ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় দুইদিনের ওড়িশী নৃত্য উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৯ এপ্রিল ২০১৭

শিল্পকলায় দুইদিনের ওড়িশী নৃত্য  উৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির অনবদ্য সম্মিলনে উপস্থাপিত হলো নান্দনিক ওড়িশী নৃত্য। নৃত্যশিল্পীর নূপুরের নিক্কন তোলা সেই নাচে মুগ্ধ হলো দর্শক। ত্রিভঙ্গি আশ্রিত প্রাচীনতম এ নৃত্যধারায় দেখা মিলল নানা পর্ব। এগুলো হলো মঙ্গলাচরণ, শিববন্দনা, বটু ও মোক্ষ। শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনাতনে দুই দিনের ওড়িশী নৃত্য উৎসবের সূচনা হয়। চট্টগ্রামের ওড়িশী এ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টারের ষোড়শ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এ উৎসবের আয়োজন করে। প্রথম দিনে দলটির নৃত্যশিল্পীরা অংশ নেন পরিবেশনায়। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি ও চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন। শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, কলকাতার গুঞ্জনের পরিচালক গুরু পৌষালী মুখার্জী ও ইন্ধিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (আইজিসিসি) পরিচালক জয়শ্রী কু-ু। সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের ওড়িশী এ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টারের সভাপতি অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বরেণ্য ছয় নৃত্যশিল্পীকে জানানো হয় সম্মাননা। সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেনÑ আমানুল হক, মীনু হক, সাজু আহমেদ, শর্মিলা বন্দোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ ও তামান্না রহমান। আলোচনা ও সম্মাননা শেষে ছিল প্রমা অবন্তীর গ্রন্থনা, ভাবনা ও নৃত্য নির্মিতিতে ওড়িশী নৃত্যকলা পরিবেশনা। যার শুরুতেই ওড়িশী নৃত্যকলার রীতি অনুযায়ী ছিল মঙ্গলাচরণ। জগতের মঙ্গল কামনা করে শুরু হয়ে এর পর মহাদেব শিবের বন্দনায় পরিবেশিত হয় ‘শিববন্দনা’। এর পর ছিল বটু, তার পরেই ‘আজি দক্ষিণ পবনে’ শিরোনামে রবীন্দ্রনৃত্য। এর পর রাগ আরবী, তাল একোতালি ও চার মাত্রার পল্লবী। রাগ যুগ্মদ- এবং রাগ সাবেরী ও একোতালি তালে আরেকটি পল্লবী পরিবেশিত হয়। এর পর আবারও রবীন্দ্রনৃত্য। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূজা পর্যায়ের ভাঙ্গা গান ‘মন্দিরে মম’র সঙ্গে নৃত্যশিল্পীরা এক তাল ও বারো মাত্রায় নৃত্য পরিবেশন করেন। এর পর ‘কহিগলে মুরালি ফুঁক্ষা’ শিরোনামে ছিল অভিনয় নৃত্য। সবশেষে মোক্ষ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের আয়োজন। মনোমুগ্ধকার এ পরিবেশনায় অংশ নেন তন্বী দাশ, নিবিড় দাশগুপ্তা, জয়িতা দত্ত, তুষি শর্মা, দিয়া দাশ গুপ্তা, ময়ূখ সরকার, রিয়া বড়ুয়া, কান্তা দাশ, অর্জিতা সেন চৌধুরী, রাইমা মল্লিক, মৈত্রী চক্রবর্তী, মৃত্তিকা ধর প্রমুখ । আজ রবিবার উৎসবের শেষ দিন সন্ধ্যায় থাকছে নজরুলের জীবনভিত্তিক গীতিআলেখ্য ‘বাঁশরী ও তূর্য হাতে কবি’। এর গ্রন্থনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রয়েছে প্রমা অবন্তী। জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র নির্মাণের আশ্বাস ॥ যে কোন দেশের চলচ্চিত্রশিল্পের জন্য চলচ্চিত্র কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সেই বাস্তবতায় চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে এবার ঢাকায় জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র নির্মাণে আশ্বাস দিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। শনিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ (এফএফএসবি) আয়োজিত ‘জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র’ চাই শীর্ষক জাতীয় চলচ্চিত্র সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আশ্বাস দেন। