ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর ;###;সারাদেশে ৩০ হাজার স্কুল কলেজে বের হবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

অশুভ শক্তি রোখার পহেলা বৈশাখ আজ ॥ দুর্জনেরে হানো

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ১৪ এপ্রিল ২০১৭

অশুভ শক্তি রোখার পহেলা বৈশাখ আজ ॥  দুর্জনেরে হানো

মোরসালিন মিজান ॥ ওই বুঝি কালবৈশাখী/সন্ধ্যা-আকাশ দেয় ঢাকি/ভয় কী রে তোর ভয় কারে, দ্বার খুলে দিস চার ধারে...। চার ধারে যত দ্বার যত জানালা সব আজ খোলা। বাঙালীর উদার অসাম্প্রদায়িক চেতনার উজ্জ্বল আলোয় অগ্নিবাণে পুড়ছে অন্ধকার। এসো এসো উৎসস্রোতে গূঢ় অন্ধকার হতে/এসো হে নির্মল কলকল্ ছলছল্...। সত্য সুন্দর নির্মল দিন এসেছে। উগ্রবাদ ধর্মান্ধতা ধর্মের রাজনীতি এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে শেকড়ের শক্তি নিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছে বৈশাখ। আজ শুক্রবার ১৪২৪ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। বর্ষবরণ নয় শুধু, বাঙালীর অভূতপূর্ব সাংস্কৃতিক জাগরণের উৎসবে যোগ দেবে সারাদেশ। এবার প্রথমবারের মতো সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজার সরকারী-বেসরকারী স্কুল-কলেজ ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের করা হবে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। তপোবহ্নির শিখা জ্বালো জ্বালো/নির্বাণহীন নির্মল আলো...। অফুরান এই আলোয় উদ্ভাসিত হবে বাঙালী। বছরের প্রথম দিনে আজ নতুন নতুন স্বপ্ন বুনবে বাংলার কৃষক। হালখাতা খুলবে ব্যবসায়ীরা। সরাকারী ছুটির দিনে রাজধানীসহ সারাদেশে একযোগে চলবে লোকজ ঐতিহ্যের নানা উৎসব অনুষ্ঠান। বাংলা নববর্ষের এই সূচনালগ্নে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈশাখ এবার এমন একসময়ে এসেছে যখন ধমান্ধ উগ্র মৌলবাদীরা পুনর্বাসিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে অনগ্রসর কূপম-ূক গোষ্ঠী। যখন বর্বর আক্রমণের শিকার হচ্ছে সুন্দরের চর্চা, মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধ করার ফতোয়া দেয়া হচ্ছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রান্ত বর্ষবরণের প্রাক প্রস্তুতি দেয়ালচিত্র যখন ভাস্কর্যকে মূর্তি জ্ঞান করে অপসারণের আবদার করা হচ্ছে, পাঠ্যপুস্তকে আনা হচ্ছে অপরিণামদর্শী পরিবর্তন, তখন নতুন তাৎপর্য নিয়ে হাজির হয়েছে বৈশাখ। এ বৈশাখ জোট বাঁধারÑ প্রতিবাদের প্রতিরোধের। লোক ঐতিহ্যের প্রধান শক্তি অসাম্প্রদায়িকতা মানবিক মূল্যবোধ সাম্য সুন্দর শান্তির বাণী নিয়ে এসেছে বৈশাখ। আজ হাজার বছরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির আলোয় নতুন করে জ্বলে উঠবে বাঙালী। অগ্নিশিখা জ্বালিয়ে রাখার অনুপ্রেরণা গ্রহণ করবে। দ্রোহের আগুনে শানিত হবে। বাঙালীর চেতনাবিরোধী অপশক্তি রুখতে নতুন বছরে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নেবে বাংলাদেশ। বাংলা নববর্ষের সঙ্গে সবচেয়ে নিবিড় সম্পর্ক কৃষির। এ সম্পর্কের সূত্রেই বাংলা সাল প্রবর্তন করেন সম্রাট আকবর। তার আমলেই প্রবর্তন হয় বাংলা সাল। এখন তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত। বঙ্গাব্দের মাস হিসেবে বৈশাখের প্রথম স্থান অধিকার করার ইতিহাসটি বেশি দিনের না হলেও, আদি সাহিত্যে বৈশাখের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। দক্ষের ২৭ কন্যার মধ্যে অনন্য সুন্দরী অথচ খরতাপময় মেজাজসম্পন্ন একজনের নাম বিশাখা। এই বিশাখা নক্ষত্রের নামানুসারেই বাংলা সনের প্রথম মাস বৈশাখের নামকরণ। বৈদিক যুগে সৌরমতে বৎসর গণনার পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। সেখানেও সন্ধান মেলে বৈশাখের। পেছনের যত ক্ষত ভুলে এ মাসেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখে বাঙালী। সেই শুভ সূচনা হয় পহেলা বৈশাখে। কবিগুরুর ভাষায়Ñ মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা...। পুরনো দিনের শোক-তাপ-বেদনা-অপ্রাপ্তি-আক্ষেপ ভুলে অপার সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করবে। দুই হাতে অন্ধকার ঠেলে, সকল ভয়কে জয় করার মানসে নতুন করে জেগে উঠবে বাঙালী। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ আজ একাত্মা হয়ে গাইবেÑ এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ...। আনন্দে উৎসবে মাতবে গোটা দেশ। কবিগুরুর ভাষায়Ñ নব আনন্দে জাগো আজি নব রবি কিরণে/শুভ্র সুন্দর প্রীতি-উজ্জ্বল নির্মল জীবনে...। একই আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে নজরুল লিখেছেনÑ তোরা সব জয়ধ্বনি কর/ তোরা সব জয়ধ্বনি কর/ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড়/তোরা সব জয়ধ্বনি কর...। আবহমান কাল ধরেই চলছে বৈশাখ বরণের আনুষ্ঠানিকতা। প্রকৃত রূপটি দৃশ্যমান হয় গ্রামে। একসময় গ্রামবাংলায় চৈত্রসংক্রান্তি ছিল প্রধান উৎসব। বছরের শেষ দিনে তেতো খাবার খেয়ে শরীর শুদ্ধ করতেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। নির্মল চিত্তে প্রস্তুত হতেন নতুন বছরে প্রবেশ করার জন্য। এখনও বৈশাখ বরণের অংশ হিসেবে বাড়িঘর ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করেন গৃহিণীরা। অদ্ভুত মুন্সিয়ানায় আল্পনা আঁকেন মাটির মেঝেতে। খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন সবাই। স্নান সারেন। নতুন পোশাক পরেন। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীর বাড়িতে বেড়াতে যান। ঘরে ঘরে সাধ্যমতো বিশেষ খাবার রান্না করা হয়। থাকে পিঠা-পুলির আয়োজন। আজ হাটে-মাঠে-ঘাটে বসবে ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা। নানা রকম কুটির শিল্প, খেলনা, মিষ্টিসহ বাহারি পণ্যে স্টল সাজানো হবে। বিভিন্ন এলাকায় থাকবে নৌকাবাইচ, লাঠিখেলা কিংবা কুস্তির মতো ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। নাগরিক জীবনেও বিপুল আনন্দ যোগ করে পহেলা বৈশাখ। বর্ষবরণের দিন সব শহরেই আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য উৎসব অনুষ্ঠানের। ধর্ম-বর্ণ ভেদ ভুলে অসাম্প্রদায়িক উৎসবে মাতে বাংলা। ষাটের দশকে বাঙালী চেতনাবিরোধী অবস্থানের প্রতিবাদে রাজধানী শহর ঢাকার রমনা বটমূলে শুরু হয় বৈশাখ উদ্যাপন। এর মাধ্যমে বাঙালী আপন পরিচয়ে সামনে আসার সুযোগ পায়। পরবর্তী সময়ে বাঙালীর রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে উত্থান ঘটে পহেলা বৈশাখের। