ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইক্যুইটি মাল্টিপারপাস দুই কোটি টাকা নিয়ে উধাও

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১১ এপ্রিল ২০১৭

ইক্যুইটি মাল্টিপারপাস দুই কোটি টাকা নিয়ে উধাও

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, ১০ এপ্রিল ॥ ভুলতার গাউছিয়া মার্কেট এলাকায় ইক্যুইটি মাল্টিপারপাস গ্রাহকের ২ কোটি টাকা নিয়ে রাতের আঁধারে গা ঢাকা দিয়েছে। তবে কৌশলবাজ পরিচালকদের চাতুরতার কাছে হার মানছে স্থানীয় গ্রাহক। সূত্রে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ রূপগঞ্জ থানা উত্তরের আমির সমিতির সভাপতি ইস্রাফিল হোসেনের তত্ত্বাবধানে ও রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদের পরিচালনায় এ প্রতিষ্ঠানটিতে ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থানা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মিয়া। তারা গাউছিয়া মার্কেট এলাকায় ২০১১ সালে একটি সমবায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এ সময় ছাত্রশিবির কর্মী ইসলামপুর এলাকার ওসমান গণি, ভুলতা এলাকার রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে একটি জামায়াত শিবির চক্র এ প্রতিষ্ঠানটির হাল ধরে। এতে ছাত্রশিবির নেতাকর্মী ও জামায়াতের লোকদের রাখা হয় কর্মচারী হিসেবে। ইসলামী শরিয়াহর দোহাই দিয়ে স্থানীয় মুসলিম ব্যবসায়ী ও সাধারণ লোকজনকে প্রলুব্ধ করে অল্প দিনেই আদায় করে ২ কোটি টাকা আমানত। এসব টাকা কথিত ব্যবসায় খাটানোর কথা বলে স্থানীয় গ্রাহকদের আমানত জমা করে প্রথমে কিছু কিছু মুনাফা দিয়ে চমক লাগিয়ে দেয়। ফলে তাদের আমানত আদায় ক্রমেই বাড়তে থাকে। তবে দুই বছর না যেতেই ২০১৩ সালের ৯ মে সমিতির সদস্যরা গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এ সময় বাজারের লোকজন ইক্যুইটি কার্যালয় বন্ধ পেয়ে থানায় একাধিক অভিযোগ করেও তাদের খোঁজ পায়নি। জানা যায়, ইক্যুইটির ম্যানেজার রাসেল মিয়া মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমায়। ফলে ম্যানেজারের বাড়ি ঘেরাও করেও টাকার হদিস পায়নি গ্রাহকরা। তারা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ইস্রাফিল হোসেনের কাছে টাকা চাইতে গেলে মামলার ভয় দেখায়। নিজেকে আইনজীবী পরিচয়ে জামায়াত প্যানেল আইনজীবীদের সঙ্গে চেম্বার খুলে বসে। মাসে মাসে নিজের বাসা পরিবর্তন করায় তার আসল ঠিকানা খুঁজে পায় না গ্রাহকরা। তবে কেউ কেউ খুঁজে পেলেও মামলার ভয় দেখালে নিজের গচ্ছিত টাকা চাইতে গিয়েও হয়রানিয় শিকার হয় তারা। অপরদিকে সমিতির দায়িত্বে থাকা পরিচালক হারুন উর রশিদ একটি বেসরকারী স্কুলের শিক্ষকতা করলেও গ্রাহকের টাকার বিষয়ে কিছুই জানে না বলে দায় এড়িয়ে যায় সে। ফলে স্থানীয় গ্রাহকরা তাদের আমানত ফেরত পাওয়া নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছে। সূত্র জানায়, সমিতির সহসভাপতি ও জামায়াত নেতা খাইরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের শরিয়াহ আইন বুঝিয়ে রাখছেন। তার দাবি ব্যবসায় লোকসান হয়েছে তাই গ্রাহকরা টাকা পাবে না। এমন অদ্ভুত দাবির কাছে হার মানছে গ্রাহকরা। তাদের কিছুই করার নেই। উপজেলা সমবায় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা বলে একটি মহল মাল্টিপারপাস নামে অবৈধ ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তাদের নোটিস ও চিঠি দিয়েও সুরাহা করতে পারছে না প্রশাসন। তথাপিও রেজিস্ট্রিভুক্ত হয়েও গ্রাহকের টাকা বুঝিয়ে না দিয়ে চলে যাওয়াতে উদ্যোগ প্রকাশ করেন তারা।
×