ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তুরিনে জুভেন্টাস-বার্সিলোনা মহারণ

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১১ এপ্রিল ২০১৭

তুরিনে জুভেন্টাস-বার্সিলোনা মহারণ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সেবার মঞ্চটা ছিল ফাইনাল। ২০১৫ সালে বার্সিলোনার কাছে ফাইনালে হেরেই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের শিরোপা বঞ্চিত হয়েছিল জুভেন্টাস। দুই বছর পর সেই হারের মধুর বদলা নেয়ার সুযোগ এসেছে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নদের। কেননা দল দুটি আরেকবার মুখোমুখি ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে। তবে এবারের মঞ্চটা ফাইনাল নয়, কোয়ার্টার ফাইনাল। তাতে কি! শেষ আটের এই লড়াই জিতেই সেমিফাইনালে নাম লেখাতে চায় ইতালিয়ান জায়ান্টরা। এ লক্ষ্যে এক ধাপ এগিয়ে যেতে আজ রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সিলোনার মুখোমুখি হচ্ছে জুভেন্টাস। নিজেদের মাঠ তুরিনের জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে এই মহারণ। দু’দলই ম্যাচটি জিততে চাইলেও সমীহ করছে একে অপরকে। ফরাসী লীগ ওয়ানের মোনাকো ও জার্মান বুন্দেসলিগার দল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড শেষ আটের আরেক ম্যাচে আজ রাতে মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি হবে ডর্টমুন্ডের মাঠে। ফরাসী চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইনকে (পিএসজি) রূপকথার মহারণে হারিয়ে সেরা আটে এসেছে স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সা। আর পোর্তোকে হারিয়ে টিকেট পেয়েছে ইতালিয়ান জায়ান্ট জুভেন্টাস। লুইস এনরিকের দলকে এখন শক্ত পরীক্ষাই দিতে হবে সেমির টিকেট পেতে। ২০১৪-১৫ মৌসুমের ফাইনালে বার্সিলোনার কাছে ৩-১ গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল আসরের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাসের। এবার প্রতিশোধ নেয়ার মোক্ষম সুযোগ পাচ্ছে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। প্রতিশোধের লক্ষ্যে এবার কোয়ার্টার ফাইনালেই পাঁচবারের ইউরোপ সেরা কাতালান ক্লাবটির মুখোমুখি হতে চেয়েছিলেন জুভেন্টাস ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চি। তার মনোবাসনাই পূরণ হয়েছে। বার্সা-জুভেন্টাস লড়াইয়ে আক্রমণভাগ ও রক্ষণভাগের লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন ফুটবল প-িতরা। তাদের মতে, বার্সার বিশ্ব খ্যাত আক্রমণভাগের সঙ্গে মধুর লড়াই হবে জুভেন্টাসের জমাট রক্ষণভাগের। স্বয়ং জুভ কোচ ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রি এমন আভাস দিয়েছেন। ইউরোপের দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও নেইমারে গড়া বার্সার আক্রমণভাগ। অন্যদিকে জুভেন্টাসের রক্ষণ ইউরোপের অন্যতম সেরা। ‘বিবিসি’ ত্রয়ী আন্দ্রেয়া বারজাগলি, লিওনার্দো বোনুচ্চি ও জর্জো চিয়েল্লিনিকে নিয়ে জমাট রক্ষণভাগের পেছনে আছেন অভিজ্ঞ গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন। চলতি মৌসুমে ইতালিয়ান সিরি এ লীগে ষষ্ঠ শিরোপার দিকে ছুটছে জুভেন্টাস। গোল কম খাওয়ার পরিসংখ্যানও বলছে দলটির রক্ষণভাগের সামর্থ্য। এ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে মাত্র দুটি আর লীগে ৩১ ম্যাচে ২০ গোল খেয়েছে তারা। ‘এমএসএন’ ত্রয়ী থাকলেও স্বাগতিকদের রক্ষণ ভাঙাটা কাতালানদের জন্য সহজ হবে না। এরপরও সমালোচনা সইতে হয় এ্যালেগ্রিকে। শুনতে হয় জয়ের জন্য দাপুটে ফুটবল না খেলে ফলের জন্য বিরক্তিকর খেলার অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে জুভেন্টাস কোচ বলেন, খুব ভালভাবে রক্ষণ সামলানোতে লজ্জার কিছু নেই। আক্রমণ করে খেলার মতো এটাও সুন্দর। যারা ফুটবলকে একটা শোতে রূপ দিতে পারে, তাদের জন্য আমি খুশি। কিন্তু আমার মনে হয়, আপনি যদি শো পছন্দ করেন, আপনার সার্কাস দেখতে যাওয়া উচিত। বল দখলে আধিপত্য বার্সিলোনা নিয়মিতই করে। কিন্তু এ্যালেগ্রি এ বিষয়েও ভাবেন নিজের মতো করে। বলেন, আপনি ৩৫ শতাংশ বল দখলে থাকলেন এবং গোলের সাত-আটটা সুযোগ সৃষ্টি করলেন। আর কোন ম্যাচে আপনি ৭০ শতাংশ বল দখলে থাকলেন এবং গোলমুখে তিনটি শট নিলেন। কোনটা ভাল? ইতালিয়ান কোচ বলেন, কোনকিছুই অসম্ভব নয়। সর্বোপরি কৌশলগতভাবে আমাদের নিখুঁত ম্যাচ খেলতে হবে। এগিয়ে যেতে পারি- এই বিশ্বাস নিয়ে খেলতে হবে। আক্রমণ এবং রক্ষণ-দুই ক্ষেত্রেই সেরা পর্যায়ে থাকতে হবে আমাদের। ফেবারিট হিসেবে নামলেও সবশেষ ম্যাচে হারে কিছুটা হলেও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত বার্সা। লা লিগায় মালাগার কাছে তারা হারে ২-০ গোলে। তবে এসব নিয়ে মোটেও ভাবছেন না দলটির কোচ লুইস এনরিকে। তিনি বরং প্রি কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে পিএসজির কাছে ৪-০ গোলে হারের পরও দ্বিতীয় লেগে ৬-১ গোলের জয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টি সামনে আনছেন। বার্সা বস বলেন, আমাদের একটা বাজে দিন গেছে। সেটা কাটিয়েও উঠেছি। আশা করছি সমস্যা হবে না। নিজেদের মাঠে জুভেন্টাস অত্যন্ত কঠিন প্রতিপক্ষ। তবে আমরা জয়ের জন্যই খেলব।
×