ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সিল্ক লাইনের বাস সেবার উদ্বোধনীতে সড়কমন্ত্রী

রাজধানীতে চার হাজার বাস নামানোর সিদ্ধান্ত আগামী মাসে

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২০ এপ্রিল ২০১৭

রাজধানীতে চার হাজার বাস নামানোর সিদ্ধান্ত আগামী মাসে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর গণপরিবহন সঙ্কট সমাধানে আবারও আশার কথা শোনালেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বললেন, ঢাকার পরিবহন সঙ্কট লাঘবে বিদেশ থেকে চার হাজার বাস আনার বিষয়ে আগামী মে মাসে সিদ্ধান্ত হবে। যদিও এমন আশার কথা তিনি দু’বছর ধরেই শুনিয়ে আসছেন। কিন্তু সমাধানের কোন পথ তৈরি হচ্ছে না। বাস নামানোর প্রক্রিয়া ঝুলে আছে বছরের পর বছর। বুধবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে সিল্কলাইন ট্র্যাভেলসের বাস সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ঢাকার গণপরিবহন সঙ্কটে আরও বাস দরকার। আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পরিবহন নেতাদের নিয়ে আমার সঙ্গে বসবেন। আরও চার হাজার গাড়ি বিদেশ থেকে আনার একটা চিন্তাভাবনা মেয়র আনিসুল হক সাহেব করছেন। সে লক্ষেই বাস মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। ঢাকার গণপরিবহনে ‘সিটিং সার্ভিস’ বন্ধের নির্দেশনা না মানায় কতগুলো পরিবহনের রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রথমত নোটিস তো দিতে হবে, বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেছেন তারা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। বিআরটিএ এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করছে বলেও জানান মন্ত্রী। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ১৫ এপ্রিল থেকে সিটিং সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দেয়। এরপর বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) জানায়, ঢাকায় সিটিং সার্ভিস বন্ধে ১৬ এপ্রিল থেকে অভিযান চালানো হবে। কেউ গাড়ি না নামিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করতে চাইলে রুট পারমিটও বাতিল করা হবে। গত রবিবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন শুরুর পর গত চারদিন ধরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বচসা-মারামারির ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন স্থানে। অনেক মালিক রাস্তায় গাড়ি না ছাড়ায় যাত্রীরা ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন। এ প্রেক্ষাপটে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ইতোমধ্যে বিষয়টি পর্যালোচনার নির্দেশনা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী বুধবার বিকেলে পরিবহন মালিকদের নিয়ে বৈঠকে বসবে বিআরটিএ। কাদের বলেন, ওই বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর সবাই যদি মনে করেন যে সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত ‘জনস্বার্থে পুনর্বিবেচনা করা দরকার, বা আরও সংযোজন-সংশোধন করা প্রয়োজন, তাহলে সবাই মিলেই তা ঠিক করা হবে। আমরা যে কর্তৃপক্ষ আছি, আমাদের সবার লক্ষ্যে কিন্তু সেবা করা। জনস্বার্থ যদি কোথাও বেগ পায় আমার মনে হয় এমন কোন সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারি না যে সিদ্ধান্তের কারণে জনগণ ভোগান্তির কবলে পড়ে। সিটিং সার্ভিস বন্ধের বিষয়ে সরকার নমনীয় হচ্ছে কিনাÑ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে বিকেলে বিআরটিএ বলবে, সেখানে যে সিদ্ধান্ত হয়, সেটাই। আমি এ মুহূর্তে আগাম মন্তব্য করব না। উবারের ট্যাক্সি সেবা নিয়ে আরেক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘উবার লেটেস্ট টেকনোলজি, আগেই বলেছি। এর বিরোধিতা আমি করি না। নতুন টেকনোলজিকে স্বাগত জানাতে হবে। এটাকে সিস্টেমের আওতায় আনতে একটি কমিটি করা হয়েছে এবং আলাপ আলোচনা চলছে। এটি চলুক, বন্ধ করে না দিয়ে একটি সিস্টেমে আনতে হবে। সিল্কলাইন ট্র্যাভেলসের উদ্বোধন ঘোষণা করে মন্ত্রী বলেন, কোরিয়া থেকে উন্নতমানের গাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে। গণপরিবহনের সঙ্কট লাঘবে এর মালিক দিদাওল আলমকে বলার পর তিনি নয়টি গাড়ি রাস্তায় নামিয়েছেন। গাড়িতে সংবাদপত্র, কফি, স্ন্যাকসের ব্যবস্থা থাকবে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ ভাগ ছাড় থাকবে। সূচনার এসব সেবা যেন অব্যাহত থাকেÑ তা মনে করিয়ে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের শুরুটা হয় ঢাকঢোল পিটিয়ে, শেষটা হয় ঘ্যানঘানানি দিয়ে। যা যা প্রতিশ্রুতি আছে তা যেন থাকে। মানুষ সেবা পেলে পরিবহনেরও ব্যবসা ভাল হবে।
×