ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চুক্তির কোথায় দেশ বিক্রি হয়েছে প্রমাণ করতে না পারলে ক্ষমা চান

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১০ এপ্রিল ২০১৭

 চুক্তির কোথায় দেশ  বিক্রি হয়েছে প্রমাণ  করতে না পারলে  ক্ষমা চান

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ চুক্তির কোথায় দেশ বিক্রি কিংবা স্বার্থহানি হয়েছে তা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রমাণ করতে না পারলে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, চুক্তির লাইন বাই-লাইন পড়ে দেখুন কোথায় দেশ বিক্রি হয়েছে। দেশের স্বার্থহানি হয়েছে। আর যদি তথ্য-উপাত্ত দিয়ে এটা প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে জাতির কাছে আপনাদের ক্ষমতা চাইতে হবে। রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে সংগঠনটি। বিএনপি ১৭ এপ্রিল ও ৭ মার্চ পালন না করার সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ১৭ এপ্রিলের মধ্যেও কি ভারতের গন্ধ খুঁজে পান? এখানেও কি ইন্ডিয়া বিদ্বেষ? আসলে যারা ৭ মার্চ ও ১৭ এপ্রিল পালন করে না, তাদের বিবেক তো বিক্রি হয়ে গেছে পাকিস্তানের কাছে। তাদের হৃদয়ে ‘হৃদয়’ মিলে আছে ইসলামাবাদের সঙ্গে। কাজেই তারা কথায় কথায় দেশ বিক্রির কথা বলবে, এটাই স্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে ঐতিহাসিক দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারতের সঙ্গে যে চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেগুলো কোন গোপন বিষয় নয়। ভারতের সঙ্গে কি চুক্তি হয়েছে, এটা শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বই দেখেছে। এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোন সুযোগ নেই। তিস্তা চুক্তি প্রসঙ্গে বিএনপির বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একটু অপেক্ষা করুন। ধৈর্য ধরুন। তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের বিষয়টি আরও কয়েক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। চুক্তি সম্পাদন এখন সময়ের ব্যাপার। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমস্ত প্রটোকল ভেঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করেছেন। এ সম্মান শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের। আমাদের সম্মান আরও উঁচু হয়েছে শেখ হাসিনার সম্মানপ্রাপ্তির মাধ্যমে। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর অমীমাংসিত চুক্তিগুলো দ্রুত সম্পাদন করার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি ভারতের জনগণের নেতা। আমি আশা করব, উভয় দেশের জনগণের কথা ভেবে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর চুক্তিগুলো যত দ্রুত করা সম্ভব হবে, ততই মঙ্গল হবে। আপনি জনগণের আবেগ-অনুভূতিকে মূল্য দেবেন। অনতিবিলম্বে পানি চুক্তিগুলো সম্পাদন হলে আমাদের উভয়ের বন্ধুত্ব আরও নতুন মাত্রায় উন্নীত হবে। এটাই আমরা আশা করি। বিএনপির উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আমরা ভারতবিরোধী প্রপাগান্ডা নয়, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রজায় রেখে পাওনা আদায় করে নেব। বৈরিতা করে পাওনা আদায় করা যায় না। এখন কেন এত মনের জ্বালা, এখন কেন এত গাত্রদাহ। আমরা বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে, জাতীয় স্বার্থে যে কোন চুক্তি করে যাব। এতে কে কি মনে করল, আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা বিদেশী কোন শক্তিকে তোষণ করে ক্ষমতায় যেতে চাই না। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি দুইটি চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করছি। একদিকে পরিবহনে শৃঙ্খলা অন্যদিকে আওয়ামী লীগে শৃঙ্খলা। দলীয় শৃঙ্খলা ফিরে আনতে আমি যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি। আমার কোন পিছুটান নেই। নেত্রী আমাকে বড় আশা করে দায়িত্ব দিয়েছে, আমি তার মুখ রক্ষা করতে চাই। এ জন্য সকলের সহযোগিতা চাই। আওয়ামী লীগের ক্ষতি হলে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়ে যাবে। সাম্প্রতিক সময়ে অনৈক্যের কারণে মাশুল দিতে হয়েছে। আমরা আর অনৈক্যের কারণে মাশুল দিতে চাই না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেন, স্বপ্ন দেখা ভাল। দুঃস্বপ্ন দেখা ভাল নয়। ছেলেরা একাত্তরের অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। আর কোনদিন পাকিস্তানী সন্ত্রাসীদের বাংলার মাটি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনদিন অন্ধকার গলি পথ দিয়ে হাঁটে নাই। আমাদের আন্দোলনের কথা বলে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোঃ আবু কাওসারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সভা পরিচালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ এমপি।
×