ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে বোরো ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ ॥ মরে যাচ্ছে ধানগাছ

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২০ এপ্রিল ২০১৭

কুড়িগ্রামে বোরো ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগ ॥ মরে যাচ্ছে ধানগাছ

রাজুমোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামের সর্বত্রই বোরো ধান ক্ষেতে ছত্রাক রোগ ছড়িয়ে পরেছে। জেলার বিভিন্ন ধান ক্ষেতের শীষ বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক হারে এ রোগ দেখা দিয়েছে। এতে ধান গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। কৃষকরা বিভিন্ন কীটনাশক প্রযোগ করেও কোন লাভ হচ্ছে না। দিশেহারা হয়ে পড়ছে তারা। কৃষকরা বলছে আর দুই সপ্তাহ পরে তারা ধান কাটামারাই শুরু করবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ক্ষেতের যে অবস্থা তাতে তাদের ফলন বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ রোগ ছড়িয়ে পড়ায় কুড়িগ্রাম সদর ও নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ‘ধানের ব্লাস্ট রোগ দমনে কৃষকদের করণীয়’ শীর্ষক লিফলেট প্রচার করা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম সদরের বেলগাছা ইউনিয়নের আতারাম, ধনঞ্জয়, বিশ্বেসর, কাঁঠলবাড়ী, গোবরধন, শিবরাম, ম-লপাড়া, নেপারদরগা, পাঁচগাছি সিতাইঝার, উত্তরণওয়াবস, ঘোগাদহ, সুবনদহ, রাজহাট উপজেলার বাজেমুজরাই, চাকিরপাশা, ঢোকাকুড়া, সেকাডোবা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ব্যাপক হারে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ক্ষেত। প্রতি ক্ষেতের শীষ আসা ধানক্ষেত শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। বেলগাছার কৃষক বাবলু রায় ও সৈয়দ আলী এবার তিন একর জমির ধান আবাদ করেছে। তাদের প্রায় অর্ধেক ক্ষেতেই এই রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তারা জানান, মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ক্ষেতের ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। বাজেমুজরাই গ্রামের ইয়াকুব আলী, অনাথ চন্দ্র জানান তারা প্রায় দুই একর জমি ধান আবাদ করেছে। সব ক্ষেত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে নাটাবো, টুম্পাসহ বিভিন্ন ছত্রাক নাশক প্রয়োগ করেও কোন লাভ হয়নি। তারা তাদের ক্ষেতে ১০ মণ ধানও পাবে না। নাগেশ্বরী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ মাসুদুর রহমান জানান, নেক ব্লাস্ট ধানের একটি ছত্রাকজনিত রোগ। চারা অবস্থা থেকে ধান পাকার পূর্ব পর্যন্ত যে কোন সময় এ রোগ দেখা দিতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত ধান ৮০ ভাগ পর্যন্ত ক্ষতি হয়। এ রোগের জীবাণু বাতাস ও পোকামাকড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। ব্লাস্ট রোগের লক্ষণ হচ্ছে আক্রান্ত ধানের পাতা, গিট, গোড়া বা শাখা-প্রশাখা এবং দানায় আক্রমনণ করে। আক্রান্ত পাতার রং ধূসর ও ভিজা দাগ দেখা দেয়। আস্তে আস্তে সাদা ও বাদামী রং ধারণ করে। ধান পুষ্ট হওয়ার আগে রোগের আক্রমণের ফলে শীষের সব ধান চিটা হয় ও অনেক গাছ মারা যায়। ধানের শীষ বের হওয়ার সময় এবং শীষ বের হওয়ার পরে জমিতে ছত্রাক নাশক, ট্রপার, নাটিভো, ফিলিয়া, এমিস্টার টপ স্প্রে জাতীয় তরল কীটনাশক ব্যবহার করলে ধান ক্ষেত রক্ষা পাবে। কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মকবুল হোসেন জানান, জেলার কিছু জায়গায় অল্প পরিসরে নেক ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে আছে। এ রোগ প্রতিরোধে কৃষকদের ছত্রাক নাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
×