ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিয়েতে অসম্মতি

এক রশিতেই প্রেমিক যুগলের আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২০ এপ্রিল ২০১৭

এক রশিতেই প্রেমিক যুগলের আত্মহত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১৯ এপ্রিল ॥ প্রেমে ব্যর্থতার গ্লানি সইতে না পেরে বুধবার মান্দায় একই রশির দুই প্রান্তে ফাঁসিতে ঝুলে প্রেমিক-প্রেমিকা আত্মহত্যা করেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে প্রসাদপুর ইউনিয়নের চকরাজাপুর গ্রামের গুদাবিলের পূর্ব ধারে আব্দুস সাত্তারের আমবাগানে। এদিন সকাল ৮টার দিকে ওই বাগানের আমগাছ থেকে তাদের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রেমিক যুগল লাইলী-মজনু হলোÑ ওই গ্রামের ওয়াজেদ আলী ফকিরের ছেলে গোলাম রাব্বানী (২০) ও জাংগলপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের মেয়ে তাসলিমা আক্তার (১৭)। পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, প্রেমিক গোলাম রাব্বানী সাতবাড়িয়া বিএম এ্যান্ড টেকনিক্যাল কলেজ থেকে চলতি এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিল। অন্যদিকে তাসলিমা আক্তার এনায়েতপুর আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথে তাদের পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি মেয়ের পক্ষ থেকে ছেলের পরিবারকে জানানো হয়। কিন্তু মেয়ের বাবার আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল না হওয়ায় প্রেমিক গোলাম রাব্বানীর পরিবার বিয়েতে অসম্মতি জানায়। এ নিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অপরদিকে তাসলিমা আক্তারের অমতে পরিবারের পক্ষ থেকে বুধবার অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নেয়া হয়। উভয় পরিবারের এ আচরণ প্রেমিক-প্রেমিকা মেনে নিতে পারেনি। তাদের বিয়ে হবে না বলে নিশ্চিত হয়ে তারা আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। মঙ্গলবার রাতের কোন এক সময় একত্রিত হয়ে একসঙ্গে আত্মহত্যা করে। মঙ্গলবার তসলিমা তার মা’র সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরিকল্পনামতে রাতের কোন এক সময় সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে মিলিত হয়ে বাড়ির পাশে গুদাবিলা বিলের মাঝখানে আমগাছের ডালে একই রশির দু’মাথায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। বুধবার ভোরে মা খোদেজা বেগম মেয়েকে খোঁজাখুঁজি করেন। পরে বাড়ির বাইরে এসে দেখেন বিলের মাঝে আমগাছে দু’জন ঝুলে আছে। গলাচিপায় দুই মাসে ২০ জন স্টাফ রিপোর্টার গলাচিপা থেকে জানান, পটুয়াখালীর গলাচিপায় আত্মহত্যার ঘটনা বেড়ে গেছে। পাঁচ দিনে পাঁচ নারী-পুরুষ আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া এর বাইরে দুই মাসে ১৫ জন আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যাকারীদের মধ্যে ৭০ বছরের বৃদ্ধ থেকে ১৫ বছরের কিশোর রয়েছে। আত্মহত্যার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার জন্য চিকিৎসক ও পুলিশ প্রাথমিকভাবে হতাশা ও সামাজিক অস্থিরতাকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শনিবার সকালে বকুলবাড়িয়া গ্রামে এক ছেলের মা সাথী বেগম (২০) আত্মহত্যা করে। একই দিন বিকেলে কলাগাছিয়া ইউনিয়নের খারিজ্জমা গ্রামের ফারজানা বেগম আত্মহত্যার চেষ্টা করে। রবিবার রাতে গলাচিপা শহরের হালিম আকন (৭০) আত্মহত্যা করে। পরের দিন সোমবার সকালে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের দক্ষিণ চরআগস্তি গ্রামের গৃহবধূ ডালিয়া বেগম (৩৫) আত্মহত্যা করে। একই দিন বিকেলে গলাচিপা শহরের আনন্দপাড়ায় সাইফুল ইসলাম (১৫) নামের কিশোর আত্মহত্যা করে। বুধবার ভোরে কুমারখালী গ্রামের কাশেম খাঁ নামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ আত্মহত্যা করে। পুলিশ এ আত্মহত্যার কারণ জানাতে পারেনি। ওই দিনই দুপুরে গোলখালী গ্রামের সুখী বেগম ও চরবিশ্বাস গ্রামের মহিবুল্লাহ আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাদের গলাচিপা হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকরা দুজনকে পটুয়াখালী হাসপাতালে রেফার করেন।
×