিল ১২৫ কোটি টাকা। ১৯৭২ সালে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৭০ ভাগ। চার দশকের ব্যবধানে তা কমে ১৮ দশমিক পাঁচ শতাংশে নেমে এসেছে। এ সময়ে চরম দারিদ্র্যের হার ৫০ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে।
×