ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন হুঁশিয়ারি উপেক্ষা

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ১৩ এপ্রিল ২০১৭

মার্কিন হুঁশিয়ারি উপেক্ষা

সিরিয়ায় গত সপ্তাহে গ্যাস হামলার জন্য দেশটির শাসক বাশার আল আসাদের সরকারই যে দায়ী মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস সে বিষয়ে নিশ্চিত। এদিকে ওই হামলা নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মস্কোকে দায়ী করেছে। এদিকে মার্কিন হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই সিরীয় বাহিনী মঙ্গলবার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত হামা প্রদেশে ব্যারেল বোমা ফেলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। খবর বিবিসি, সিএনএন, আরব নিউজ ও এএফপির। সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া ও সিরিয়ার কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। জি-৭ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছার চেষ্টা করেন। ব্রিটেন প্রাথমিকভাবে এই উদ্যোগে নিয়েছিল তবে সর্বশেষ খবরে জানা গেছে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হচ্ছে না। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইট বলেছে, মঙ্গলবার হামা প্রদেশে ব্যারেল বোমা ফেলেছে। তবে সিরিয়া সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন মস্কো সফরের আগে তিনি আরব মিত্র দেশগুলোর সঙ্গেও কথা বলেছেন। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে রাশিয়া ও সিরিয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শক্ত নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। গত সপ্তাহে সিরিয়ার ইদলিবের খান শেইখুন শহরে রাসায়নিক হামলার পর পরিস্থিতি নতুন দিকে মোড়। এ হামলার জন্য সিরিয়া ও তার মিত্র রাশিয়াকে দায়ী করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। তবে রাশিয়া ও সিরিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, বিদ্রোহীরাই রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে। যদিও রাসায়নিক হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ান বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে কড়া প্রতিবাদ জানায় মস্কো। রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন খান শেইখুন গ্যাস হামলার নিন্দা করে জাতিসংঘের মাধ্যমে এর তদন্ত দাবি করেছেন। এ বিষয়ে বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে তদন্ত দলকে পূর্ণ সহযোগিতা করার জন্য সিরিয়ার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া তিনি ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্র থাকার ভুয়া খবরের ওপর ভিত্তি করে ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসন চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেন। মঙ্গলবার ইতালি জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন সিরিয়া থেকে রাসায়নিক অস্ত্র নির্মূল করতে ব্যর্থতার জন্য রাশিয়াকে দোষারোপ করেন। সেইসঙ্গে শান্তি আলোচনাতেও রাশিয়া অগ্রগতি করতে পারেনি বলে তিনি সমালোচনা করেন। রাশিয়াকে একটি আলটিমেটামও দিয়েছেন টিলারসন। তিনি বলেছেন, আসাদ সরকার, ইরান এবং হিজবুল্লাহর সঙ্গে মিত্রতা রাখা যাবে কিনা সে বিষয়টি রাশিয়াকে অবশ্যই ভেবে দেখতে হবে। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হেইলি সিএনএন সংবাদ সংস্থার একটি সাক্ষাতকারে বলছেন যে, আসাদ ক্ষমতায় থাকাকালীন সিরিয়ায় শান্তি আসবে না। দৃশ্যত সিরিয়ায় সরকার বদলাবে বলে মার্কিন প্রশাসন আশা করছে না। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্র আসাদের অপসারণ দাবি করে এসেছে। কিন্তু ট্রাম্প সেই দাবি থেকে কিছুটা সরে এসেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। এমনকি খান শেইখুনের রাসায়নিক আক্রমণের আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে বলতে শোনা গেছে যে, সিরিয়ার জনগণের আসাদের ভাগ্য নির্ধারণ করা উচিত। খান শেইখুনের আক্রমণের পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার বিমানবাহিনীর সারিয়েত বিমানঘাঁটির ওপর টোমাহক মিসাইল নিক্ষেপের নির্দেশ দেন যা শুক্রবার ভোরবেলা ঘটে এবং সিরিয়ায় মার্কিন নীতির খোলনলচে পাল্টে দেয়। ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ আর ম্যাকমাস্টার তার প্রথম টেলিভিশন সাক্ষাতকারে রাশিয়ার প্রতি আসাদকে সমর্থনের পুনর্মূল্যায়ন করার ডাক দিয়েছেন।
×