ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

তিস্তায় বাঁধ নির্মাণে চলছে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৯ এপ্রিল ২০১৭

তিস্তায় বাঁধ নির্মাণে চলছে অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ তিস্তা নদীর চর ও ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে লুটপাট চলছে। মাঠ পর্যায়ের অনিয়ম দুর্নীতি, রাজনৈতিক বিবেচনায় কাজ দেয়া ও তদারকি না থাকায় মূলত এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার বেশ কয়েকটি চরের মানুষ প্রভাবশালীদের ভয়ে এসব কাজের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে পারে না। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে তিস্তা নদীর ভারতীয় সীমান্ত বরাবর চার কোটি ৩১ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩৬০ মিটার দীর্ঘ ওই বাঁধ নির্মাণে যে অনিয়ম করা হচ্ছে তাতে এবারের বর্ষা ও বন্যার সময় বাঁধ টিকবে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার সরেজমিনে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উজান হতে তিস্তা নদী বাংলাদেশে মূল প্রবেশদ্বার ছিল নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্টে। কিন্তু গত ছয় বছর ধরে তিস্তা নদীর পানি বিশেষ করে বর্ষা বা বন্যার সময় নীলফামারীর চরখড়িবাড়ি সীমান্তে নতুন একটি চ্যানেল সৃষ্টি করে মূল নদীটি নতুন পথ দিয়েই বইতে থাকে। ফলে নীলফামারীর টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চারটি ওয়ার্ড, লালমনিরহাট জেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ডের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার পরিবারের ২৫ হাজার মানুষ চরমভাবে ক্ষতিক্ষস্ত হয়ে আসছে। বন্যার সময় তাদের আবাদী জমি ফসল, ঘরবাড়ি, মাছের পুকুর, হাটবাজার, স্কুল-কলেজ তিস্তা ভাসিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে দুই জেলার ওই স্থানের চরবাসী মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান করে। সেই সঙ্গে তাদের সেøাগান ছিল ত্রাণ চাই না বাঁধ চাই। এখন সেই বাঁধ নির্মাণে যদি অনিয়ম করা হয় তাহলে আমরা যাব কই। সরেজমিনে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণাধীন বাঁধের ২০ মিটারের কম দূরত্বে ভারি বোমা মেশিন বসিয়ে নদীতে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করছে। ওই বালুই ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁধ নির্মাণ কাজে। অথচ নিয়মানুযায়ী নির্মাণাধীন বাঁধের ৫০ মিটারের মধ্যে বালু বা মাটি তোলা অবৈধ বলে জানান পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান। বাউফলে সড়ক সংস্কার নিজস্ব সংবাদদাতা বাউফল থেকে জানান, বাউফলে নিয়ম ভেঙ্গে রাতের আঁধারে চলছে কালাইয়া-নওমালা ও লোহালিয়া সড়কের নির্মাণ কাজ। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। জানা গেছে, কয়েকদিন আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতায় প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে এই সড়কের কার্পেটিং কাজ শুরু হয়। পটুয়াখালীর মহিউদ্দিন নামের এক ঠিকাদার কাজটি করছেন। সিডিউল অনুযায়ী পুরনো সড়কের ডাস্ট তুলে, এরপর ১৫০ ডিগ্রী তাপমাত্রার গরম দেশী পিএসপি/পিবিসি বিটুমিন কেরাসিনের সঙ্গে মিলিয়ে নির্মাণের ২৪ ঘণ্টা আগে সড়কটি প্রাইমকোট করে ভাঙ্গা পাথর দিয়ে ২৭ এমএম উঁচু কার্পেটিং করতে হবে। কিন্তু ঠিকাদার তা না করে কম মূল্যের ইরানী বিটুমিন দিয়ে ক্রাসিন ছাড়াই কোন রকম প্রাইমকোট করে মরা ও বোল্ডার পাথর দিয়ে কার্পেটিং কাজ করছেন। ঠিকমতো রোলার করা হচ্ছে না। ফলে সড়কটি সমতল হচ্ছে না। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিধি অনুযায়ী সড়কটির নির্মাণ কাজ চলাকালে একজন তদারকি কর্মকর্তা (এসও) ও একজন কার্যসহকারী (ওয়ার্ক এ্যাসিসটেন্ট) থাকার কথা। এলাকাবাসী জানান, তাদের উপস্থিতি ছাড়াই ঠিকাদারের লোকজন নিজেদের মতো করে কাজ করছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই সড়কের তদারকি কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) আলী ইবনে আব্বাসের যোগসাজশেই ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে যেনতেনভাবে সড়কটির নির্মাণ কাজ করছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে রবিবার রাত ৮টার দিকে সরেজমিন ওই সড়কের খেজুর বাড়িয়া কাঠেরপুল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক যেনতেনভাবে কাজ করছেন। রাতের আঁধারে কেন কাজ করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলে শ্রমিকরা বলেন, ঠিকাদারের নির্দেশ দ্রুত কাজ শেষ করতে হবে। তাই রাতদিন মিলিয়ে তারা কাজ করছেন। এ সময় কাজের তদারকি কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও কার্য সহকারীর দেখা মেলেনি। এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জহিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাতের আঁধারে কাজ করার প্রশ্নই আসে না। সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত কাজ হয়েছে। তখন পর্যন্ত ওয়ার্ক এ্যাসিসটেন্ট খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
×