ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর রেকর্ড

প্রকাশিত: ০৫:০২, ১৪ এপ্রিল ২০১৭

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর রেকর্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বর্তমান ফিফা সেরা ফুটবলার, ব্যালন ডি’অরও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর শোকেসে। যাকে বলা হয় গোলমেশিন। অথচ সেই সি আর সেভেনের সাম্প্রতিক সময়টা কাটছিল ঘোরতর সঙ্কটে। গোল যেন সোনার হরিণ হয়ে গিয়েছিল। আগের পাঁচ ম্যাচে গোল পেয়েছিলেন মাত্র একটা। কিন্তু অদম্য লৌহ যার মানসিকতা, তাকে কি আর আটকে রাখা যায়। যায়ওনি। আবারও স্বরূপে ফিরেছেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ সুপারস্টার। বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জ্বলে ওঠেন তিনি। রোনাল্ডোর জোড়া গোলে ভর করেই সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর ইতিহাসের প্রথম ফুটবলার হিসেবে ইউরোপিয়ান ক্লাব প্রতিযোগিতায় ১০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন পর্তুগীজ অধিনায়ক। ২০১৩ সালের এপ্রিলে ক্যারিয়ারের ৫০তম গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন রোনাল্ডো। তবে ৫০ গোল পেতে তাকে ৯৬ ম্যাচ খেলতে হয়েছিল। যেখানে স্পোর্টিং ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ৩২টি ম্যাচে তিনি গোল করেন মাত্র একটি। কিন্তু পরের ৫০টি গোল করতে তিনি ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ৪৭টি। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ১০০ গোলের মধ্যে রোনাল্ডোর ৯৭টি এসেছে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ থেকে। একটি গোল করেন বাছাইপর্বে। আর বাকি দুটি গোল এসেছে ইউরোপিয়ান সুপার কাপ থেকে। রোনাল্ডো আরেকটি বিরল রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার হিসেবেও গোলের সেঞ্চুরি করার সুযোগ তার সামনে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এখন পর্যন্ত তার গোলসংখ্যা ৯৭টি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে কে আগে গোলের সেঞ্চুরি করতে পারেন, মৌসুমের শুরু থেকে এমন একটা অলিখিত লড়াই ছিল মেসি-রোনাল্ডোর মধ্যে। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে রিয়াল তারকাই আগে করবেন। মেসির গোলসংখ্যা এই মুহূর্তে ৯৩টি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ক্যারিয়ারে ক্লাবগুলোর হয়ে মোট ১৩৬টি ম্যাচ খেলেছেন রোনাল্ডো। মেসি খেলেছেন ১১৪টি। পেনাল্টি থেকে দু’জনেই সমান ১১টি করে গোল করেন। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের হ্যাটট্রিকে রোনাল্ডোর থেকে মেসি এগিয়ে। মেসি হ্যাটট্রিক করেছেন সাতবার। রোনাল্ডো পাঁচবার। ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ গোলের কীর্তি গড়ার পর রোনাল্ডো ভাসছেন প্রশংসায়। সি আর সেভেনও খুশি। আর নিন্দুকদেরও নিয়েছেন একহাত। ম্যাচ শেষে রোনাল্ডো বলেন, জানি না কারা আমার সামর্থ্য নিয়ে সন্দেহ করে। তবে রোনাল্ডোকে যারা ভালবাসে, তারা কখনই সন্দেহ করেনি। আমাকে ওদের নাম বলুন যারা আমাকে নিয়ে সন্দেহ করে। এসব কথা আমি তো শুনিনি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির চেয়ে এই লড়াইয়েও এগিয়ে তিনি। তবে পর্তুগীজ সুপারস্টার বেশি খুশি কীর্তিটা বেয়ার্ন মিউনিখের মতো দলের বিরুদ্ধে হওয়ায়। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, আমি খুশি। আমি এই রেকর্ডটা করতে চেয়েছিলাম। এটা অনেক বড় সম্মানের। আর বেয়ার্নের মতো দলের বিরুদ্ধেই সেটি ছুঁতে পারা তো আরও বড় কিছু। এরপর সামাজিক মাধ্যমে নিজের সতীর্থদের এই অর্জন উৎসর্গ করেছেন রোনাল্ডো। জানিয়েছেন, তার এই কৃতিত্বের পুরোটাই ভাগিদার সতীর্থরা। তাদের জন্যই একের পর এক অর্জনে সিক্ত হচ্ছেন। রোনাল্ডোর অর্জনে উচ্ছ্বাসিত রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। প্রিয় শিষ্যের প্রশংসা করে ফরাসী গ্রেট বলেন, ওর সামর্থ্য নিয়ে আমার কোন সংশয় নেই। অনেকেই অনেক কথা বলতে পারে। কিন্তু ও একজন গ্রেট ফুটবলার। সবারই কিছুটা খারাপ সময় যায়। ও হয়ত কিছু ম্যাচে গোল পায়নি। তার মানে সব শেষ হয়ে যাওয়া না। আসল মঞ্চেই রোনাল্ডো দেখিয়েছে নিজের মুন্সিয়ানা। বেয়ার্ন কোচ কার্লো আনচেলোত্তিও কাছ থেকে দেখেছেন রোনাল্ডোকে। কেননা এর আগে তিনি রিয়ালের কোচ ছিলেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আনচেলোত্তি বলেন, আমি জানি রোনাল্ডো কি করতে পারে। একাই খেলার ধারা পাল্টাতে পারে। ওর জন্যই রিয়াল দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে।
×