ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘের নিন্দা ॥ কোন গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি

শরণার্থী বাসে বোমায় নিহত ১১২

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ১৭ এপ্রিল ২০১৭

শরণার্থী বাসে বোমায় নিহত ১১২

সিরিয়ার আলেপ্পোর উপকণ্ঠে শতাধিক বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার ঘটনায় শনিবার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। আলেপ্পোর উপকণ্ঠে রাশিদিন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ সময় প্রায় ৫ হাজার লোক নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকার দিকে সরে যাচ্ছিল। শনিবার দিনের আরও আগের দিকে শক্তিশালী গাড়িবোমা হামলায় ১১২ জন নিহত হয়। খবর এএফপি ও ওয়েবসাইটের। জাতিসংঘ মহাসচিব অন্তেনিও গুতেরেসের পক্ষে তার মুখপাত্র স্তেফান দুজারেক বলেন, ‘আলেপ্পোর পশ্চিমাঞ্চলে রাশিদিনে আজ সংঘটিত হামলার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। ফোয়া এবং কেফরাইয়া অঞ্চল থেকে ৫ হাজার লোক সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকার দিকে যাচ্ছিল। নিহত ও ঘটনার শিকার ব্যক্তিবর্গের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’ প্রধান বিরোধী গ্রুপ হায়ার নিগোসিয়েশন কমিটি (এইচএনসি) হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এইচএনসি বলেছে, কেবল রাজনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান হলেই সন্ত্রাসবাদ দূর হতে পারে।’ স্থানীয় সূত্র জানায়, আলেপ্পোর উপকণ্ঠে রাশিদিনে এ গাড়িবোমা হামলা হয়। সেখানে কয়েকটি বাসে আলেপ্পো শহরে ঢোকার অপেক্ষায় ছিল দুটি গ্রামের মানুষ। যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্যই তাদের বাসে তোলা হয়েছিল। অপেক্ষারত সেই বাস লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালানো হয়। সিরিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত টিভির দাবি, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি জানিয়েছে, বোমা থেকেই এ বিস্ফোরণ ঘটেছে। সিরিয়ায় আলেপ্পোর উপকণ্ঠে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহরের কাছে ঘরহারা মানুষদের বহরে গাড়িবোমা হামলা চালানো হয়েছে। এতে অন্তত ১১২ জন নিহত হয়েছে। এএফপি জানিয়েছে, বোমা হামলার পর সরকারের অধীনে থাকা দুই শহর ফুয়াহ ও কেফরায়া থেকে পাঁচ হাজার এবং বিদ্রোহী অধ্যুষিত মাদায়া ও জাবাদানি শহরের দুই হাজারের বেশি লোক আটকা পড়ে। কাতার ও ইরানের মধ্যস্থতায় সিরিয়ার চারটি অবরুদ্ধ শহর থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের উদ্ধার করার বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্রোহী অধ্যুষিত দুটি এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি শহরের ৩০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হবে। নিহতদের সবাই বেসামরিক লোক হলেও বিদ্রোহীদের ও কয়েকজন এ ঘটনায় মারা গেছে। উদ্ধারকারী গ্রুপ হোয়াইট হেলমেট জানিয়েছে, তাদের স্বেচ্ছাসেবীরা বাসগুলোর ধ্বংসস্তূপ থেকে শতাধিক লাশ উদ্ধার করেছে। গোষ্ঠীটি আরও ৫৫ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে। নিহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোন গোষ্ঠী হামলায় দায় স্বীকার করেনি। ইরান ও কাতারের মধ্যস্থতায় সিরীয় সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির আওতায় ৩০ হাজার অবরুদ্ধ সিরীয়কে সরকার ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকার মধ্যে বিনিময় করার কথা রয়েছে। এ হামলা, জটিল এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিদ্যমান ঝুঁকির বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে। বোমা হামলার আগে চুক্তি স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। এতে আলেপ্পোর শহরতলির দুটি ট্রানজিট পয়েন্টে সরকারী বাহিনীর দ্বারা অবরুদ্ধ ও বিদ্রোহীদের দ্বারা অবরুদ্ধ উভয় এলাকার হাজার হাজার মানুষ আটকা পড়ে গিয়েছিল। বিদ্রোহী গ্রুপ আহরার আশশাম এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, ‘আমাদের লক্ষ্য বেসামরিক লোকজনকে রক্ষা করা, তাদের হত্যা করা নয়’। শরণার্থীদের নিয়ে বাসগুলো রওনা দেয়ার পর মাঝপথে সেগুলো আটকে দেয়া হয়। কারণ বিদ্রোহীরা তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে কতসংখ্যক লোককে চলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। এর আগে শুক্রবার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত মাদায়া ও জাবাদানি থেকে ২ হাজার ২শ’ লোককে বের করে আনা হয়।
×