ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লোকবল সঙ্কটে ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ১২ এপ্রিল ২০১৭

লোকবল সঙ্কটে ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারে লোকজনের ঘাটতি আছে। যত স্টাফ তাঁর থাকা দরকার তা নেই। এ নিয়ে তাঁকে বেশ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আবার লোক নেয়া নিয়েও দস্তুর মতো হিমশিমও খেতে হচ্ছে। প্রায় দু’মাস হতে চলল ট্রাম্পের পররাষ্ট্র দফতরের ইউরোপীয় বিষয়ক কোন সহকারী মন্ত্রী নেই বা ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোন দূত নেই। বাণিজ্য ও অর্থ দফতরে আন্তর্জাতিক বিষয়ক কোন আন্ডার সেক্রেটারি নেই। পেন্টাগনে পলিসি চীফ পদে তিনি এখনও লোকের সন্ধান করে চলেছেন। প্রশাসনের সর্বত্র লোকজনের সমাবেশ ঘটানোর কাজে তিনি ধীর পদক্ষেপে এগোচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিভিন্ন পদে নিযুক্ত দুই ডজনেরও বেশি ব্যক্তির কনফারমেশন আটকে রাখার জন্য প্রায়শই সিনেটের ডেমোক্রেট দলীয় সদস্যদের শাণিত সমালোচনা করছেন। নবনিযুক্তদের মধ্যে তিনজন কেবিনেট মন্ত্রীও আছেন। তবে ওয়াশিংটন পোস্ট ও পাটনারশীপ ফর পাবলিক সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী নির্বাহী শাখার গুরুত্বপূর্ণ যে ৫৩৫টি পদ আছে তার মধ্যে ৫০৫টি পদে ট্রাম্প এখনও কাউকে নিয়োগ দেননি। এসব পদের মধ্যে আছে বাণিজ্য দফতরের পেটেন্ট প্রধান থেকে শুরু করে হোয়াইট হাউসের বিজ্ঞান উপদেষ্টা পর্যন্ত পদ। পররাষ্ট্র দফতর থেকে শীর্ষ চার কূটনীতিক বিদায় নিয়েছেন। সেখানকার ১১৯টি পদের মধ্যে ৬টি পদে নিযুক্তির পিছনে সিনেটের অনুমোদন বাকি রয়ে গেছে। গত ১০ মার্চ প্রশাসন ওবামা যুগের সকল এ্যাটর্নিকে পদত্যাগ করতে বললে শূন্য পদের তালিকায় আরও ৪৬টি পদ যোগ হয়। লোকবলের এই ঘাটতির ব্যাপারটা যতটা না প্রশাসনের ত্রুটি তার চেয়ে বেশি হলো এটি ট্রাম্পের সরকার পরিচালনার নীতির অংশ। ট্রাম্পের একটা লক্ষ্য হলো ফেডারেল আমলাতন্ত্রের আকার ছেঁটে ফেলা। প্রশাসন যাদের বিশ্বাস করে না সেই শ্রেণীর সিভিল সার্ভেন্টদের বাদ দিয়েই তিনি অংশত ঐ লক্ষ্য অর্জন করার চেষ্টা করেছেন। প্রেস সেক্রেটারি শণে স্পাইসার গত ১৩ মার্চ সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছু কিছু সরকারী সংস্থার আজ প্রয়োজন নেই।’ পরিবেশ রক্ষা সংস্থার মতো অফিসগুলোতে ট্রাম্প প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে তাদেরকেই বেছে নিয়েছেন যারা এখন তাদের নেতৃত্বাধীন বিভাগের মূল কাজের বিরোধিতা করে এসেছে। একদিকে ট্রাম্পের দল প্রশাসনের লোকবল কাটছাঁট করছে অন্যদিকে হোয়াইট হাউস রাজনৈতিক অনুগতদের ওপর নির্ভর করছে। রক্ষণশীল বেতার প্রযোজক ন্যাম ক্লোভিস আইওয়াতে নির্বাচনী প্রচার কাজে ট্রাম্পের পরামর্শক ছিলেন। প্রেসিডেন্টের মনোনীত কৃষি সচিবের নিয়োগ সিনেটে অনুমোদিত না হওয়া অবধি ট্রাম্প তাকে এই বিভাগ চালিয়ে নিতে বলেছেন। শ্রম দফতরের শীর্ষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে কার্টিস এলিসকে। এই দফতরের মন্ত্রীর নিযুক্তি এখনও সিনেটের অনুমোদনের অপেক্ষায়। এই সেই কলামিস্ট কার্টিস এলিস যার লেখা ওয়েবসাইটে এমন মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়েছিল যে বারাক ওবামার জন্ম কেনিয়ায়। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী আরেকজন ম্যাট মউয়ার্সের স্থান হয়েছে পররাষ্ট্র দফতরের সপ্তম তলায়। রিপাবলিকান দলে তাঁর যেসব সমালোচক ছিলেন তাদের প্রতি এখনও বিরাগ ভাব পোষণ করেন ট্রাম্প। তাই হোয়াইট হাউসে তিনি সেসব লোককে আনতেই উদগ্রীব যারা বরাবরই তাঁর মিত্র হিসেবে থেকেছে। কিন্তু সেই লোকদের নিয়োগ দিয়ে জায়গামতো বসাতে তিনি যথেষ্ট মন্থরতার পরিচয় দিচ্ছেন। ন্যাশনাল ওশেনিক এ্যান্ড এটমোসফেরিক এডমিনিস্ট্রেশন পরিচালনার জন্য তিনি এখনও পর্যন্ত কাউকে খুঁজে পাননি। ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি নামে একটি সংস্থা আছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই সংস্থা স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা দফতরের ত্রাণ সাহায্যের ডাকে সাড়া দেয়। সেই সংস্থার প্রধান পদে ট্রাম্প এখনও কাউকে মনোনীত করতে পারেননি। সরকারের এইচআর বিভাগ হিসেবে পরিচিত পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট অফিসের স্থায়ী প্রধান পদেও তিনি কাউকে নিয়োগ দেননি। চলমান ডেস্ক সূত্র : টাইম
×