ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম

রেলের জায়গা ফের দখল

প্রকাশিত: ০৫:০১, ১০ এপ্রিল ২০১৭

রেলের জায়গা ফের দখল

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ রেলের জায়গা অবৈধ দখল নিতে মরিয়া পরিবেশ অধিদফতর। বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার দফতর থেকে দফায় দফায় অভিযান পরিচালিত হলেও প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। ফলে রেলের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি উচ্ছেদের পর আবারও অবৈধ দখলে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি পরিবেশ অধিদফতরের অসাধু পরিচালকের নির্দেশে দুই কর্মচারীসহ বহিরাগত ছাড়াও রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সিন্ডিকেট উচ্ছেদকৃত জায়গা দখলে নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। অবৈধদের পক্ষ নিয়ে রেল শ্রমিক লীগের লোকমান গ্রুপ ও সিরাজ গ্রুপ বিভিন্ন সময়ে উচ্ছেদ অভিযান প্রতিহত করার নীলনক্সাও করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে নীতিমালা অনুযায়ী রেলের জায়গা বরাদ্দের আবেদন করেও বছরের পর বছর অপেক্ষা করার ঘটনা ঘটছে রেলের পূর্বাঞ্চলে। অপরদিকে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে পাহাড় কেটে পরিবেশ অধিদফতর সাড়ে ৩৩ একর জায়গা নামমাত্র মূল্যে কিনে আবার অবৈধভাবে তৎসংলগ্ন জায়গা দখলে নেয়ার পাঁয়তারা করছে। বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার নগরীর ঝাউতলার ফ্লোরাপাস সড়কসংলগ্ন বিশাল এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালান বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত রেজা। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, নাজিরহাট ও দোহাজারীমুখী রেললাইনের পাশেই দেড় শতাধিক স্থাপনা অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। নোটিস দেয়ার পরও অবৈধ দখলদাররা স্থাপনা সরিয়ে না নেয়ায় এ অভিযান পরিচালিত হয়। বুলডোজার দিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা ধূলিসাত করা হয়েছে। অপরদিকে ২২ মার্চ জাকির হোসেন রোডের পরিবেশ ভবনসংলগ্ন এলাকায় রেলের চীফ কন্ট্রোলার অব স্টোরসের অধীনে কর্মরত প্রিন্টিং বিভাগের কর্মচারী আতিকুর রহমান ও সীতাকু- স্টেশনে কর্মরত ওয়েম্যান নিজাম উদ্দিনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার অভিযান টিম। উচ্ছেদের পরপর পরিবেশ অধিদফতরের অসাধু পরিচালকের নির্দেশে গাড়িচালক মোশারফ হোসেন ও খোকন ওই ভূমি অবৈধ দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। পুনরায় রেলের জায়গা দখলে নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকলেও এসব অসাধু ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে পরিবেশ অধিদফতর ৩৩ দশমিক ৩৩ একর ভূমি নামমাত্র মূল্যে রেল থেকে ক্রয় করে পাহাড় কেটে স্থাপনা ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে। এমনকি পাহাড় কেটে পরিবেশ নিধন করার মতো ঘটনা ও পরিবেশের ভারসাম্যহানি করলেও জেলা প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এ ব্যাপারে বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও রেলওয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত রেজা জনকণ্ঠকে জানান, উচ্ছেদ অভিযান রেলের চলমান প্রক্রিয়া অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে। আইস ফ্যাক্টরি সড়ক এলাকায় ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের পেছনে প্রায় পাঁচ একর জায়গা অবৈধ দখলুমক্ত করা হয়। পুনরায় অবৈধ স্থাপনা তৈরি হচ্ছে এমন অভিযোগ ও পরিদর্শনের ভিত্তিতে আবারও আগামী ১৯ ও ২০ এপ্রিল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে।
×