ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিংশ শতাব্দীর ক্রিকেট খেলে পাকিস্তান ॥ আর্থার

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ১৪ এপ্রিল ২০১৭

বিংশ শতাব্দীর ক্রিকেট খেলে পাকিস্তান ॥ আর্থার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত এক যুগ ধরে অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট। বিশেষ করে ২০০৯ সাল থেকে দেশের মাটিতে কোন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন করতে না পারার কারণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকতে হয়েছে তাদের। কিন্তু এর মধ্যে দিয়েও দলটি একেবারে ধসে পড়েনি। বরং গত বছর উঠেছিল আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে। তবু দলকে নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না প্রধান কোচ মিকি আর্থার। গত বছর দলটির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আর্থারের মনে হয়েছে পাকরা আধুনিক ক্রিকেটকে গ্রহণ করতে পারেনি। এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের ক্রিকেট খেলার ধরনটা রয়ে গেছে বিংশ শতাব্দী ধারায়। এই ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন আর্থার। পাকদের গ্রহণ করতে হবে ক্রিকেটের চলমান রীতি। ১২ মাস ধরে পাকিস্তান ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত আর্থার। পাক ক্রিকেট সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সঙ্গে অন্য আন্তর্জাতিক দলগুলোর ওপরও এর প্রভাব পড়ছে। আর সেটা দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বেশ পরিষ্কারভাবেই পর্যবেক্ষণ করছেন আর্থার। তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘এটা শুধু ড্রেসিং রুমে সীমাবদ্ধ থাকার মতো কোন আলোচনা নয়। আমি খেলোয়াড়দের বলেছি যে আমরা যে ক্রিকেট খেলি সেটা বিংশ শতাব্দীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আমরা এখন পর্যন্ত আধুনিক ক্রিকেট খেলাটাকে গ্রহণ করতে পারি নাই।’ নানাবিধ কারণে পাক ক্রিকেট পুরনো যুগেই পড়ে আছে। সেই কারণগুলো অন্য দেশের ক্ষেত্রে নেই। এ বিষয়ে আর্থার বলেন, ‘আধুনিক ক্রিকেটের ছোঁয়া না লাগার অনেকগুলো কারণ আছে। যেমন ঘরের মাটিতে খেলতে না পারা, আইপিএলের মতো বড় আসরগুলোয় প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ না থাকা। অথচ বিশ্বের সবগুলো দলই আইপিএলে তাদের ক্রিকেটারদের খেলাতে পারছে। এ কারণে অনেকগুলো বিষয়কে আমাদের সমাধান করতে হবে। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে যখনই আমরা দেশের মাটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাব, বিভিন্ন দেশের বড় বড় ঘরোয়া আসরে খেলতে পারব তখনই শুধু আধুনিক ধারার ক্রিকেটটাকে ছুঁতে সক্ষম হব।’ আর্থারের দৃষ্টিতে আধুনিক সময়ে যেমন সবগুলো দেশেই অন্তত একজন হলেও ‘পাওয়ার হিটার’ ব্যাটসম্যান থাকেন। সেটা পাক ক্রিকেটে অনুপস্থিত। সেটা আগাগোড়া পুরো একাদশেই নেই। জিম্বাবুইয়ে ছাড়া বাকি টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে বর্তমানে পাকিস্তান দলেরই প্রথম ও শেষ পাওয়ার প্লে-গুলোতে রানরেট সর্বনিম্ন। আর্থার মনে করেন এ বিষয়টি দিনের পর দিন শুধু কোচিং করিয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে উন্নতি করা সম্ভব হবে না। বিষয়টি সময়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যত সুযোগ পাবে খেলোয়াড়রা, যত প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়বে ততোই তারা উন্নতি লাভ করবে এবং পরিণত হবে এ বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে। আর্থার বলেন, ‘পাওয়ার হিটারের অভাবটা বড় এক দুঃশ্চিন্তা। আমরা যখন ভাল উইকেটে খেলতে নামি অন্য দেশগুলোর সঙ্গে মানিয়ে উঠতে পারি না। অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে সবসময় আমরা ২০/৩০ রান পিছিয়ে শুরু করেছি। কারণ শেষ ১০ ওভারে তারা অনেক বেশি রান তুলতে পারে। দলগুলো বর্তমান সময়ে অন্তত ১০০ রান তোলে শেষ ১০ ওভারে। সেখানে আমাদের সর্বোচ্চ ৭০ রান আসে। এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সেদিন টি২০ ম্যাচের শেষ ৫ ওভারে আমরা বলপ্রতি রানও নিতে পারিনি। এটা অবশ্যই ভাল কিছু নয়। এটা কোনভাবেই আমাদের ম্যাচ জেতার জন্য পর্যাপ্ত হতে পারে না। বিষয়টা খুবই হতাশার।’
×