ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জাতীয় জাদুঘরে কবিতা পরিষদের কবি সাযযাদ কাদিরকে স্মরণ

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১২ এপ্রিল ২০১৭

জাতীয় জাদুঘরে কবিতা পরিষদের কবি সাযযাদ কাদিরকে স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ষাটের দশকের অন্যতম এক কবি সাযযাদ কাদির। কবি পরিচয়ের বাইরেও তিনি ছিলেন গবেষক, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক। সম্প্রতি প্রয়াত এই কবিকে স্মরণ করল জাতীয় কবিতা পরিষদ। মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় সাযযাদ কাদিরকে মূল্যায়ন করে বক্তারা বলেন, তিনি কবি হিসেবে যেমন সমধিক পরিচিত ছিলেন তেমনি গল্প, উপন্যাস, নাটক, গবেষণাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। লেখালেখির জগতে বিচিত্র সব বিষয়ে অবাধ বিচরণ ছিল তার। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও তিনি সমান জনপ্রিয়। বর্তমান অনেক তরণ সাংবাদিক তার হাতে গড়ে উঠেছেন। সাযযাদ কাদিরকে নিবেদিত বিশিষ্টজনদের আলোচনা, স্মৃতিচারণ ও কবিতার শিল্পিত উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সাজানো হয় স্মরণের এ আয়োজন। স্মরণসভায় কবি ও সাংবাদিক সাযযাদ কাদিরের কর্মময় বর্ণিল জীবনের স্মৃতিচারণ করেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, নুহ-উল-আলম লেনিন, কাজী রোজী, আনোয়ারা সৈয়দ হক, শিহাব সরকার, চলচ্চিত্র গবেষক অনুপম হায়াৎ, আজিজুর রহমান আজিজ, ড. এম মোস্তাকুল হক, মুস্তাফা মজিদ ও আহমাদ মাযহারসহ অনেকে। স্বাগত বক্তৃতার পাশাপাশি সাযযাদ কাদিরে বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত। সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সভাপতি ড. মুহাম্মদ সামাদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আমিনুর রহমান সুলতান। বাচিকশিল্পী আশরাফুল আলমের কণ্ঠে সাযযাদ কাদিরে লেখা কবিতা ‘শূন্যতার বুকে’ পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর ‘সন্ধ্যামুখ’ শিরোনামে আরেকটি কবিতা পাঠ করেন বাকশিল্পী লায়লা আফরোজ। ‘গান’ ও ‘শ্রাবণ ১৩৭৪’ নামে দুইটি কবিতা পাঠ করেন তামান্না সারোয়ার নীপা। সৈয়দ শহীদুল ইসলাম নাজু আবৃত্তি করেন ‘সময়নদী’। এ ছাড়া আরও আবৃত্তি করেন প্রবীর পাল, শেখ সাদী মারজান, নাহার ফরিদ খান, হানিফ খান, রোকেয়া ইউসুফ, হাফিজ উদ্দীন আহমেদ, গিয়াস উদ্দিন চাষা, তন্দ্রীনাথ রায়, হাসনাইন মাহাদি, আহমেদ কালাম রইসি, সঞ্জয় কবির, বোরহান উদ্দিন আহমেদ, কামরুজ্জামান, শিশির বিন্দু প্রমুখ। স্মৃতিচারণে বক্তারা বলেন, তিনি ছিলেন একজন জীবন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া। হেন বিষয় ছিল না যা তিনি জানতে না। কেউ কোন কিছু লিখতে বা জানতে গিয়ে আটকে গেলে তার শরণাপন্ন হতেন। তিনিও অবলীলাক্রমে সহযোগিতা করতেন। তিনি ছিলন বহুমাত্রিক লেখকের অধিকারী। লেখার মধ্য দিয়ে কঠিন বিষয়কে তিনি খুব সহজে প্রকাশ করতে পারতেন। তার এভাবে চলে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পূরণ হওয়ার জন্য। বক্তারা আরও বলেন, সাযযাদ কাদির জাতীয় পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক ছিলেন ও বর্তমানে সভাপতিম-লীর সদস্য ছিলেন। তিনি অভিভাবকের মতো কবিদের আগলে রাখতেন। একজন লেখক ও সাংবাদিক হিসেবে তার যে ভাষাজ্ঞান ছিল, সেটা তুলনামূলকভাবে কম মানুষের মধ্যে দেখা যায়। তার মৃত্যু বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। সৈয়দ বদরুদ্দিন হোসাইন স্মৃতি নাট্যোৎসবের সমাপ্তি পদাতিক নাট্য সংসদের আয়োজনে ‘সকল বৈষম্যের উর্ধে জাগোরে নবীন প্রাণ’ এ প্রতিপাদ্যে গত ৫ এপ্রিল শুরু হয় সৈয়দ বদরুদ্দীন হোসাইন স্মৃতি নাট্যোৎসব। উৎসবের শেষদিন ছিল মঙ্গলবার। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন ও পরীক্ষণ থিয়েটার হলে দশ নাট্যদলের বারোটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। এছাড়াও প্রতিদিন নাট্যশালার বহিরাঙ্গনে পরিবেশিত হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন। বরাবরের মতো এবারও সৈয়দ বদরুদ্দিন হোসাইন স্মারক সম্মাননা প্রদান করা হয়। এবারে যা পেয়েছেন নাট্য ব্যক্তিত্ব প্রয়াত এস এম সোলায়মান (মরণোত্তর) ও লাকী ইনাম। উৎসবের শেষদিনে দুইটি নাটক মঞ্চস্থ হয়। এর মধ্যে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে নাগরিক নাট্যাঙ্গন মঞ্চস্থ করে ‘ক্রীতদাসের হাসি’। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের উপন্যাস অবলম্বনে এটির নাট্যরূপ দিয়েছেন হৃদি হক এবং নির্দেশনায় ছিলেন লাকী ইনাম। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেনÑ হাবিব বাহার, বিশ^জিৎ ধর, সুতপা বড়ুয়া, হৃদি হক, জুয়েল জহুর, কামরুজ্জামান রনি, আসিব চৌধুরি প্রমুখ। এবারের উৎসবে ঢাকার আটটি নাট্যদল অংশ নেয়। সেগুলো হলোÑ পদাতিক নাট্য সংসদ, আরণ্যক নাট্য দল, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়, থিয়েটার আর্ট ইউনিট, নাগরিক নাট্যাঙ্গন, প্রাচ্যনাট, বটতলা, বাতিঘর। ঢাকার বাইরে থেকে ময়মনসিংহের অন্বেষা থিয়েটার এবং দেশের বাইরে থেকে ভারতের কার্টেন কল অংশ নেয়।
×