ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ॥ গৃহ ঋণের সীমা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১৩ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন ॥ গৃহ ঋণের সীমা বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গৃহ ঋণ দানকারী সংস্থা বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (বিএইচবিএফসি) গৃহ ঋণের সিলিং বাড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে ঋণের সুদের হারও কমানো হচ্ছে। বর্তমানে এই ঋণের সর্বোচ্চ সিলিং রয়েছে ৫০ লাখ টাকা। এটি বাড়িয়ে এক কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাড়ি নির্মাণের জন্য ঋণের সুদের হার বিদ্যমান ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৯ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গৃহ ঋণ দানকারী সরকারী এই সংস্থাটির প্রস্তাব সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেয়া হবে বলে জানা গেছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গৃহায়ন খাতে ঋণের সিলিং বাড়ানো ও ঋণের সুদের হার কমানোর বিষয়ে গতমাসে ব্যাংকিং বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে হাউস বিল্ডিংয়ের এই প্রস্তাব বিবেচনা করা হয় এবং ঋণের সিলিং বাড়ানো ও সুদের হার কমানোর বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হয়। এরপর আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে তা অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়। ঋণের সিলিং বাড়ানোর বিষয়ে হাউস বিল্ডিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কর্পোরেশনের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী এই প্রতিষ্ঠান হতে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণ নেয়া যায়। বর্তমানে রাজউক ও অন্যান্য নক্সা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় ৩ কাঠা প্লটে ৬/৭ তলা বাড়ি নির্মাণের জন্য নক্সা অনুমোদন করে থাকে। পি.ডব্লিউ. ডি সিডিউল-২০১৪ অনুযায়ী অত্র কর্পোরেশনের ঋণের সর্বোচ্চ সিলিং ৫০ লাখ টাকা দিয়ে একজন ঋণ গ্রহিতার পক্ষে ৩ কাঠার প্লটে দুই তলা বা আড়াই তলার বেশি নির্মাণ করা সম্ভব হয় না। ফলে একজন ঋণ গ্রহিতা ঋণে নির্মিত ভবনে নিজে বাস করে অবশিষ্ট অংশে ভাড়ার টাকা দিয়ে কর্পোরেশনের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেন না। সূত্র জানায়, কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় বন্ধক অনুমোদন দেয়ার নিয়ম প্রচলিত নেই। তা ছাড়া অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও দ্বিতীয় ঋণ অনুমোদন করে না। উল্লেখ্য, অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সিলিং বেশি থাকায় এবং কর্পোরেশনের ঋণের সিলিং ৫০ লাখ টাকা অপ্রতুল হওয়ার কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট মহানগরী এলাকায় ঋণ গ্রহিতারা ইচ্ছানুযায়ী বাড়ি নির্মাণ না করতে পেরে অন্যান্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এইচবিএফসি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট মহানগরী এলাকায় আবাসন খাতে কর্পোরেশন ঋণের প্রবাহ সঙ্কুচিত হয়ে উঠছে। তাই এই পরিস্থিতিতে ঋণের সিলিং বিদ্যমান ৫০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১ কোটি টাকা করা জরুরীভাবে প্রয়োজন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সার্কুলার অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবাসন খাতে ঋণের সিলিং সর্বোচ্চ এক কোটি ২০ লাখ টাকা। জানা গেছে, সংস্থাটির পক্ষ থেকে গৃহায়ন খাতে ঋণের সুদ বিদ্যমান ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৯ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে সুদের হার ১০ শতাংশ কমিয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ এবং ফ্ল্যাট ক্রয়ের ঋণ ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় এই সুদ কমানোর ব্যাপারেও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে। এটি ১০ শতাংশ করা হতে পারে।
×