ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এএফসি কাপ ফুটবলে আবাহনীর প্রতিপক্ষ আজ ব্যাঙ্গালুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৮ এপ্রিল ২০১৭

এএফসি কাপ ফুটবলে আবাহনীর প্রতিপক্ষ আজ ব্যাঙ্গালুরু

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এই যুগেও এমন হয়। একটা ক্লাবে দু-দুজন প্রভাবশালী এবং উর্ধতন কর্মকর্তা থাকার পরও সেই দলের অবস্থা হ-য-ব-র-ল। এমনটা যেন একেবারেই অবিশ্বাস্য। আর এই অবিশ্বাস্য কা-ই ঘটেছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের বেলায়। যে ক্লাবটিকে সাংগঠনিক দক্ষতার বিচারে দেশীয় ফুটবলের মানদ-ে শীর্ষ কাতারে ধরা হয়, সে ক্লাবটি দক্ষ সাংগঠনিক দক্ষতার কারণেই গত মৌসুমে দুটি শিরোপা (লীগ এবং ফেডারেশন কাপে, স্বাধীনতা কাপে রানার্সআপ) জিতেছিল; সেই ক্লাবটি কিনা এএফসি কাপের মতো আসরে খেলতে গিয়ে চরমভাবে সাংগঠনিক অদক্ষতার পরিচয় দেবে? ভাবাই যায় না। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘এএফসি কাপ’-এর এ্যাওয়ে ম্যাচে (‘ই’ গ্রুপ) আবাহনী মুখোমুখি হবে স্বাগতিক জেএসডব্লিউ ব্যাঙ্গালুরু এফসির। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে (একই দিনে একই সময়ে কলকাতায় মুখোমুখি হবে এই গ্রুপের অন্য দুটি দল মোহনবাগান এবং মাজিয়া)। এ পর্যন্ত নিজেদের দুটি ম্যাচেই হেরেছে আবাহনী। গত ১৪ মার্চ মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস এ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের কাছে ২-০ গোলে হারের পর আবাহনী কলকাতা গিয়ে ৪ এপ্রিল রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে মোহনবাগান এ্যাথলেটিক ক্লাবের কাছে হারে ৩-১ গোলে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ চ্যাম্পিয়নরা এই গ্রুপে আছে চার দলের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে। ২ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ শূন্য পয়েন্ট। পক্ষান্তরে ব্যাঙ্গালুরু এফসি আছে শীর্ষস্থানে। সমান ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট। নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ২-১ গোলে স্বদেশী ক্লাব মোহনবাগানকে হারিয়ে শুভসূচনা করে। দ্বিতীয় ম্যাচে ১-০ গোলে হারায় মালদ্বীপের মাজিয়াকে। এএফসি কাপের বর্তমান রানার্সআপ হচ্ছে ব্যাঙ্গালুরু এফসি। তাদের মাঠে তাদের হারানো আবাহনীর জন্য অনেক কঠিনই। এ উপলক্ষে সকালে রবিবার (সকাল সাড়ে ১০টায়) ভারতের উদ্দেশে রওনা হয় আবাহনী। কলকাতা হয়ে ওইদিন বিকেলে ব্যাঙ্গালুরু পৌঁছাতে গিয়ে ভজঘট পাকিয়ে ফেলে ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’রা। তবে কলকাতা থেকে বিমানে করে পুরো দল একসঙ্গে ব্যাঙ্গালুরুতে যেতে পারেনি। বেলা ৩টায় আবাহনীর ১০ ফুটবলার একটি বিমানে করে রওনা হন। এরপর দলের বাকিরা আরেকটি বিমানে চাপেন বিকেল সাড়ে ৫টায়। এমনটা হওয়াতে ঝামেলাও হয়েছে। কোচ পুরো দলকে একসঙ্গে পাননি। রবিবার বিকেলে এবং সোমবার সকালে দলকে কোন অনুশীলন করাতে পারেননি আবাহনীর ক্রোয়েশিয়ার কোচ দ্রাগো মামিচ। ঘটনার এখানেই শেষ নয়। আবাহনীর ঘানাইয়ান ডিফেন্ডার সামাদ ইউসুফ ভিসা জটিলতায় প্রথম দুই ম্যাচ খেলতে না পারলেও আজকের (তৃতীয়) ম্যাচে খেলতে পারবেন, তার ভিসা জটিলতা কেটে যাচ্ছেÑ এমনটাই শোনা গিয়েছিল। কিন্তু চোখ কপালে ওঠার মতো খবর হলো- দীর্ঘ এক মাস পরও (এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তখন বিকেল পৌনে পাঁচটায়ও ভিসা জটিলতা কাটেনি) সামাদের ভিসা-সমস্যার সমাধান হয়নি। অথচ দলে আছেন কাজী নাবিল আহমেদের মতো ডিরেক্টর ইনচার্জ, যিনি আবার একজন সংসদ সদস্যও এবং আছেন ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য-অন্যতম পরিচালক হারুনুর রশীদের মতো ক্ষমতাবান ব্যক্তি, যিনি আবার আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদকও বটে ...। তাদের মতো লোক থাকতে কিভাবে সামাদের ভিসা হয় না, সেটাই চরম বিস্ময়কর। আরও বিস্ময়কর হচ্ছে, ভিসার কারণে সামাদ দলের সঙ্গে ভারতে যেতে না পারলেও দলের সঙ্গে হারুন ঠিকই ভারতে গেছেন। ফুটবল অঙ্গনে এ নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে ভারত সফরে দলের ম্যানেজার হিসেবে সত্যজিৎ দাস রূপুই যথেষ্ট, সেখানে হারুনের সেখানে না গেলে কি চলত না? এই হচ্ছে আবাহনীর অবস্থা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ক্লান্ত-বিধ্বস্ত-ক্ষয়িষ্ণু শক্তির আবাহনী কি আজ তাদের হারের হ্যাটট্রিক করবে? নাকি ন্যূনতম ড্র করে ইজ্জত কিঞ্চিৎ রক্ষা করবে? নাকি অলৌকিক নৈপুণ্য দেখিয়ে জয় কুড়িয়ে নেবে?
×