ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাইবার হামলায় ব্যাংকের ১৭ কোটি ডলার চুরি

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১২ এপ্রিল ২০১৭

সাইবার হামলায় ব্যাংকের ১৭ কোটি ডলার চুরি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো একই কৌশলে সাইবার হামলা করে ভারতীয় এক সরকারী ব্যাংক থেকে ১৭ কোটি ডলার চুরির ঘটনা ঘটেছে। সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে পাঁচটি দেশের পাঁচটি এ্যাকাউন্টে ওই অর্থ পাঠানো হয়। অবশ্য গ্রাহক এ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলনের আগেই ওই অর্থ ফেরত নিতে সক্ষম হয়েছে ভারত। গত সোমবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি সিস্টেমে ম্যালওয়ার প্রবেশ করিয়ে সুইফট সিস্টেমে অর্থ লেনদেনের তথ্য নকল করে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করতে সক্ষম হয় সাইবার হামলাকারীরা। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের নিউইয়র্ক শাখায় একটি এ্যাকাউন্টে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের ওই অর্থ জমা ছিল। ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইউনিয়ন ব্যাংকেরও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত এ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ স্থানান্তর করে নিয়েছে হ্যাকাররা। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। ভারতের ইউনিয়ন ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয় জুলাইয়ে। এতদিন বিষয়টি গোপন রেখেছিল ভারত। এছাড়া গত বছর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মেক্সিকো ও পোল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। সবগুলোর হামলার ধরন ও প্রাপ্ত ম্যালওয়ারগুলো একই প্রকৃতির। বাংলাদেশের হামলার পেছনে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকার গ্রুপ জড়িত বলে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান অরুণ তিওয়ারীর বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যালওয়ার প্রবেশ করিয়ে হ্যাকাররা সুইফট সিস্টেমে লেনদেনের কোড কপি করে নেয়। পরবর্তীতে ওই কোড ব্যবহার করে ইউনিয়ন ব্যাংকের করেসপন্ডেন্ট নিউইয়র্কের সিটি গ্রুপ ব্যাংকের মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের একটি এ্যাকাউন্টে রক্ষিত ১৭ কোটি ডলার পাঁচটি দেশের পাঁচটি ব্যাংক এ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার একদিন পর গত ২১ জুলাই সিটি গ্রুপের ব্যাংকের একটি নির্দেশনা পেয়ে এক কর্মকর্তা জানতে পারেন পাঁচটি পরিশোধ নির্দেশের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন হয়েছে। এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নেয়ায় থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া অর্থ ফেরত আনে। এরপর ২৪ জুলাই হংকংয়ের যাওয়া অর্থ ফেরত আনতে সক্ষম হয় ইউনিয়ন ব্যাংক। অরুণ তিওয়ারী আরও বলেন, বাংলাদেশ ও আমাদের ক্ষেত্রে ম্যালওয়ার সক্রিয় করে স্বয়ংক্রিয় লগইন চালু করে হ্যাকাররা। উভয়ক্ষেত্রে কর্মকর্তার ই-মেইলের মাধ্যমে ম্যালওয়ার প্রবেশ করানো হয়েছে। অর্থ চুরি শেষে পুরো সিস্টেমকে অকেজো করে রাখে হ্যাকাররা।
×