ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শারাপোভার অপেক্ষায় পোরশে টুর্নামেন্ট

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৯ এপ্রিল ২০১৭

শারাপোভার অপেক্ষায় পোরশে টুর্নামেন্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি নিজেই স্বীকার করেছিলেন রাশিয়ান টেনিস তারকা মারিয়া শারাপোভা। সেটা টুর্নামেন্ট কমিটি প্রকাশ করেনি। তবে স্বর্ণকেশী এ সুন্দরী নিজেই সংবাদ সম্মেলন ডেকে মেলডোনিয়াম গ্রহণ এবং ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করেন। ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় তাকে। সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসেই। আবার টেনিসের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামছেন তিনি ২৪ এপ্রিল পোরশে টেনিস গ্রাঁ প্রিঁ টুর্নামেন্ট দিয়ে। পেয়েছেন ওয়াইল্ড কার্ড। যদিও নিষেধাজ্ঞা উঠবে ২৬ এপ্রিল। বর্তমান ও সাবেক অনেক তারকাই এর বিরোধিতা করছেন। তবে সাবেক বিশ্বসেরা যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণকন্যা ভেনাস উইলিয়ামস ২৯ বছর বয়সী শারাপোভার ফেরার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন বিষয়টা দারুণ হবে এবং বিশ্ব টেনিসের জন্যই ইতিবাচক মনোভাবের তৈরি করবে। চিকিৎসার জন্য ১০ বছর ধরেই ওষুধটি গ্রহণ করতেন শারাপোভা। তবে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ব ডোপবিরোধী সংস্থার (ওয়াডা) নিষিদ্ধ ওষুধের তালিকায় মেলডোনিয়ামকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কারণ বিশেষ কিছু চিকিৎসার জন্য বেশ ফলদায়ক হলেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মেলডোনিয়াম রক্তে উদ্দীপনা ও শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটায়। ওয়াডার দাবি ডিসেম্বরেই শারাপোভাকে মেলডোনিয়াম গ্রহণে বিরত থাকার ব্যাপারে বলা হয়েছিল। তবে শারাপোভা দাবি করেন তিনি বিষয়টি জানতেনই না। তবে শেষ পর্যন্ত ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় শারাপোভাকে। গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শেষ হওয়ার পরের ঘটনা এগুলো। সাড়া পড়ে গিয়েছিল বিশ্বব্যাপী। সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক চলেছে শারাপোভার পক্ষে-বিপক্ষে। টেনিস ক্যারিয়ার হুমকির মুখে পড়ে সাবেক এ বিশ্বসেরা তারকার। বিশ্বের নামকরা সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়। এত নিগৃহীত ও সমালোচনার শিকার হয়েও তেমন কোন প্রতিক্রিয়াই দেখাননি এ গ্ল্যামার টেনিস গার্ল। ফলে সামাজিক ও আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন সুন্দরী মাশা। অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন, তবে জানিয়েছিলেন আবার ফিরবেন টেনিসে। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসেই। আবারও আন্তর্জাতিক টেনিসে মাশার রূপের ঝলক দেখা যাবে কোর্টে। ২৪ এপ্রিল স্টুটগার্টে শুরু হবে পোরশে গ্রাঁ প্রিঁ আসর। জার্মানির এ টুর্নামেন্ট আয়োজকরা ওয়াইল্ড কার্ড দিয়েছেন শারাপোভাকে। কারণ নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি পূর্বের সব পয়েন্ট ও র‌্যাঙ্কিং হারিয়েছেন। শূন্য থেকেই শুরু করতে হবে এ রাশিয়ান সুন্দরীকে। তবে শারাপোভার এ ইস্যুতে টেনিস বিশ্ব ওলট-পালটই শুধু হয়নি, বিভক্তিরও জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করেন ওয়াইল্ড কার্ড দেয়া উচিত হয়নি শারাপোভাকে। তবে কিংবদন্তি বরিস বেকার শারাপোভার ফেরার পক্ষে। এবার তার পক্ষ সমর্থন করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন ভেনাস। সাবেক এ বিশ্বসেরা বলেন, ‘আমি অনুভব করি জীবনের পটভূমিকা আছে, সবসময়ই কিছু না কিছু ঘটে। আমি শুধু এটাই মনে করি যে একটিমাত্র বিষয় পুরো জীবনকে বর্ণনা করতে পারে না। আমি মনে করি আয়োজক বোর্ড তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সে ফিরে আসার সুযোগ পেয়ে এখন ক্যারিয়ার চালিয়ে যেতে পারবে। আমি মনে করি তাকে এটা চালিয়ে যেতে দেয়া উচিত।’ ক্যারিয়ারে ৮ বার শারাপোভার মুখোমুখি হয়েছেন ভেনাস, জিততে পেরেছেন মাত্র তিনবার। আর ছোট বোন সেরেনা উইলিয়ামসের মাঠে ও মাঠের বাইরে চিরশত্রু হিসেবেই পরিচিত শারাপোভা। এরপরও ভেনাস মনে করেন এ রাশিয়ান তারকা ফিরে আসলে টেনিসের সৌন্দর্য ও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শারাপোভা ফিরলে টেনিসের উপকার হবে। আবার তাকে খেলার মধ্যে পাওয়াটা দারুণ ব্যাপার হবে। আমার মনে হয় এটাকে সবারই সাধুবাদ জানানো উচিত।’ শারাপোভা ইতোমধ্যে আরও দুটি টুর্নামেন্টে খেলার ওয়াইল্ড কার্ড পেয়েছেন। মে মাসে মিউচুয়া মাদ্রিদ ওপেন এবং ইতালিয়ান ওপেনে খেলা নিশ্চিত হয়েছে তার। কিন্তু ব্রিটিশ গ্রাস-কোর্ট ইভেন্টগুলোর একটিতেও খেলার জন্য সবুজ সঙ্কেত পাননি শারাপোভা।
×