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিবসটি বর্তমানে বাঙালীর জাতিসত্তায়, চেতনায় ও অনুভবের জগতে গভীরভাবে বিরাজ করছে। এ প্রসঙ্গে ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের বলাটি চমৎকার। তিনি বলেছেন, আমাদের অধুনাতম নববর্ষ এ দেশের গ্রীষ্মকালীন উৎসব ও কৃষি উৎসব উদ্যাপনের একটি বিবর্তিত নব সংস্করণ। এর এতিহ্য প্রাচীন কিন্তু রূপ নতুন, নতুন সংস্কার, নতুন সংস্কৃতি, নতুন চিন্তাধারা অবারিত স্রোতে যুক্ত হয়ে সৃষ্টি করেছে এমন এক নতুন আবহ যাকে একটা দার্শনিক পরিম-ল বলে উল্লেখ করতে হয়। এ পরিম-লে পুরাতন বিলীন জীর্ণস্তূপ নিশ্চিহ্ন, মিথ্যা বিলুপ্ত ও অসত্য অদৃশ্য। আর নতুন আবির্ভূত নবজীবন জাগরিত সুন্দর সম্মিত ও মঙ্গল সম্ভাবিত কালবৈশাখীই এর প্রতীক। সে নববর্ষের অমোঘ সহচর। নবসৃষ্টির অগ্রদূত সুন্দরের অগ্রপথিক ও বিজয়কেতন। ছায়ানটের সঙ্গে দিন শুরু প্রতিবারের মতোই দিনের শুরুটা হবে ছায়ানটের সঙ্গে। এবার ঐতিহাসিক আয়োজনের পঞ্চাশতম বর্ষ। আবেঘন আয়োজনের শুরু হবে ভোর ৬টা ১০ মিনিটে। রাজরূপা চৌধুরীর সরোদের সুরে জেগে উঠবে রমনা বটমূল। ছায়ানটের শিল্পী শিক্ষক ও শিক্ষার্থী শিল্পীদের কণ্ঠে পরিবেশিত হবে ১০টি সম্মেলক গান। একক কণ্ঠে গাওয়া হবে ১৪টি। গাইবেন চন্দনা মজুমদার, খায়রুল আনাম শাকিল, মিতা হক, ইফ্্ফাত আরা দেওয়ান, মহিউজ্জামান চৌধুরী ময়না, নাসিমা শাহীন ফ্যান্সিসহ খ্যাতিমান শিল্পীরা। সব মিলিয়ে ১৬০ জন কণ্ঠশিল্পী বর্ষববরণের গান গাইবে। দুই ঘণ্টার আয়োজনে থাকবে রবীন্দ্রসঙ্গীত নজরুল গীতিসহ পঞ্চকবির গান। পাঠাবৃত্তি, পালাগান পরিবেশিত হবে। থাকবে বাউল সাধক লালন সাঁইয়ের গান। সব শেষে দিকনির্দেশনামূলক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন ছায়ানট সভাপতি সন্্জীদা খাতুন। জাতীয় এই উৎসব চলবে সকাল ১০টা পর্যন্ত। সারা দেশে মঙ্গল শোভাযাত্রা এবার প্রথমবারের মতো সারা দেশ থেকেই বের করা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ইউনেস্কোর স্বীকৃতি অর্জনের ধারাবাহিকতায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ সকালে দেশের প্রায় সব স্কুল ও কলেজ থেকে বের করা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। ঢাকার মূল আয়োজনটি শুরু হবে ছায়ানটের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কিছু পরে। শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে বের হয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল চত্বর ঘুরে টিএসসি প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চারুকলায় এসে শেষ হবে। শোভাযাত্রার এবারের প্রতিপাদ্যÑ আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর। ২৯তম মঙ্গল শোভাযাত্রায় রাখা হবে লোক ঐতিহ্যের ১২টি বিশাল শিল্প কাঠামো। মূল শিল্প কাঠামোটিতে দৃশ্যমান হবে ২৫ ফুট উচ্চতার সূর্যমুখ। এর এক প্রান্তে থাকবে হাস্যোজ্জ্বল মুখশ্রী আর অন্য প্রান্তে অশুভ মূর্তি। এভাবে মানুষের অন্তনির্হিত দুটি রূপ তুলে ধরা হবে। থাকবে ছোট ছোট আরও ১৬টি হাস্যোজ্জ্বল সূর্য মুখ। শোভযাত্রায় রাখা হবে ময়ূরপঙ্খী নাও। এই শিল্প-কাঠামোটির উচ্চতা ২৫ ফুট। প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা থেকে নেয়া স্ট্রাকচারাল ফর্মগুলোর মধ্যে থাকবে হাতি, ঘোড়া, বাঘ, ও টেপা পুতুল। শিশুপার্কের সামনে থাকবে ঋষিজ ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে শিশুপার্কের পাশে নারকেলবিথী চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে ‘জাগো নব আনন্দে’ শীর্ষক বর্ষবরণ উৎসব। আয়োজনের শুরুতেই দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেবে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। এরপর আসামের শিলচরের নৃত্যদল নৃত্যায়ন নৃত্য পরিবেশন করবে। আলোচনা ও সংবর্ধনা শেষে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে