ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মালিকের সেঞ্চুরিতে সিরিজ পাকিস্তানের

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১৩ এপ্রিল ২০১৭

মালিকের সেঞ্চুরিতে সিরিজ পাকিস্তানের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১এ জিতে নিল সফরকারী পাকিস্তান। মঙ্গলবার গায়ানায় ছক্কা হাঁকিয়ে একই সঙ্গে নিজের সেঞ্চুরি ও দলের জয় নিশ্চিত করে ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখেন শোয়েব মালিক। অতিথিদের সাঁড়াশি বোলিং আক্রমণের মুখে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩৩ রানে থামে স্বাগতিকদের সংগ্রহ। জবাবে ৩৬ রানে ৩ উইকেট হারালেও দুর্দান্ত ব্যাটিংশৈলী উপহার দিয়ে ৪৩.১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে দলকে সহজেই জয়ের বন্দরে ভেড়ান দুই অভিজ্ঞ উইলোবাজ মোহাম্মদ হাফিজ ও মালিক। ১০১ রানের অপরাজিত ইনিংসের জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন মালিক। ১৯৯১ সালের পর ক্যারিবীয়দের কাছে কখনই ওয়ানডে সিরিজ হারেনি পাকিরা। ২৬ বছরের সাফল্যের সেই ধারাবাহিকতা এবারও অব্যাহত রাখল সরফরাজ আহমেদের দল। ফলে আলোচিত আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়েও দু’দলের অবস্থান আপাতত অপরিবর্তিতই থাকল। সাদামাটা রান তাড়ায় পাকিস্তানের শুরুটা অবশ্য মোটেই ভাল হয়নি। ইনিংসের প্রথম বলেই কামরান আকমলকে (০) হারায় সফরকারীরা। পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে লেগসাইডে খেলতে গিয়ে কাভার অঞ্চলে ক্যাচ তুলে দেন দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা এই ব্যাটসম্যান। একবার জীবন পাওয়া আহমেদ শেহজাদ ৩ রানের বেশি করতে পারেননি। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান বাবর আজম ব্যক্তিগত ১৬ রানে বোল্ড হওয়ার পথে গ্যাব্রিয়েলের বল টেনে আনেন স্ট্যাম্পে। নবম ওভারে পাকিস্তান তখন ৩৬/৩। এরপর এক জুটিতেই বদলে যায় চেহারা। হাফিজ ও মালিক মিলে এগিয়ে নেন জয়ের পথে। চতুর্থ উইকেটে ১১৩ রানের জুটি গড়েন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান। ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৮৬ বলে ৮১ রান করে হাফিজ আউট হলেও পাকিস্তানের জয় পেতে সমস্যা হয়নি। পঞ্চম উইকেটে ৮০ বলে ৮৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন মালিক ও অধিনায়ক সরফরাজ। শেষদিকে টানটান উত্তেজনা। তবে সেটি ম্যাচের ফল নিয়ে নয়, মালিকের সেঞ্চুরির সম্ভাবনায়। জয়ের জন্য পাকিস্তানের চাই ৪ রান, সেঞ্চুরি হতে মালিকের ৫। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক জেসন হোল্ডারকে মাথার ওপর দিয়ে উড়িয়ে মালিকের আনন্দ-উৎসব। একই শটে নিজের সেঞ্চুরি, দলের জয়। জয় শুধু ম্যাচে নয়, সিরিজেও। শেষের ওই ছক্কায় মালিক পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের নবম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ১০ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ১০১। গায়ানার মন্থর উইকেটের বিবেচনায় এক পেসার কমিয়ে তিন স্পিনার নিয়ে নেমেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কাজে লাগেনি সেটা। নতুন বলে দুই পেসারের দারুণ বোলিংয়ের পর আর কেউই প্রভাব ফেলতে পারেননি। এর আগে উইন্ডিজের হয়ে প্রথম ৮ ব্যাটসম্যানই ছুঁয়েছেন দু’অঙ্ক, কিন্তু কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। দুই ওপেনারকে শুরুতে হারানোর পর ক্যারিবীয়রা এগিয়েছে মন্থর গতিতে। ১ শ’ ছুঁতেই লেগে গেছে ৩০ ওভার। চতুর্থ উইকেটে ১০১ রানের জুটি গড়েন শাই হোপ ও জেসন মোহাম্মেদ। ৭১ রান করতে হোপ নষ্ট করেন ১১২ বল। প্রথম ম্যাচের নায়ক জেসন অবশ্য নিজের স্টাইলে ৫৯ করেন ৫ চার ও ২ ছক্কায়। শেষদিকে ঝড় তোলার ভিত গড়া হয়েছিল ওই জুটিতে। উইকেটও হাতে ছিল। কিন্তু পাকিদের দারুণ বোলিংয়ে সেই ঝড় আর ওঠেনি, উইকেট পড়েছে নিয়মিত। রানও হয়নি খুব বেশি। পাকিস্তানের হয়ে দুটি করে শিকার মোহাম্মদ আমির, জুনাইদ খান ও শাদাব খানের। সিরিজে উইন্ডিজকে ৩-০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করতে পারলে বাংলাদেশকে (৭ম, রেটিং ৯২) টপকে সাতে উঠে যেত পাকিস্তান (বর্তমানে ৮)। সেটি হয়নি, তবে সরফরাজদের রেটিং বেড়ে ৯০ (+৪) হয়েছে। ৮৩ (-১) রেটিং নিয়ে যথারীতি নবম স্থানে উইন্ডিজ। উল্লেখ্য, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শীর্ষ আটে থাকা দলগুলো সরাসরি ২০১৯ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। টেস্ট খেলুড়ে বাকি দুই দেশকে সহযোগী সদস্যদের সঙ্গে বাছাইয়ে অংশ নিতে হবে। স্কোর ॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৩৩/৯ (৫০ ওভার; লুইস ১৬, ওয়ালটন ১৯, পাওয়েল ২৩, হোপ ৭১, জেসন ৫৯, কার্টার ১১, হোল্ডার ১২, নার্স ১০*, পারমল ৮; আমির ২/৪১, জুনাইদ ২/৬০, হাসান ১/২৯, ইমাদ ১/২৪, শাদাব ২/৫৭)। পাকিস্তান ২৩৬/৪ (৪৩.১ ওভার; আকমল ০, শেহজাদ ৩, বাবর ১৬, হাফিজ ৮১, মালিক ১০১*, সরফরাজ ২৪*; গ্যাব্রিয়েল ২/৬০, হোল্ডার ১/৩৭, বিশু ০/৪২, নার্স ১/৪৯)। ফল ॥ পাকিস্তান ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ ও সিরিজসেরা ॥ মালিক (পাকিস্তান)। সিরিজ ॥ তিন ওয়ানডের সিরিজ পাকিস্তান ২-১এ জয়ী।
×