ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডাঃ মারজান আক্তার টুম্পা

প্রসাধনী হতে পারে ক্ষতির কারণ

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১৭ এপ্রিল ২০১৭

প্রসাধনী হতে পারে ক্ষতির কারণ

ত্বক কোমল ও সুস্থ রাখতে ফেসওয়াশ, ক্রিম, সানস্ক্রিন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি নানা ধরনের মেকআপ অনুষঙ্গ তো আছেই। তবে কখনও কি ভেবে দেখেছেন এই প্রসাধনীগুলো আসলেও উপকারী নাকি এর উল্টোটাই করছে! অজান্তেই ত্বকের ক্ষতি হয়ে যায়। রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এমনি কিছু দিক তুলে ধরা হয়। ত্বকের যতেœ ব্যবহৃত নানা ধরনের ক্রিম, সানস্ক্রিন, লিপস্টিক বা ফাউন্ডেশনের ব্যবহৃত উপাদান হতে পারে ক্ষতিকর। ঠোঁট শুষ্ক করে তোলে ম্যাট লিপস্টিক : লিপস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত ‘লেড’ ঠোঁটের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর- এটি বেশ পুরনো খবর। এরপরও নানা নামী-দামী ব্র্যান্ড তাদের নজরকাড়া লিপস্টিকের পসরা সাজিয়ে আকৃষ্ট করেছেন প্রসাধনপ্রেমী নারীদের। আর হাল ফ্যাশনে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে রয়েছে লিকুইড লিপস্টিক। এই লিপস্টিক তৈরিতে তেলের বদলে ওয়্যাক্স বা মোম ব্যবহৃত হয় বেশি পরিমাণে। এ ছাড়াও থাকে এ্যালকোহল। ভারতের চেন্নাইয়ের ত্বকবিশেষজ্ঞ ডাঃ কওসালিয়া ভি নাথান বলেন, ‘লিপস্টিক লাগানোর আগে অবশ্যই লিপবাম ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত ব্যবহারের জন্য হালকা রং সমৃদ্ধ লিপবাম ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতিদিনের ব্যবহারে গাঢ় রংয়ের ম্যাট লিপস্টিকগুলো এড়িয়ে চলা ভাল। রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে অল্প পরিমাণে ঘি মালিশ করে নিন। এতে ঠোঁট কোমল থাকবে এবং রংও ঠিক হবে।’ সানস্ক্রিন থেকে হতে পারে ক্যান্সার : বেশিরভাগ সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশনে রেটিনাইল পালমিটেট বা রেটিনল থেকে থাকে। মূলত এই উপাদান নাইট ক্রিমে ব্যবহৃত হয়। কারণ রেটিনল ব্যবহারের পর রোদে বের হওয়া উচিত নয়। এই উপাদান ত্বক আরও সংবেদনশীল করে তোলে। এছাড়াও অক্সিবেনজোন নামক উপাদান সমৃদ্ধ প্রসাধনী দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ত্বকের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই সানস্ক্রিন কেনার আগে অবশ্যই এর উপাদানের তালিকায় চোখ বুলিয়ে নিতে হবে। ত্বক ফর্সা করার ক্রিম ব্যবহারে হতে পারে বিষক্রিয়া : ভারতীয় ওজন নিয়ন্ত্রণবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডাঃ রেনুকা ডেভিড জানান, ত্বকের রং উজ্জ্বল করার দাবি রাখে এমন ‘স্বাভাবিক’ ট্যাগ লাগানো ক্রিম বা লোশন যদি দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হয় তাহলে এর উপাদানের তালিকা ভালভাবে পড়ে দেখা উচিত। উপাদানের তালিকায় মার্কারি, মারকিউরাস ক্লোরাইড, কালোমেল, মারকিউরিক বা মারকিউরিও ইত্যাদি নাম উল্লেখ থাকলে তা এখনই বাতিল করুন। যদি উপাদানের কোন তালিকা উল্লেখ না থাকে তাহলে কখনই ব্যবহার করা উচিত নয়। মার্কারির বিষক্রিয়ার কারণে স্মৃতিশক্তি হ্রাস, দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়া, ত্বকে জ্বালাভাব ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী বাদ দিয়ে দই, মধু, টমেটো, চালের গুঁড়া ইত্যাদি ভেষজ উপাদান ব্যবহার করলে ত্বকের রংও উজ্জ্বল হবে পাশাপাশি কোন ধরনের ক্ষতি হওয়ারও ঝুঁকি থাকবে না। আইশ্যাডো ব্যবহারে বলিরেখার ঝুঁকি বৃদ্ধি : ডাঃ নাথান বলেন, ‘বয়সের সঙ্গে চোখের চারপাশের সংবেদনশীল ত্বকের কোষগুলো শুষ্ক ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। এ কারণে বলিরেখা দেখা দেয়। চোখে আইশ্যাডো ব্যবহারের ফলে এই অবস্থার অবনতি ঘটে। আইশ্যাডো তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানগুলো চোখের ত্বক ক্ষতি করে থাকে।’ এ কারণে কখনও মেকআপ না তুলে ঘুমানো উচিত নয়। ডাঃ নাথান বলেন, ‘দিন শেষে ভালভাবে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর কোমল স্ক্রাবার ব্যবহার করে জমে থাকা ময়লাও ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে জলপাইয়ের তেল এবং গোলাপ জল মিশিয়ে চোখের ত্বকে হালকাভাবে বুলিয়ে নিন। চোখের আশপাশের ত্বক কোমল হয় বলে বেশি ঘষাঘষি করা উচিত নয়, এতে বলিরেখার সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।’একইভাবে কাজলের বিষক্রিয়ার কারণে চোখে জ্বলুনি, লালচেভাব, আঠাল অনুভূতি হওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই ভেষজ উপাদানে তৈরি প্রসাধনী বেছে নেয়ার পরামর্শ দেন ডাঃ নাথান।
×