ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৪ এপ্রিল ২০১৭

উবাচ

দিল্লীর লাড্ডু স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে মন খুলে কথা বলার জায়গা। যতক্ষণ প্রশ্ন থাকে ততক্ষণই উত্তর আসে। অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি, পররাষ্ট্রনীতি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক উসকানির প্রশ্নও করা যায়। সবগুলো প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যায়। আর একটু হাসিঠাট্টা-আনন্দ বাড়তি পাওনাও বরাবরই পুষিয়ে দেন তিনি। অন্য রাষ্ট্রনায়কদের মতো মুখ ফুলিয়ে দাড়ি কমায় মেপে কথা বলার অভ্যাস নেই তাঁর। যে কেউ ভাবতে পারেন একেবারে সাধারণ-খুব আপন। এবার দিল্লী থেকে ফিরে এসেও তার ব্যতিক্রম হলো না। দিল্লী সফরের নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান ‘পরাণ, মন, প্রাণ ভরেছে? পেট ভরেছে সবার?’ প্রধানমন্ত্রীর এই প্রশ্ন শুনে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে হাসির রোল ওঠে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন খেয়ে নেন। মিষ্টি, লাড্ডু আছে।’ সাংবাদিকদের হাসির মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘দিল্লী কা লাড্ডু আছে, খেয়ে যান! দিল্লী থেকে দিল্লী কা লাড্ডু এনেছি, খেয়ে যান!’ দিল্লীর লাড্ডু যে খায় সে তো পস্তায় আর যে না খায় সেও পস্তায়। এই প্রবাদ তো সবাই আগে থেকেই জানে। আর এভাবেই ঢাকার রাজনীতি নববর্ষের আগে মিষ্টি লাড্ডুর প্রবেশ। তিস্তার পানি! স্টাফ রিপোর্টার ॥ পানি ছাড়া বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কিছুই আশা করেনি। এখন কেবলই মনে হচ্ছে তারা পানিই চেয়েছিল। পানি পায়নি বলে আর কিছু চায় না। তাও তিস্তার পানিই হতে হবে। যেভাবে শেখ হাসিনা গঙ্গা চুক্তি করেছিলেন সেইভাবে তিনি তিস্তা চুক্তি করবেন এমনটা আশা করা বিএনপির অপরাধ নয়। কারণ তারা জানেন বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিস্তা চুক্তি সম্ভব নয়। যেহেতু তারা সারাক্ষণই ভাবে নির্বাচন হইলেই ক্ষমতায় যাবে। সুতরাং তার আগে তিস্তা চুক্তি হয়ে গেলে তাদের জন্য শুভ হতো। ফখরুল ইসলাম বলেছেন উনি (প্রধানমন্ত্রী) স্বীকার করেছেন ‘ম্যায় পানি ন্যাহি মিলে কুচ বিদ্যুত তো মিলে, কুচ তো মিলে গ্যা’। বিদ্যুতের কথা বলা হয়েছে তাও আবার পয়সার বিনিময়ে। সেক্ষেত্রে আমাদের বলতে হয়নি। বিদ্যুত কাউকে কেউ মাংনা দেয় ‘ফ্রি বিদ্যুত’ এমন কথা কোন কালে কেউ শোনেনি। যেহেতু টাকার বিনিময়ে বিদ্যুত আর তিস্তার পানি চুক্তি ছাড়াই আসছে সে জন্য মির্জা ফখরুল বলছেন, বর্তমান সরকার নতজানু। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে চলছে। তাই তারা দাবি আদায় করতে পারবে না। ফলে এই তাবেদার সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় এখন আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নেমে আসতে হবে। কারণ এরা ভিন্ন কৌশলে নতুন পোশাকে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠায় সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে চলেছে। ১৯৭১ সালের পর যে নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ গড়ে তোলার নীলনক্সা করেছিল, তা বাস্তবায়নে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অথচ পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছে এরাই নাকি দিল্লী গিয়ে অনুরোধ করেছে অন্তত আরেকবার যেন তাদের ক্ষমতার চেয়ারে বসানো হয়। এর অর্থ কি উপরে উপরে বিরোধিতা ভিতরে শুধুই ভালবাসা। তবে মির্জা ফখরুল ইসলামের ভেবে দেখা উচিত তারা তিস্তায় পানি আনতে পারবেন তো! বাংলার লাড্ডু স্টাফ রিপোর্টার ॥ দিল্লীর লাড্ডুর হাত ধরে বাংলাদেশের লাড্ডু প্রবেশ করছে রাজনীতিতে। আওয়ামী লীগের লাড্ডুর জবাব বিএনপি লাড্ডু দিয়েই দিয়েছে। বিএনপির রাজনীতি এখন লাড্ডুময়। বিএনপির সংবাদ লেখেন এমন সংবাদকর্মীরা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনে আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকে না। কারণ কয়েকশ’ নেতাকর্মী নিয়ে অনেকটা ছোটখাটো জনসভার আদলে বেগম খালেদা জিয়া কয়েক পৃষ্ঠা লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এরপর বলেন, আজ আর প্রশ্ন নেব না, অন্যদিন অন্যদিন বলতে বলতে চলে যান। তখন সাংবাদিকরা পরস্পর পরস্পরের দিকে তাকিয়ে থাকেন আর ভাবেন কত কি না পরিকল্পনা করে এসেছিলেন। কিন্তু কিছুই জানালেন না তিনি। তবে এবার ব্যতিক্রম হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। আবার শেষে নিজেই বলেছেন আপনাদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা আছে বাংলাদেশী লাড্ডু। কাল প্রধানমন্ত্রী দিল্লীর লাড্ডু খাইয়েছেন আমি আপনাদের বাংলাদেশের লাড্ডু খাওয়াব। বেগম জিয়ার সম্মানে উপস্থিত সকলকে কক্ষে বসেই লাড্ডু খেতে দেখা গেছে।
×