ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সব্যসাচী দাশ

আগামীর নায়িকা ॥ ফারিন খান

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২০ এপ্রিল ২০১৭

আগামীর নায়িকা ॥ ফারিন খান

বলাই যায় ভাগ্য তার অতিশয় সুপ্রসন্ন! মাত্র এক বছরের ব্যবধানে তিনি এখন সেলিব্রেটি। বিনোদন দুনিয়ায় নাম লেখাবেন তা মোটামুটি পূর্ব নির্ধারিত ছিল। সুন্দর মুখশ্রী। মিষ্টি কণ্ঠ। স্বাভাবিক উচ্চতা তাঁর সুন্দৌর্যকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে। হুমায়ারা ফারিন খান। আমাদের চলচ্চিত্র দুনিয়ায় নতুন নায়িকা। তার নায়িকা হওয়ার গল্প খুব দীর্ঘ নয়। স্বল্প সময়ে কিভাবে এত বড় দুনিয়ায় নিজেকে নিয়ে এলেন এমন গল্প শুনতে দ্বারস্থ হয়েছিলাম নায়িকা ফারিনের কাছে। ফারিন শোনালেন তার বর্তমান নায়িকা জীবন থেকে ব্যক্তিগত জীবনের গল্প। সম্প্রতি এই নবাগতার সঙ্গে আনন্দ কণ্ঠের দীর্ঘ কথা হয়। আলাপ চারিতায় উঠে আসে তার ভাল লাগা, মন্দ লাগা আগামী দিনের ইচ্ছা এমন সব বিষয়। জাজ মাল্টি মিডিয়ার প্রযোজনায় গত ১৪ এপিল ১ বৈশাখ মুক্তি পেয়েছে আপনার অভিনীত প্রথম সিনেমা ধ্যাৎতেরিকি। কিভাবে এই সিনেমার নায়িকা হলেন? ফারিনের উত্তর, আমি ভীষণ লাকি। গেল বছর- এই পহেলা বৈশাখেই আমি প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই, র‌্যাম্পের জন্য। আর এ বছর পহেলা বৈশাখে আমার অভিনীত সিনেমা দেশব্যাপী মহাসমারহে চলছে। এত অল্প সময়ে ক্যামেরার ফোকাস দখল করব এ আমি ভাবিনি। এদিক থেকে আমি লাকি। কিভাবে সম্ভব হলো? ফারিন বলেন, আমার র‌্যাম্প শো এবং ফেসবুকের ছবি দেখে আরিয়ান ভাই (উনি এক জন কোরিয়গ্রাফার) প্রথম প্রস্তাব করেন, আমাকে নিয়ে তিনি একটা শো করবেন। আমি তার সঙ্গে একমত হই। শুরুর পরের ধাপটা আমার জন্য আর একটু ইতিবাচক হয়। এভাবে চলছিল হঠাৎ একদিন ফেসবুকে আমার ছবি দেখে জাজ মাল্টি মিডিয়ার পরিচালক আবদুল আজিজ স্যার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রথমে তো বিশ্বাসাই হচ্ছিল না, এটা কিভাবে সম্ভব! আজিজ স্যার আমাকে জানালেন আমি দেশের বাইরে আছি একদিনের জন্য দেশে আসব। তার অফিসের একটা নম্বর আমাকে দিলেন, বললেন এই নম্বরে যোগাযোগ করতে। জাজের অফিস থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলো। পুরো বিষয়টা আমার ভেতর একটা ভ্রমের কাজ করছিল। কিভাবে যে এই স্বপ্নটা বিশ্বাস করি বুঝে উঠতে পারছিলাম না। অবশেষে সত্য মিথ্যার দোলাচলে অফিসে গেলাম কথা বললাম। আমাকে পরে জানানো হবে, ওই আশায় অপেক্ষায় রইলাম। কিছুদিন পর আমার ফোনে ফোন আসে। একটা মিষ্টি রোমান্টিক গল্পের নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব! আমার তো বাঁধ ভাঙ্গা বিস্ময়! শামীম আহমেদ রনির পরিচালায় ধ্যাৎতেরিকি সিনেমার দু®টু ও মিষ্টি চরিত্র মাধুরী করলেন। চরিত্র এবং কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? ফারিন, খুব্বিই সুইট! মাধুরীর মতো একটা চরিত্র করতে পেরে আমি ভীষণ হ্যাপী। সিনেমা মুক্তির পর থেকে এ পর্যন্ত আমি ছয় বার হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছি। হলে অভিজ্ঞতা ছিল যখনই দর্শক পর্দায় আমাকে এবং রোশানকে দেখত তখন হাততালি, খুব জোরে সিটি বাজাত। ভীষণভাবে উপভোগ করেছি। কাজের অভিজ্ঞতা একটু কষ্টের ছিল কারণ শুটিংয়ের সময় আমি তিন মাস হাসপাতালে ছিলাম। অনেক সময় হাসপাতাল থেকে কাজ করে আবার হাসপাতালে ফেরত গিয়েছি। এছাড়া প্রযোজক পরিচালক এবং অন্যান্য সহশিল্পী ফারিয়া আপা (নুসরাত ফারিয়া) আরিফিন শুভ ভাইয়া এবং আমার সহশিল্পী রোশনের সহযোগিতা ছিল সত্যই শ্রদ্ধা করার মতো। প্রথম সিনেমা নিয়ে কেমন আশাবাদী? ফারিনের উত্তর, ভীষণ দুর্দান্ত! দর্শকরা খুবই উপভোগ করছে। ব্যক্তিগত খোঁজ খবর। আমি এখন স্টেইট ইউনির্ভাসিটি অব বাংলাদেশ-এ ইংরেজী সাহিত্যে অনার্স পড়ছি। আমার বাবা বেঁচে নেই। খুব ছোট বেলায় আমাদের ছেড়ে চলে যান। আমার মায়ের আমি একমাত্র সন্তান। আমার ভেতর-বাহির সব দুনিয়াতে আমার মা-ই প্রধান। যার সঙ্গে সময় কাটাতে আমার সবসময় ভাল লাগে। আমার জন্ম বড় হওয়া সাভারে। ব্যক্তিগত ভাল লাগা মন্দ লাগা? আমি ভীষণ আইসক্রিম খেতে পছন্দ দিনে ১০-১২টা খেয়ে ফেলি। এখন বেশি ভাল লাগে জাজের অফিসে আড্ডা দিতে। নতুন কোন সিনেমার খবর? হ্যাঁ আগামী ২৬-২৭ তারিখ কলকাতায় যাব নতুন ছবির জন্য। সিনেমের নাম কিংবা চরিত্র? ফারিন হেসে বললেন, এখন এসব কিছুই বলা যাবে না আর একটু অপেক্ষা করতে হবে। প্রথম সিনেমা অভিজ্ঞতায় আমাদের ইন্ডাস্ট্রি সমন্ধে আপনার ধারণা। খুব্বিই পজেটিভ! এতটাই যে এখানে আসার পূর্বে আমার ধারণাই ছিল না। প্রেম করছেন? হেসে একদোমই না। প্রেমের বিষয়টা আমার মধ্যে আসে না। এক রকম বলতে পারেন প্রেমে আমার এলার্জি আছে। আগামীর স্বপ্ন? খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করব। নিজের দায়িত্ব ঠিক ঠিক পালন করব। ফারিন আমাদের চলচ্চিত্রের আগামী দিনের বড় সেলিব্রেটি হবেন, এমনটা তার কথাবার্তায় এমনই আভাস পাওয়া গেল।
×