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন বরেণ্য চলচ্চিত্র অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। চলচ্চিত্র কেন্দ্রের খসড়া উপস্থাপন করেন ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুন বলেন, এই কেন্দ্রটি জাতীয় চলচ্চিত্র সংস্কৃতির বিকাশে প্রয়োজনীয় ও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কেন্দ্রটি এক অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে যা দেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনকে আরও গতিশীল করবে। এই কেন্দ্রে ৭০০, ৩০০ ও ১৫০ সিটের তিনটি মিলনায়তনের পাশাপাশি ১৫০ সিটের একটি সেমিনার হল থাকবে। স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের জন্য দুই থেকে তিনটি প্রশিক্ষণ কক্ষ, অডিও-ভিজ্যুয়াল লাইব্রেরি, ক্যাফেটারিয়া, অতিথিশালা, সভাকক্ষ থাকবে। চলচ্চিত্রবিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রে অন্তত ৫টি কক্ষ বরাদ্দের সুপারিশ রয়েছে এই মডেলে। জাতীয় চলচ্চিত্র কেন্দ্র পরিচালনার জন্য উপদেষ্টা কমিটির নিয়ন্ত্রণে পরিচালনা কমিটি প্রণয়ন করতে হবে। লোকাঙ্গনের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ॥ গান, আলোচনা ও সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো সাংস্কৃতিক সংগঠন লোকাঙ্গনের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। শনিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গীতিকবি হাসান মতিউর রহমানকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ ইব্রাহীম হোসেন খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন লোকসঙ্গীত শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়। সভাপতিত্ব করেন লোকাঙ্গনের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র শীল। সংস্কৃতি সচিব মোহাম্মদ ইব্রাহীম হোসেন খান বলেন ‘লোকগান তখনই স্বার্থক পায় যখন সেটি প্রকৃত সুরে প্রকৃতভাবে পরিবেশন করা হয়। অনেকে লোকগান বিকৃত সুরে পরিবেশন করেন। এটা কাম্য নয়। বিকৃত সুর বন্ধ করতে হবে এবং আদিসুরে পরিবেশন করতে হবে।’ দুই পর্বে সাজানো দ্বিতীয় পর্বে ছিল বরেণ্য শিল্পীর পাশাপাশি নবীন শিল্পীদের কণ্ঠে লোকসঙ্গীত পরিবেশনা। একক লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেনÑরথীন্দ্রনাথ রায়, নারায়ণ চন্দ্র শীল, রহমতুল্লা, শ্যামল কুমার পাল, শামীম হোসেন, নিপা সরকার, লিপিকা বিশ্বাস, মৌমিতা মুমু, অর্পিতা সরকার ইমু, কামরুন নাহার আবেদীন ঝর্না, মাধবী সরকার, সম্প্রীতি সরকার সিঁথি, শরীফ হাসান চৌধুরী সৌদ, ফরিদুল হক ও কালিপদ শীল। ২১ এপ্রিল শিল্পকলায় মহুয়া নৃত্যনাট্য ॥ মৈমনসিংহ গীতিকার বিখ্যাত পালা মহুয়া। নৃত্যলোক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তাদের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ২১ ও ২২ এপ্রিল মহুয়া নৃত্যনাট্যটি মঞ্চস্থ করবে। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় হবে এ আয়োজন। এ উপলক্ষে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ঢাকা চলচ্চিত্র আন্দোলনের আত্মপ্রকাশ ॥ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাজাত অসাম্প্রদায়িক উদার মানবিক, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তৈরি ও সুস্থ চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ঢাকা চলচ্চিত্র আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠনের পথচলা শুরু হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শনিবার এই সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে।
×