ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত

আরডিএ’র নীতি না মেনে ভূমি ব্যবহার করলে এক বছর কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৮ এপ্রিল ২০১৭

আরডিএ’র নীতি না মেনে ভূমি ব্যবহার করলে এক বছর কারাদণ্ড

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) আওতাধীন এলাকায় মহাপরিকল্পনা না মেনে ভূমি ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদ- বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দ- পেতে হবে। এমন বিধান রেখে ‘রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৭’ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া মন্ত্রিসভা ‘বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড আইন-২০১৭’-এর খসড়া, ‘আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪’-এর বিধানাবলী ‘আয়কর আইন’-এরও অনুমোদন দিয়েছে। সচিবালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ অনুমোদনের কথা জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘রাজশাহী টাউন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অর্ডিন্যান্সটি’ ১৯৭৬ সালের। সামরিক শাসনামলের আইন পরিবর্তন করে এখন নতুন আইন করার বাধ্যবাধকতা আছে, সেজন্য এটি নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি বলেন, অর্ডিন্যান্সটি খুব বেশি পরিবর্তন করা হয়নি। সামান্য পরিবর্তন করা হয়েছে। খসড়া আইনে জলাধারের সংজ্ঞা জলাধার আইন থেকে এনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি মহাপরিকল্পনায় উল্লিখিত বা চিহ্নিত কোন উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে ভূমি ব্যবহার করে তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এজন্য তিনি সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদ- বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। এটা নতুন সংযোজন। এর আগে গত বছরের ২০ জুন এ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। তখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন, এক্ষেত্রে আগের আইনে শুধু পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ছিল। শফিউল আলম বলেন, শহরটা মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় চলবে। মহাপরিকল্পনা কিভাবে করতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। জলাধার খনন বা ভরাট, পাহাড় বা টিলা কাটা এসব কাজ করলে মালিককে এটা বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দিতে পারবে কর্তৃপক্ষ। যদি এটা কেউ লঙ্ঘন করে তবে এক বছরের কারাদ- বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দ- পেতে হবে। নিচু জমি ভরাট ও পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করার ক্ষেত্রেও একই শাস্তির কথা নতুন আইনে বলা হয়েছে। পল্লী উন্নয়ন বোর্ড আইন ‘বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড আইন-২০১৭’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ প্রসঙ্গে শফিউল আলম বলেন, ১৯৮২ সালের অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড পরিচালিত হচ্ছে। নতুন আইনে বড় কোন পরিবর্তন নেই। মূলত ওটাকে ইংরেজী থেকে বাংলা করে নতুন আইনটি নিয়ে আসা হয়েছে। নতুন আইনে কিছু জিনিস হালনাগাদ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে বিধান ছিল বোর্ড বছরে ছয়বার ও দুই মাসে একবার সভা করবে। এটাকে পরিবর্তন করে প্রস্তাব করা হয়েছে, প্রতি ছয় মাসে বোর্ডের কমপক্ষে একটি সভা হবে। তিনি আরও বলেন, আগে পাঁচজনের কম হলে কোরাম হতো না। এখন প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, এক-তৃতীয়াংশ সদস্য যদি উপস্থিত থাকে তবে কোরাম হবে। মুজিবনগর দিবসে জাতিকে মন্ত্রিসভার অভিনন্দন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৭ এপ্রিল (মুজিবনগর দিবস) উপলক্ষে মন্ত্রিসভা জাতিকে অভিনন্দন জানিয়েছে। যেহেতু এটা একটি ঐতিহাসিক দিবস, ১৯৭১ সালের এই দিনে প্রথম বাংলাদেশ সরকার মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। সেজন্য মন্ত্রিসভা সবাইকে অভিনন্দন জানায় এবং ওই সময়ে যারা নেতৃস্থানীয় ছিলেন যেমন- মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতাসহ সবাইকে স্মরণ করা হয়। আয় অধ্যাদেশ হবে আয়কর আইন ‘আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪’-এর বিধানাবলী ‘আয়কর আইন-২০১৭’ হিসেবে পাস করার প্রস্তাবও নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অধ্যাদেশটি সামরিক শাসনামলে পড়ে গেছে, এটা পরিবর্তন করার আবশ্যকতা রয়েছে। ১৯৮৪ থেকে অধ্যাদেশের যত সংশোধন হয়েছে, তার সবগুলোকে একত্রিত করে একটি সমন্বিত আইন করা হয়েছে। সময় না থাকায় এটি আপাতত ইংরেজীতে করা হয়েছে, পরে বাংলায় নতুনভাবে করা হবে। নতুন আইনে কোন পরিবর্তন হয়নি।
×