ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘তরুণ প্রজন্মের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই’

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৭ এপ্রিল ২০১৭

‘তরুণ প্রজন্মের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মোহাম্মদ ইউনুস খান। পাকিস্তান ক্রিকেটের চলমান কিংবদন্তি। বিনয়ী ইউনুস অবশ্য কখনই নিজেকে গ্রেটদের সঙ্গে তুলনা করেন না। কিন্তু পরিসংখ্যান বলে তিনিই দেশটির টেস্ট ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যান। প্রথম পাকিস্তানী হিসেবে দশ হাজারি ক্লাবে নাম লেখাতে আর মাত্র ২৩ রান চাই। আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরই তার ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজ। জাভেদ মিয়াদাঁদকে আইডল মানা ৩৯ বছর বয়সী ক্রিকেটার একজন ‘টিম ম্যান’ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকতে চান, চান নতুন প্রজন্ম যেন তাকে মনে রাখে। পাকিস্তানের জার্সিতে এমন সব উত্তরাধিকারী দেখার অপেক্ষায়, যার তার মতোই হৃদয় দিয়ে দেশটাকে ভালবাসবে, জন্মভূমির জন্য খেলবে। সম্প্রতি টেস্ট অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক ক্যারিবীয় সফর সামনে রেখে অবসরের আগাম ঘোষণা দেন। একদিন পর তাকে অনুসরণ করেন ইউনুস খান। শুক্রবার জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কে শুরু তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট। ‘আমি যখন ড্রেসিং রুমে থাকব না, আন্তর্র্জাতিক ক্রিকেট খেলব না, চাইব তরুণ ক্রিকেটাররা তখন আমাকে তাদের একজন রোল মডেল বিবেচনা করুক। অবসরে যাওয়ার পর তারা আমাকে নিয়ে ভাবুক, আমি এমন একটা উত্তরাধিকার রেখে যেতে চাই।’ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ফেসবুক পেইজে এক ভিডিও বার্তায় ইউনুস আরও বলেন, ‘আমি চাই একজন টিমম্যান হিসেবে সবাই আমাকে মনে রাখুক, একজন ব্যাটসম্যান হিসেবেÑ যিনি সবসময় পাকিস্তানের জন্য ও দলের জন্য খেলেছে।’ দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে স্মরণীয় ঘটনার উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমার প্রথম টেস্ট রানটি ছিল আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ছিল স্মরণীয়। রাওয়ালপিন্ডিতে ২০০০ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমি এটা করেছিলাম। আল্লাহর ইচ্ছায় আমি একটি সেঞ্চুরিও (দ্বিতীয় ইনিংসে) পেয়েছিলাম।।’ রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১২ রান করে আউট হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৭ রানের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি উপহার দেন সে সময় ২২ বছর বয়সী ইউনুস। যদিও ম্যাচটা নাটকীয়ভাবে ২ উইকেটে হেরেছিল তার দল। ক্যারিয়ারের আরও কিছু স্মরণীয় মুহূর্তের কথা জানিয়ে ইউনুস বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অকল্যান্ডে ১৪৯ রানের ইনিংস, ভারতের বিপক্ষে কলকাতায় প্রথম ম্যাচে পরাজিত হওয়ার পর ব্যাঙ্গালুরুতে ২০০, ইংল্যান্ডের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৭৫ এবং ট্রিপল সেঞ্চুরি অবশ্যই স্মরণীয়। মাত্র তৃতীয় পাকিস্তানী হিসেবে আমি ট্রিপল সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছিলাম।’ প্রথম পাকিস্তানী হিসেবে ১০ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়ার অপেক্ষায় থাকা ইউনুস বলেন, ‘জাভেদ ভাইয়ের রেকর্ড ভাঙ্গার পরই ভেবেছিলাম অবসর নেব। তবে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেই ১০ হাজার রান করার পরই ক্রিকেট ছাড়ব। আশা করছি উইন্ডিজে বিদায়ী সিরিজেই সেটা হয়ে যাবে।’ ক্যারিয়ারে অনেক সাফল্য পেয়েছেন ইউনুস। বড় অর্জনের মধ্যে অধিনায়ক হিসেবে ২০০৯ সালে টি২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে শিরোপা এনে দেয়া। টেস্টে গড় ৫০-এর ওপরে, একটি ট্রিপল সেঞ্চুরি, ভারতের বিপক্ষে একটিসহ মোট ৫টি ডাবল সেঞ্চুরি এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়। কেবল সর্বোচ্চ রানই (৯,৯৭৭) নয়, পাকিস্তানের সর্বাধিক ৩৪ সেঞ্চুরিসহ আরও অনেক রেকর্ডই তার দখলে। আর মাত্র কিছুদিন। উইন্ডিজ সফর শেষেই সাবেক হয়ে যাবেন আধুনিক টেস্টের সফলতম এই ব্যাটসম্যান।
×