ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধে কোম্পানি আইন সংস্কার করা হবে ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২০ এপ্রিল ২০১৭

ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধে কোম্পানি আইন সংস্কার করা হবে ॥ তোফায়েল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধে কোম্পানি আইন সংস্কার হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, সহজে যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ করা যায় সে বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও সরকারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ বাধাগ্রস্ত হয় বলে মত দিয়েছেন ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তারা। বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ব্যবসায়ী ও আমলারা এ মত দেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ব্যবসা শুরুর সমস্যা সমাধানে সব মন্ত্রণালয়ে টাস্ক ফোর্স গঠনের পরামর্শ দেয়া হয় বৈঠকে। ব্যবসায়িক পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাংক প্রণীত ডুয়িং বিজনেস প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৬তম। আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই র‌্যাঙ্ককিং ১০০-তে নামিয়ে আনার টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। বৈঠকে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশে ডুয়িং বিজনেসের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে তিনটি সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। সমস্যাগুলো হলোÑ দীর্ঘ সময়, পদ্ধতিগত এবং খরচ। বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, জনগণ এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষায় যা করা প্রয়োজন তা করবে বর্তমান সরকার। ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করতে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সময় ও উৎপাদন ব্যয় কমানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিকভাবে পদক্ষেপ নেবে সরকার। এতে দেশীয় ব্যবসায় বড় ধরনের সফলতা আসবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সমস্যায় আছেÑএতে কোন সন্দেহ নেই। তারা গ্রিন কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন। এতে উৎপাদন ব্যয় অনেক বাড়লেও দেশের বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়নি। ভারতে এন্টি ডাম্পিং সিদ্ধান্তের উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশই নিজেদের শিল্পরক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। ভারতও তাই করেছে। আমরাও নিজেদের শিল্পরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। মন্ত্রী বলেন, দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা করে বাংলাদেশ উদার বিনিয়োগ নীতি গ্রহণ করেছে। শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। সরকার এবং ব্যবসায়ী একে অপরের পরিপূরক, সবাইকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, উন্নত অর্থনীতির জন্য প্রয়োজন দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ। আর বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন বিনিয়োগবান্ধব নীতি ও পরিবেশ। দেশে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারী অফিসগুলোকে দ্রুত সেবা প্রদানের জন্য অটোমেশন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এর সুফল এখন ব্যবসায়ীরা ভোগ করছে। গত অর্থবছর আমাদের রফতানি আয় ছিল ৩ হাজার ৪২৬ কোটি মার্কিন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এ বছর রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার। এক দশক ধরে আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, বিগত বছর তা হয়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ, এ বছর হবে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শুভাশীষ বসু, এনবিআরের চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মোঃ ইউনুসুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম গোলাম ফারুক, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট আবদুল মাতলুব আহমাদ, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা প্রমুখ।
×