একক কণ্ঠে লোকসঙ্গীত পরিবেশন করবেন মীনা বড়ুয়া, আবু বকর সিদ্দিক, অনিমা মুক্তি গোমেজ, আবিদা রহমান সেতু, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, হালিমা খাতুন। একক কণ্ঠে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ফকির আলমগীর, ভারতের কমালীকা চক্রবর্তী ও অমিতাভ মুখোপাধ্যায়, সুমী আক্তার, সুমী শবনম, হালিম খান ও সমর বড়ুয়া। বাউলদের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ আয়োজন। এবারের আয়োজন উৎসর্গ করা হয়েছে কবি সব্যসাচী সৈয়দ শামসুল হক, কবি শহীদ কাদরী, মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত উদ্দিন বীরবিক্রম এবং পশ্চিমবঙ্গের লোকসঙ্গীতশিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যকে। ঋষিজের বর্ষবরণের ৩৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার চার গুণীকে সম্মাননা জানানো হবে। তারা হলেনÑ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক রথীন্দ্রনাথ রায় ও উমা খান, সাংবাদিক-গীতিকার ফকরে আলম এবং কবি নাসির আহমেদ। হাজারও কণ্ঠে বর্ষবরণ হাজারও কণ্ঠে কোটি বাঙালীর বর্ষবরণ উৎসব আয়োজন করা হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। চ্যানেল আই ও সুরের ধারার অনুষ্ঠান সূর্যোদয় থেকে শুরু করে বেলা বারোটা পর্যন্ত একটানা চলবে। রাষ্ট্রপতির বাণী ॥ নববর্ষ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ দেশবাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, বৈশাখ শুধু ঋতুচক্রমনের ধারাবাহিকতা নয় বরং আমাদের ঐতিহ্যচেতনারই নাম। শুধু সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও বাংলা নববর্ষ উৎসবের কোন তুলনা হয় না। অতীতের সব গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে ঐক্য ও সংহতি আরও সুদৃঢ় করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি। প্রধানমন্ত্রীর বাণী ॥ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পহেলা বৈশাখে বাঙালী সংস্কৃতির যে চর্চা হয় তা আমাদের জাতিসত্তাকে আরও বিকশিত করে। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি যোগায়। শেখ হাসিনা বলেন, বর্ষবরণের উৎসবে এ চেতনাকে নস্যাত করার জন্য স্বাধীনতার আগে ও পরে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। আঘাত করা হয়েছে বার বার। বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক শক্তির কোন অপচেষ্টাই সফল হয়নি। বাঙালী জাতি নববর্ষকে ধারণ করেছে তার জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হিসেবে। নববর্ষে রাজনীতির নামে আগুনে পুড়িয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা ও দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী অপশক্তির বিরুদ্ধে বাঙালীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাণী ॥ নববর্ষ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নতুন বছরে দেশকে আরও এগিয়ে নিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাণী ॥ নববর্ষ উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সুদীর্ঘকাল ধরে নতুন আঙ্গিক, রূপ, বর্ণ ও বৈচিত্র্য নিয়ে বাঙালীর জীবনে বারবার ঘুরে আসে পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ আমাদের গর্বিত ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়, এ দিন জেগে ওঠে জাতির আত্মপরিচয়।
×