ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘কুছ তো মিলা’

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১১ এপ্রিল ২০১৭

‘কুছ তো মিলা’

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী তিস্তা চুক্তির বিরোধিতায় অনড় থাকলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশ্বাসে ভরসা রাখতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মমতা তিস্তার পানি দিতে না চাইলেও বাংলাদেশে বিদ্যুত বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছেন। তার প্রতিক্রিয়ায় শেখ হাসিনা রসিকতার সুরে বলেছেন, ‘কুছ তো মিলা’। চার দিনের ভারত সফরের শেষদিন ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা একপর্যায়ে লিখিত বক্তব্যের বাইরে গিয়ে তিস্তা প্রসঙ্গে বলতে শুরু করেন হিন্দিতে। এ সময় করতালি আর হাসিতে মুখরিত হয়ে ওঠে ইম্পেরিয়াল হোটেলের মিলনায়তন। গত শনিবার দুই প্রধানমন্ত্রীর শীর্ষ বৈঠকের একপর্যায়ে মমতাকে ডাকা হলে তিনি তিস্তার পানির বদলে বাংলাদেশকে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহের প্রস্তাব দেন। আর ওই দিন রাতে দিল্লীর রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা সাংবাদিকদের বলেন, তিস্তার বদলে তোর্সাসহ কয়েকটি ছোট নদীর পানি দেয়ার প্রস্তাব করেছেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুঝে পাতা নেহি দিদিমণি (মমতা) কেয়া কারে গা। দিদিমণি কি সাথ মেরি বাত হুয়ি। ... তো উনুনে জো নয়া কুছ দেখা দিয়া। লেকিন, মোদিজী নে এ্যাসিওর কিয়া। হাম আভি বেয়ঠা হ্যায়, দেখনে কে লিয়ে উনুনে কেয়া কারে। লেকিন দিনিমণি এক কাম কিয়া। হাম ইলেক্ট্রিসিটি দেউঙ্গি। পানি মাঙ্গা, লেকিন ইলেক্ট্রিসিটি মিলা। আচ্ছা হ্যায়, কুছ তো মিলা।’ (আমি জানি না, দিদিমণি কী করবেন। দিদিমণির সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি নতুন এক প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে মোদিজী নিশ্চায়তা দিয়েছেন। আমিও বসে আছি দেখার জন্য, উনি কী করেন। কিন্তু দিদিমণি একটি কাজ করেছেন। বলেছেন, বিদ্যুত দেবেন। পানি চাইলাম, দিলেন বিদ্যুত। তাও ভাল, কিছু তো পেলাম।) ইংরেজীতে লিখিত বক্তব্যের ফাঁকে বাংলাতেও কিছু কথা বলেন শেখ হাসিনা। মমতা প্রসঙ্গের পর স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়েও তিনি হিন্দিতে কিছু কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তির প্রটোকল স্বাক্ষরকে একটি ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং ভারতের লোকসভায় সব দলের সম্মতিতে ওই চুক্তি অনুমোদনের বিষয়টিকে ‘মুক্তিযুদ্ধের মতো ঐতিহাসিক ঘটনা’ বলে অবিহিত করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারতীয় সেনারা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে রক্ত দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল।’ ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ভারতে নির্বাসিত জীবন কাটানোর কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘আমরা মুহূর্তে রিফিউজি হয়ে যাই। ইন্দিরা গান্ধী আমাদের ভারতে নিয়ে আসেন। প্রথম দু’-তিন বছর আমরা কারও সঙ্গে কথা বলা বা মেলামেশা করার মতো অবস্থায় ছিলাম না।’ এরপর যখন ভারতের বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন, তখন তাদের আন্তরিকতায় অভিভূত হয়েছিলেন বলে জানান হাসিনা। ‘দলমত নির্বিশেষে সবাই আন্তরিক ছিলেন। আপনাদের সহায়তা না পেলে আমাদের কী হতো তা জানি না।’
×