ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উজানের ঢলে মাদারীপুরে তলিয়ে গেছে বোরো

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৭ এপ্রিল ২০১৭

উজানের ঢলে মাদারীপুরে তলিয়ে গেছে বোরো

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১৬ এপ্রিল ॥ হঠাৎ উজান থেকে নেমে আসা ঢলে শিবচরের পদ্মার চর নিম্নাঞ্চলে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিচ্ছিন্ন এ চরাঞ্চলের চার ইউনিয়নের বিপুল পরিমাণ বোরো ধান পানিতে তলিয়ে বিনষ্ট হয়ে গেছে। গত কয়েকদিনে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও তেমন কিছুই জানে না স্থানীয় কৃষি দফতর। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মার বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ফসলের মাঠ প্লাবিত হয়। এতে চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ি, বন্দরখোলা ও মাদবরচর ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী মাঠের বোরো ধান তলিয়ে যায়। এখনও চার ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার বিঘা বোরো ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এ মাঠের অধিকাংশ ধানই আধা-পাকা। এদিকে ফসল হারিয়ে চরের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে হতাশা নেমে এসেছে। পদ্মার চরাঞ্চলের মানুষের প্রধান জীবিকা এ ধান থেকেই আসে। অধিকাংশ কৃষকই এনজিও, ব্যাংক অথবা চরা সুদে মহাজনী ঋণে টাকা এনে বোরো ধানের আবাদ করেছিল। অনেকে তলিয়ে যাওয়া ধান তোলার চেষ্টা করলেও ধান না পাকায় হতাশ তারা। একদিকে ধান অপরদিকে খড়কুটা হারানোয় সামনে গবাদিপশুর খাদ্য সঙ্কটও দেখা দেয়ার শঙ্কা রয়েছে। ফসলের ব্যাপক হানি হলেও এ বিষয়টি এখনও কৃষি দফতরের কেউই না জানায় বা পরিদর্শন না করায় ক্ষতিগ্রস্তরা চরম ক্ষুব্ধ। ব্যাপারীকান্দি গ্রামের কৃষক শাহিন ব্যাপারী বলেন, ‘আমার ২২ বিঘা ধান ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। পাকার আগেই কেটে নিচ্ছি। যা ধান পাব তাতে খরচের অর্ধেক টাকাও উঠবে না। এখন পর্যন্ত কৃষি অফিসের কোন লোক খবরও নেয় নাই।’ একই ধরনের অভিযোগ কৃষক মজিবর শেখের। তিনি বলেন, ‘আমি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বোরো ধান লাগাইছিলাম। আমার মতো আরও অনেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ কইর‌্যা ধান লাগাইছে। এখন ঋণের টাকা শোধ করব কেমনে?’ কাঁঠালবাড়ি গ্রামের কৃষক রুস্তম মিয়া বলেন, ‘ধান কেবল মাত্র পাকা শুরু করছে। এমন সময় হঠাৎ ঢলের পানি আইসা সব ধান নষ্ট কইর‌্যা দিছে। এমনভাবে ধান গাছ পইচা গেছে, গরুর খাওয়ানোর খ্যারও থাকবো না।’ শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম সালাহউদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি হঠাৎ করে উজান থেকে ঢলের পানি এসে শিবচর উপজেলার চরাঞ্চলের পদ্মা নদীতীরবর্তী এলাকায় বোরো ধানের মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা মাঠ পরিদর্শন করে কৃষকের ক্ষতি নিরূপণ করার চেষ্টা করছি।’
×