ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ভুয়া আইডির তালিকা পেলে বন্ধ করে দেবে

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ১১ এপ্রিল ২০১৭

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ভুয়া আইডির তালিকা  পেলে বন্ধ করে দেবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আপত্তিকর যে কোন ধরনের পোস্ট আবেদনের প্রেক্ষিতে অপসারণ করতে রাজি হয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। তারা আশ্বাস দিয়েছে, যে সব ভুয়া আইডি রয়েছে তার একটি তালিকা দিলে তারা তা বন্ধ করে দেবে। ধর্মীয় উগ্রবাদ, জঙ্গীবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে কথা বলতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিনিধিদল ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে। আলোচনার ভিত্তিতে এ সব বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে সোমবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ৩০ মার্চ ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে বলা হয়েছিল- ফেসবুকে আমাদের সংসদ সদস্যদের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি আছে। আমরা তালিকা পাঠালে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ভুয়া আইডিগুলো বন্ধ করে দেবে। এ জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্পীকারের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি এ তালিকা পাওয়া যাবে তত তাড়াতাড়ি তালিকা ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিষয়ে ফেসবুকে পোস্টদাতাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিনিধি দল যাবে। আমরা যা চেয়েছি প্রায় সব বিষয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সম্মত হয়েছে। আমরা চাওয়া এমন কোন বিষয়ের সঙ্গে তারা দ্বিমত করেনি। যদি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ সম্পর্ক বজায় রাখতে পারি তাহলে প্রয়োজনে তাদের কাছ থেকে যে কোন সুবিধা নেয়া যেতে পারে। এখন তারা কতটুকু বাস্তবায়ন করবে তা পর্যালোচনা বিষয়। তবে আশা করা যাচ্ছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা করবে। গত বছরের শুরু দিকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই সময়ও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ইতিবাচক সাড়া দিয়েছিল। তখন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আপত্তিকর কনটেন্ট ফিল্টারিংয়ের জন্য বাংলা ভাষায় অনুবাদ করতে একজন অনুবাদক নিয়োগ দেয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছিল। কিন্ত তারা বাংলাদেশে ফেসবুকের সার্ভার বসানোর বিষয়ে রাজি হয়নি। ফেসবুকের এ্যাডমিন অফিস ও অন্যান্য কার্যক্রমের ওপর আলোচনায় তারা কোন আশ্বাস দেয়নি। সূত্র জানিয়েছে, গত বছর থেকেই ফেসবুকে বাংলা ভাষায় পোস্ট করা আপত্তিকর স্ট্যাটাস ও মন্তব্য ইংরেজীতে অনুবাদ করে ফিল্টারিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর কনটেন্ট ব্যবহারকারীর তথ্য ও আইডি বন্ধে আবেদন করেও ভাষাগত কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে বাংলা ভাষার বেশ কিছু অভিযোগ ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। পরে ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা একজন অনুবাদক নিয়োগ দিয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিটিআরসি থেকে ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করা করেছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নারীর প্রতি হয়রানি, ধর্মীয় উস্কানি, রাজনৈতিক অস্থিরতার মতো বিষয়গুলো ঠেকাতে সরকার বেশ আগে থেকেই উদ্যোগ নিয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনার পর একটা জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। বর্তমানে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ শুধু আমেরিকার পেজগুলোই মনিটর করে। অন্য দেশের এ্যাকাউন্ট হোল্ডারদের কোন পোস্ট মনিটর করে না। অনেক আপত্তিকর বিষয় নিয়ে এর আগে বিটিআরসি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে। কিন্তু কোন অভিযোগ তারা আমলে নেয়নি। দু’একটা অভিযোগ আমলে নিলেও সেগুলোর জন্য তারা আদালতে মামলা হয়েছে কিনা তা জানতে চাইত। আবার মামলা হলেও মামলায় দোষী প্রমাণিত হয়েছে কিনা এমন সব কাগজপত্র চেয়ে বসত।
×