ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংবাদ সম্মেলনে ইন্স্যুরেন্স এ্যাসোসিয়েশনের দাবি

করের কারণে বীমা শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২০ এপ্রিল ২০১৭

করের কারণে বীমা শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বীমা খাতের বিভিন্ন ধাপে অসাঞ্জস্যপূর্ণ কর আরোপ করা রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান বিষয়গুলো বুঝলেও এসব করের হার সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে কোন প্রকার উদ্যোগ নিচ্ছে না। আর এসব করের কারণে বীমা শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এ্য্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। গতকাল বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিআইএ’র নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এক বাজেট বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিআইএ’র সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, জীবন বীমার পলিসির ডিপোজিট যারা করেন তাদের মুনাফার ওপর ৫ শতাংশ হারে গেন ট্যাক্স নেয়া হয়। এটা যদি দূর করা না হয় তাহলে গ্রাহকরা বীমা করা থেকে দূরে সরে যাবে। বর্তমানে সাধারণ বীমা ও জীবন বীমা কোম্পানির কর্পোরেট ট্যাক্স ৪০ শতাংশ, যা অতি উচ্চ। বীমা এজেন্টের কমিশনের ওপর ১৫ শতাংশ হারে মূল্য সংযোজন করা আরোপ করা রয়েছে, যা কোনভাবেই উচিত নয়। এর বাইরেও আবার এজেন্টদের প্রাপ্ত কমিশনের ওপর ৫ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন করা হয়। এছাড়া বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা ব্যয়কে আইন ভায়োলেট করে আয় হিসেবে দেখিয়ে তার ওপর আয়কর কর্তন করা হয়। এটা কোনভাবেই হতে পারে না। এটা সুস্পষ্ট আইনের লঙ্ঘন। আর এসব বিষয় অনেক আগে থেকেই আমরা দূর করার দাবি জানাচ্ছি। অর্থমন্ত্রী নীতিগতভাবে মনে করেন এসব দূর করা উচিত। এনবিআর চেয়ারম্যান নিজেও মনে করেন এ খাতের উন্নয়নের জন্য এসব দূর করা উচিত। অর্থসচিব তো এসব দেখার জন্য একটি কমিটিই করে দিয়েছে। কিন্তু বড় বাজেটে তো বেশি টাকার দরকার। আর এখান থেকে সহজে এসব নেয়া যায় বলে এগুলো দূর করা হচ্ছে না। যা কিনা বীমা শিল্পের উন্নয়নকেই বাধাগ্রস্ত করছে। শিল্পটাকে পেছনের দিকে টেনে ধরে রেখেছে। তাই আসন্ন বাজেটে ৫ শতাংশ গেন ট্যাক্স প্রত্যাহার, কর্পোরেট ট্যাক্স ৪০ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা, এজেন্ট কমিশনের বিপরীতে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর ও ৫ শতাংশ উৎসে কর নেয়া বন্ধ এবং ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের ওপর ইনকামট্যাক্স দূর করার দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি। শেখ কবির হোসেন বলেন, বারে বারে আমরা এসব দাবি উত্থাপন করেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কোন দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। তাই আবারও সরকারের কাছে আহব্বান জানাব, আগামী বাজেটে আমাদের দাবি যাতে বিবেচনায় নেয়া হয়। যে দেশের বীমা খাত যতটা শক্তিশালী সেদেশের অর্থনীতিও ততটা শক্তিশালী। কিন্তু দেশের প্রেক্ষাপট পুরোটা ভিন্ন। যেখানে উন্নত বিশ্বে অর্থনীতিতে বীমার অবদান ৪০ শতাংশ পর্যন্ত অথচ বাংলাদেশে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান ১ শতাংশ। বীমা খাতের ওপর আস্থাহীনতা এবং পিছিয়ে থাকার কারণ কি জানতে চাইলে শেখ কবির হোসেন বলেন, সেক্টরটি পিছিয়ে থাকার জন্য মূলত সরকার এবং আমরা নিজেরা দায়ী। আর আস্থাহীনতার জন্য কিছু কিছু অসাধু ব্যক্তির পাশাপাশি বীামার ভাল কাজের প্রচার-প্রসারের পিছিয়ে থাকাকে দায়ী করলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহসানুল ইসলাম টিটু, নিটল ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান একেএম মনিরুল হক, মেঘনা লাইফ ও কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন পাভেলসহ বিআইএ নেতারা।
×