ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এনআইডি সার্ভারে প্রবেশাধিকার চাইছে বিদেশীরা!

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১৮ এপ্রিল ২০১৭

এনআইডি সার্ভারে প্রবেশাধিকার চাইছে বিদেশীরা!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পরিচয়পত্রের নিবন্ধন অনুবিভাগের সার্ভারে দেশের সরকারী বেসরকারী ৭৪ প্রতিষ্ঠানের জনগণের তথ্য যাচাই করার জন্য প্রবেশাধিকারের সুযোগ রয়েছে। তবে বিদেশীরা এই সার্ভারের প্রবেশাধিকার চেয়ে আবেদন জানিয়েছে। ইতোমধ্যে দেশে অবস্থিত তিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ সুযোগ চেয়ে এনআইডিতে আবেদন করেছে। আরও কয়েকটি দেশের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে এই সুযোগ চাওয়ার কথা জানিয়েছে বলে জানান সংস্থার মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। সোমবার আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনে এনআইডি প্রকল্পের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা জানান। তবে তিনি এ সময় উল্লেখ করেন দেশের জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যে গোপনীয়তা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন, আমাদের সার্ভারে দেশের জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে। এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থও জড়িত আছে। কাজেই তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যা করব, তা জনগণকে জানিয়েই করব উল্লেখ করেন। ২০০৮ সালে পরিচয়পত্রসহ ভোটার তালিকা তৈরির পর দেশের জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য এনআইডির সার্ভারে সংরক্ষণ করা হয়েছে। প্রতিবছর ভোটার তালিকা নবায়ন করার সময় নতুন ভোটার হিসেবে যারা অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তাদের তথ্যও পর্যায়ক্রমে এই সার্ভারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। শুধু বিশেষ প্রয়োজনে বিভিন্ন সংস্থাকে এ সার্ভারে প্রবেশাধিকার দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি লেমিনেটিং করা জাতীয় পরিচয়পত্রের বদলে স্মার্টকার্ডও প্রদান করা হচ্ছে। স্মার্টকার্ড দেয়ার সময় জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যভা-ার আরও শক্তিশালী করতে ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছাপও নেয়া হচ্ছে। এগুলো ব্যক্তির গোপন ভা-ারে সংরক্ষিত করা হবে বলে ইসি জানিয়েছে। তারা জানায়, দেশে বর্তমানে ১০ কোটিরও বেশি ভোটার রয়েছে। প্রতিবছর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। এসব ভোটারের তথ্য সার্ভারে রয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এনআইডির মহাপরিচালক আরও উল্লেখ করেন, দেশে ১০ কোটিরও বেশি ভোটারের ব্যক্তিগত তথ্য এনআইডির ডাটা সেন্টারে সংরক্ষিত রয়েছে। এখানে একজন ভোটারের নাম ঠিকানাসহ ৩১ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভার ভিজিটে বিদেশীদের অনুমতির আবেদন প্রসঙ্গে বলেন, তিনটি বিদেশী দূতাবাস এই সুযোগ পেতে লিখিত আবেদন করেছে। আরও কয়েকটি দেশ আমাদের সঙ্গে মৌখিকভাবে কথা বলেছে। তবে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাজধানীতে বিভিন্ন সময় উন্নত জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হলেও অনেকেই সময়মত নিতে পারেননি। তবে শীঘ্রই তাদের জন্য আবারও স্মার্টকার্ড বিতরণে নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে। এছাড়া চলমান এ প্রক্রিয়ায় জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকেও তারা স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। তিনি বলেন, রাজধানীর নির্ধারিত বিভিন্ন এলাকায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫৯ শতাংশ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। বাদ পড়াদের হাতে কার্ড তুলে দেয়ার জন্য নতুন করে তারিখ ঘোষণা করা হবে। ডিজি বলেন, বর্তমানে স্মার্টকার্ডে অনেকের ছবি অস্পষ্ট আসছে। বেশি দিন হওয়ায় অনেকেরই চেহারার সঙ্গে ছবির মিল পাওয়া যায় না। এ জন্য নির্দিষ্ট সময় পর স্মার্টকার্ডের ছবি পরিবর্তন করা হবে। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের ৯ কোটি ভোটারের সবাইকে স্মার্টকার্ড দিতে হলে বাড়তি ১৮টি প্রিন্টার মেশিন লাগবে। কাজ করতে হবে তিন শিফটে। এখন দুই শিফটে প্রিন্টের কাজ চলছে। যারা স্মার্টকার্ড পাচ্ছেন না তাদের তথ্য অসম্পূর্ণ। এ কারণে কার্ড প্রিন্ট হচ্ছে না। তথ্য নির্ভুল করে তাদের স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে কার্ড বিতরণের ৭৫ দিন আগে সংশ্লিষ্ট উপজেলার জনগণের ভুল সংশোধনের সুযোগ রেখে ঘোষণা দেয়া হবে বলেও জানান এনআইডি বিভাগের ডিজি। তিনি বলেন, ‘ফ্রান্স থেকে ৯ কোটি খালি কার্ড এনে এখানে প্রিন্ট করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৫ কোটি কার্ড পাওয়া গেছে। ৩০ জুনের মধ্যে বাকি কার্ড দিতে বলা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী না দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ডিজি জানান।
×